• ১২ বৈশাখ ,১৪৩১,25 Apr ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

বেইজিংয়ে প্রকাশিত হলো রবীন্দ্র রচনাবলীর চীনা অনুবাদ

| মে 11, 2016 | 0 Comments

20160506162520015_96452বিশ্বজুড়ে বাংলা: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৫ জন্মদিন উপলক্ষ্যে বাংলা ভাষায় রবীন্দ্র রচনাবলীর চীনা অনুবাদ  (বৃহস্পতিবার) বেইজিংয়ে প্রকাশিত হয়েছে, চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগের প্রায় অর্ধযুগের প্রচেষ্টায় কাজটি সম্পন্ন হলো।

‘আমার পরান যাহা চায়’ ভারতের বিখ্যাত কবি, এশিয়ার প্রথম সাহিত্যে নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বিরহী প্রেমের গান। ২০১৬ সালের ৫ মে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে চীনা ভাষায় কবির ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’র পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ বেইজিংয়ে প্রকাশিত হয়। চীন আন্তর্জাতিক বেতারের উপ-মহাপরিচালক হু বাং শেং, রেনমিন প্রেসের উপপ্রধান সম্পাদক ম্যাডাম ইউ ছিং, চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার জনাব দেলওয়ার হোসেইন, চীনে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কাউন্সিলর ম্যাডাম ভানাজা এবং চীনা অনুবাদকসহ ৬০ জনেরও বেশি অতিথি ‘মোড়ক উন্মোচন’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। জনাব হু বাং শেং তার বক্তৃতায় বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘রবীন্দ্র রচনাবলীর’ চীনা অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে, যা ঠাকুরের মর্ম ও চিন্তাধারা স্মরণের সবচেয়ে ভালো উপায় এবং তার মাধ্যমে ঠাকুরের চিন্তাভাবনা আরও সম্প্রসারিত হতে পারবে।’

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্ত্রের ইংরেজি অনুবাদ ‘দ্য সং অফারিংস’ প্রকাশিত হলে ১৯১৩ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জয় করেন। তার কবিতায় ধর্ম ও দর্শন সম্পর্কে চিন্তাধারা বিস্তারিত ফুটে উঠেছে। তার কবিতা সমগ্র ও অন্যান্য রচনা সাহিত্য জগতে এক অসামান্য অবস্থান তৈরি করেছে। ‘গীতাঞ্জলী’ ও ‘পাখি’ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বাংলা ভাষা কবিগুরুর মাতৃভাষা। সারা জীবন ধরে তিনি বাংলা ভাষায় ব্যাপক কবিতা, উপন্যাস, নাটক ও গল্প চর্চা করেছেন। তার ৭০ বছরের বেশি লেখক জীবনে প্রচুর লেখা তিনি সম্পন্ন করেছেন এবং এসবের মধ্যে অনেক রচনাই পাঠকের কাছে দারুণ সমাদৃত। তবে চীনে বাংলা ভাষা থেকে তার রচনাবলীর সরাসরি অনুবাদের কাজ আগে কখনও করা হয়নি। এবারের এ উদ্যোগ চীনা ভাষার রচনাবলী সেই দীর্ঘদিনের শূন্যস্থানটি পূরণ করল। এ রচনাবলীর সম্পূর্ণটিই বাংলা ভাষা থেকে অনুবাদ করা হয়েছে এবং ঠাকুরের সব লেখা সংগ্রহ করা হয়েছে। চীনা ভাষায় অনুবাদের জন্য ১ কোটি ৬০ লাখ অক্ষর ব্যবহৃত হয়েছে, যা মোট ৩৩টি গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। এটি চীনের দ্বাদশ পাঁচসালা পরিকল্পনার একটি অংশ এবং বর্তমান বিশ্বে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যকর্মের সবচেয়ে বিস্তারিত চীনা অনুবাদ।

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগ, চীনের কেন্দ্রীয় পার্টি স্কুল, চীনের সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি ও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাংলা ভাষার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত অনুবাদক দল ৫ বছর ধরে এ সব অনুবাদ সম্পন্ন করেছেন। চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার জনাব দেলওয়ার হোসেইন মনে করেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ বাংলা জাতির গর্ব, বিশ্ব ও বাংলা সাহিত্য ইতিহাসে ঠাকুরের অবদান অতুলনীয়। এমন একজন মহান কবির লেখা চীনা ভাষার অনুবাদ করা, নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।

বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক চীনা রাষ্ট্রদূত চাং সিয়ান ই সিআরআইয়ে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, চীনে যুবক পণ্ডিত ও অনুবাদক গভীর ও মনোযোগের সঙ্গে ঠাকুরের লেখা গবেষণা করেছে যা খুবই ভালো একটি ব্যাপার।

‘এ রচনাবলীর প্রকাশনা মানবজাতির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। এ প্রকাশনা চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও বিনিময়ে সহায়ক হবে এবং আরও বেশি চীনা পাঠক ঠাকুরের লেখা পড়ে তাকে নতুনভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করি আমি।’

Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, বিশ্বজুড়ে বাংলা

About the Author ()

Leave a Reply