• ১৪ চৈত্র ,১৪৩০,28 Mar ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

মানহীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধে বিএমএর চিঠি

| জানুয়ারী 18, 2014 | 0 Comments

হেল্থ ইস্যুজ: নীতিমালা অনুসরণ না করে স্থাপিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন বাতিলের দাবি জানিয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছে চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বিএমএ। সংগঠনটি বলেছে, মানহীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ইতিমধ্যে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, ভবিষ্যতে সংকট আরও গভীর হবে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব এম ইকবাল আর্সলান প্রথম আলোকে বলেন, বিএমএর কার্যকরী পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গভীর উদ্বেগ থেকেই সংগঠন এ চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অনুমোদন কমিটির অন্যতম সদস্য বিএমএ। সম্প্রতি যে ১১টি মেডিকেল কলেজের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, বিএমএ তার কোনো কোনোটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তার পরও রাজনৈতিক প্রভাবে এগুলো অনুমোদন পায়। ঢাকার বাইরের মেডিকেল কলেজগুলো স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি পেয়েছে। ঢাকার ভেতরের কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশে এ মুহূর্তে ২২টি সরকারি মেডিকেল কলেজের পাশাপাশি ৬৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে।

চিকিৎসা শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিরা বলেছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো সরকারের বেঁধে দেওয়া শর্ত মানছে না। শুধু তা-ই নয়, শর্ত ভাঙছে সরকার ও সরকারপন্থী লোকজনই। গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুমোদন পাওয়া ১১টি মেডিকেল কলেজের মালিকদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ, প্রভাবশালী আমলা এবং আওয়ামী লীগপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতারা রয়েছেন। তবে আমলা ও রাজনীতিবিদেরা কেউ মালিক হিসেবে প্রকাশ্যে নেই।
স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজউদ্দিন এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, শর্ত পূরণের পর কলেজগুলোকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে হাইকোর্টের নির্দেশে ও বিএমএর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আবারও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা কোথায়, কী গাফিলতি আছে, তা খতিয়ে দেখছে।

এদিকে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘একযোগে যে ১১টি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর কোনোটিই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য নয়। আমরা মনে করি, আরও অনেক মেডিকেল কলেজের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে মেডিকেল কলেজগুলোর সঙ্গে হাসপাতাল সংযুক্ত থাকতে হবে। অবকাঠামো, যথেষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষা উপকরণ থাকতে হবে। আমার জানামতে, সদ্য অনুমোদন পাওয়া ১১টি মেডিকেল কলেজ এ শর্তগুলোর কোনোটিই মানেনি।’

জানা গেছে, ১১টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে ঢাকার পাঁচটি বাদে বাকিগুলো ছাত্র ভর্তি করতে শুরু করেছে। ঢাকার কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

কোথায় কোথায় লঙ্ঘন: বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা ২০১১ অনুযায়ী, ৫০ আসনবিশিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য মহানগরে কলেজের নামে দুই একর জমিতে অথবা নিজস্ব জমিতে কলেজের একাডেমিক ভবনে প্রাথমিকভাবে কমপক্ষে এক লাখ ২৫ হাজার বর্গফুট ফ্লোর স্পেস থাকার বাধ্যবাধকতা আছে। আরও বলা হয়েছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার কমপক্ষে দুই বছর আগে থেকে প্রস্তাবিত ক্যাম্পাসে প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামোসহ কমপক্ষে আড়াই শ শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল (৭০ শতাংশ বেড অকুপেন্সিসহ) চালু থাকতে হবে। হাসপাতালে দরিদ্র রোগীদের জন্য বিনা ভাড়ায় অন্তত ১০ শতাংশ শয্যা সংরক্ষণসহ বিনা মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকতে হবে। হাসপাতালে সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম চালু থাকতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এ শর্ত মানা হয়নি।

খবর নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন নেওয়ার আগে পাশের মেডিকেল সেন্টার নামে একটি ক্লিনিককে হাসপাতাল হিসেবে দেখানো হয়েছে। সিলেটের পার্কভিউ ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ ও রংপুরের কসিরউদ্দীন মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজের সঙ্গেও সংযুক্ত হাসপাতাল নেই।

রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজটির অনুমোদনে সহযোগিতা করেছেন একজন প্রভাবশালী আমলা। হাসপাতালের উদ্যোক্তা মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, কলেজ স্থাপনের আগেই হাসপাতাল চালু করার কথা বলা আছে। কিন্তু আসলে শিক্ষা কার্যক্রম দুই বছর গড়ানোর আগে হাসপাতাল দরকার পড়ে না। এ সময়ের মধ্যে তাঁদের হাসপাতালটি চালু হয়ে যাবে।

Category: 1stpage, হেল্থ ইস্যুজ

About the Author ()

Leave a Reply