মার্কিন গোয়েন্দাবৃত্তি নিয়ে চাপের মুখে জার্মান চ্যান্সেলর মারকেল
ইউরো সংবাদ: মার্কিন গোয়েন্দাবৃত্তির বিষয়ে তথ্য প্রকাশ না করার জন্য রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল।
সম্প্রতি মারকেল এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন গোয়েন্দাবৃত্তির বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ না করে বরং তার সরকারের অবস্থানকে সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন। এ ছাড়া, তিনি বলেছেন, তার সরকার এ নিয়ে আমেরিকার ওপর যথাযথ চাপ সৃষ্টি করেছে।
মধ্য-বাম দলের নেতা পিয়ের স্টেইনব্রুয়েক মারকেলের এ মন্তব্যকে উদ্বেগজনক নির্বুদ্ধিতা ও অসহায়ত্ব বলে মন্তব্য করেছেন।
স্টেইনব্রুয়েক বলেন, “আমি মনে করছি মারকেল শুধু আমেরিকার জন্য অপেক্ষায় আছেন যে তারা তাকে গোয়েন্দাবৃত্তির বিষয়ে সব তথ্য জানাবে।”
অন্যদিকে, গ্রিনপার্টি বলেছে, মারকেলের কথায় তারা কোনোরকম আশ্বস্ত হতে পারেনি বরং চ্যান্সেলরের বক্তব্যকে দলটি জনগণের জন্য অপমান বলে উল্লেখ করেছে।
গত শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে মারকেল নিজ দেশের ওপর গোয়ন্দাবৃত্তির জন্য আমেরিকার বিরুদ্ধে কোনো সমালোচনামূলক কথা বলেননি। এর বিপরীতে তিনি বলেছেন, গোয়েন্দাবৃত্তি নিয়ে সব প্রশ্নের জবাব দিতে আমেরিকার একটু সময় লাগবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ওয়াশিংটন পাঠিয়েও সমালোচকদের মুখ বন্ধ করা যায়নি৷ সরকারের নীরবতা বা দায়সারা উত্তর কারো পছন্দ হচ্ছে না৷ গ্রীষ্মকালীন বিরতির আগে চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সংবাদ সম্মেলনেও কোনো সদুত্তর মিললো না৷
‘‘জার্মান ভূখণ্ডে জার্মান আইন কার্যকর হয়” – কথাটা ম্যার্কেল যে কতবার বললেন, তার হিসাব রাখছিলেন সাংবাদিকরা৷ একজন বললেন ‘আট’৷ পাশের জন বললেন, ‘‘না, নয় বার”৷ ম্যার্কেল অবশ্য শুরুতেই এনএসএ-কেলেঙ্কারি সম্পর্কে সরকারের স্পষ্ট অবস্থানের কোনো প্রত্যাশা না রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন৷
আঙ্গেলা ম্যার্কেল সাধারণত সংবাদ মাধ্যম থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন৷ বছরে একবার গ্রীষ্মকালীন বিরতির আগে একটি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন তিনি৷ তখন বেশ খোলামেলা মেজাজে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন৷ বাকি সময়ে সরাসরি সাক্ষাৎকার সাধারণত এড়িয়ে চলেন৷ সাংবাদিকদের পক্ষেও ম্যার্কেলকে বেকায়দায় ফেলা কঠিন হয়৷
কারণ প্রায় সব সংকট থেকে সরকার বা দলকে যেভাবে উদ্ধার করে নিজের বিপুল জনপ্রিয়তা বজায় রাখতে পারেন তিনি, সেই ক্ষমতাকে সমীহ না করে থাকা কঠিন৷ এমনকি এডোয়ার্ড স্নোডেনের অভিযোগকেও হাতিয়ার করে সুবিধা করতে পারলেন না সাংবাদিকরা৷
ম্যার্কেল বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিষয়টা খুবই জটিল৷ সময় নিয়ে সব কিছু খতিয়ে দেখতে হবে৷ দ্রুত প্রতিক্রিয়ার কোনো প্রয়োজন তিনি দেখছেন না৷ সাংবাদিকরা এমন উত্তরে সন্তুষ্ট না হলেও তাঁর পক্ষে কিছুই করার নেই৷ তিনি ইউরোপীয় স্তরে তথ্যের অধিকারের কাঠামো আরও মজবুত করতে চান বলে জানিয়েছেন৷ মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলা হয়েছে, উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে৷
আসন্ন নির্বাচনের প্রচারে চ্যান্সেলর ম্যার্কেল কোন বিষয়গুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন, সেই প্রশ্নও সযত্নে এড়িয়ে গেলেন তিনি৷ বললেন, রাজনীতিকরা পছন্দ অনুযায়ী বিষয় বাছতে পারেন না, জনগণকে যে সব বিষয় ভাবাচ্ছে, সেগুলিকেই গুরুত্ব দিতে হয়৷ শুধু বললেন, ইউরো সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে বলে তাঁর ধারণা৷
Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, ইউরো সংবাদ, ইউরো সংবাদ, ইউরো-সংবাদ - German, শীর্ষ সংবাদ