• ২২ বৈশাখ ,১৪৩১,05 May ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

সিরিয়ায় হামলার পক্ষে বিশ্বের সমর্থন না পেয়ে হতাশ ওবামা

| সেপ্টেম্বর 8, 2013 | 0 Comments

আন্তর্জাতিক: রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত দুই দিনের জি-২০ সম্মেলনে সিরিয়ায় হামলার পক্ষে টেনেটুনে ১০টি দেশের সমর্থন পাওয়ার পর হতাশ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এখন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের দ্বারস্থ হয়েছেন। ব্যয়বহুল একাধিক যুদ্ধে ক্লান্ত আমেরিকায় এখন যুদ্ধবিরোধী মনোভাব খুব জোরালো। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে সিরিয়ায় অভিযান নিয়ে খোদ তার দলের আইনপ্রণেতারাও একমত নন। বলা যায়, অভিযানের আগে ওয়াশিংটনের রাজনীতি জয় করাটাই এখন প্রেসিডেন্ট ওবামার কাছে দুরূহ হয়ে উঠেছে। কিন্তু হামলা নিয়ে প্রতিনিধি পরিষদে সদস্যদের দোদুল্যমানতা নিয়ে উদ্বিগ্ন ওবামা এবার চাপ বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়েছেন। আর এ লক্ষ্যে তিনি সিরিয়া বিষয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে ওবামার। ওই ভাষণে সিরিয়ায় আমেরিকার সামরিক অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরবেন তিনি। পরদিন বুধবার কংগ্রেসে সিরিয়া বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তাই সিরিয়া হামলার পক্ষে-বিপক্ষে এখনো যেসব কংগ্রেস সদস্য কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, এ ভাষণের ফলে সৃষ্ট জনমতের চাপে তারা সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবেন বলে ধারণা করছে ওবামার উপদেষ্টা পরিষদ।

আগামীকাল ৯ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসের পরবর্তী অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ওই অধিবেশনে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে আমেরিকান সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা। জানা গেছে, সিরিয়া হামলা বিষয়ে কংগ্রেসের মনোভাব ওবামার পক্ষে নয়। আর বিষয়টিতে সমর্থন পাওয়ার জন্য গত সপ্তাহে তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ওবামা। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের অনেকেই হামলার বিষয়টি সমর্থন করবেন কিনা তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পেঁৗছতে পারেননি। পাশাপাশি জনমত জরিপেও সাধারণ আমেরিকানদের মতামত সিরিয়া হামলার বিপক্ষে। ইরাক ও আফগান যুদ্ধের দীর্ঘসূত্রিতায় ক্লান্ত এসব মানুষ নতুন কোনো যুদ্ধে জড়ানোর বিরুদ্ধে তীব্রভাবে মতামত জানিয়েছেন।

রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিন ছিল শুক্রবার। এদিন সম্মেলনে অংশ নেয়া ওবামা জানিয়েছেন, সিরিয়ায় হামলা চালানোর বিষয়ে জনমত তৈরি ও কংগ্রেসের সমর্থন আদায়ে কঠিন লড়াই করতে হচ্ছে তাকে। ওই সম্মেলনে ওবামা বলেন, ‘কংগ্রেসে ভোট ও অন্যান্য প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে বলা যায়, এটি খুব কঠিন একটি বিষয় হতে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এই দ্বিধার কারণ আমি বুঝি। তাই প্রত্যেক সিনেটর ও কংগ্রেসের প্রত্যেক সদস্যদের মতামত তৈরিতে নিয়মতান্ত্রিকভাবে এগিয়ে যাওয়াকে আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি আর এটাই আমরা করছি।’

উল্লেখ্য, সাংবিধানিক ক্ষমতা থাকলেও সিরিয়ায় হামলার দায় এককভাবে নিতে চাইছেন না ওবামা। ওবামা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা, উপ-নিরাপত্তা উপদেষ্টা টনি বিস্ননকেন জানিয়েছেন, কংগ্রেসের অনুমোদন নিয়েই অভিযান পরিচালনা করতে চান প্রেসিডেন্ট। এদিকে জনমতের চাপে আইনপ্রণেতারাও সিরিয়ায় হামলার প্রশ্নে মুখ খুলছেন সতর্কভাবে। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর মতে, সিনেটের ১০০ সদস্যের মধ্যে মাত্র ২৩ জন প্রকাশ্যে সিরিয়ায় হামলা করার পক্ষে। ১৭ জন সিনেটর প্রকাশ্যে অভিযানের বিপক্ষে। যেসব সিনেটর মুখ খুলছেন না, তাদের অবস্থান স্পষ্ট নয়। সামরিক হামলার প্রস্তাব সিনেটে গ্রহণের জন্য প্রয়োজন ৬০ জনের সমর্থন। অভিযানের প্রস্তাব গ্রহণের জন্য কংগ্রেসে ২১৮ জনের সমর্থনের প্রয়োজন; কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ২৫ জন কংগ্রেস সদস্য সিরিয়ায় হামলার পক্ষে মত জানিয়েছেন, আর বিপক্ষে মত দিয়েছেন ১০৬ জন।

এই দ্বিধার কারণ, সীমিত আকারের হামলাও পরিস্থিতি আমেরিকাকে একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে টেনে নিতে পারে এবং এ লড়াই মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে ধারণায় কংগ্রেসের অনেক সদস্যই উদ্বিগ্ন বোধ করছেন। তাদের বোঝাতে ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদভাবে কথা বলে হামলার বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরছেন। সোমবারের মধ্যে কংগ্রেসের সব সদস্যকে ব্যক্তিগতভাবে অবহিত করার মিশন শেষ হবে। হামলা বিষয়ে কংগ্রেস সদস্যদের গোপনীয় সব তথ্য সরবরাহের পর সিরিয়া হামলার বিষয়ে কংগ্রেসের সমর্থন পাবেন বলে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। তবে সমর্থন আদায় ওবামার জন্য বেশ কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Category: 1stpage, আন্তর্জাতিক, শীর্ষ সংবাদ

About the Author ()

Leave a Reply