এশিয়ার এক চতুর্থাংশ পুরুষ ধর্ষক!
ইউরোবিডি২৪নিউজঃ একই সঙ্গে আশ্চর্যজনক এবং হতাশাজনক এক ফলাফল উঠে এসেছে জাতিসংঘের জরিপে। বাংলাদেশ, চীন, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং পাপুয়া নিউগিনির মোট ১০,০০০ পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে জানা গেছে, তাদের প্রায় এক-চতুর্থাংশই কোন না কোন সময়ে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের উপর জাতিসংঘের বড় আকারের জরিপ এটাই প্রথম। জরিপের ফলাফল থেকে অনুমান করা যায়, এশিয়ার এ দেশগুলোতে যৌন নির্যাতনের মাত্রা কতটা বেশি। বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও, ৬টি দেশের ১০,০০০ পুরুষের এক-চতুর্থাংশ নিজেরাই স্বীকার করেছে ধর্ষণের কথা।
প্রেমের সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণ হরহামেশাই হয়ে থাকে। ১০ জনে ১ জন সম্পর্কের বাইরেও অন্য নারীকে ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেছে।
জাতিসংঘের এ জরিপকাজে নেতৃত্ব দেয়া সাউথ আফ্রিকার মেডিকেল রিসার্স কাউন্সিলের রেচেল জিউকেস বলেন, এটা এখন পরিষ্কার, সাধারণ জনগণের মধ্যে নারী নির্যাতনের ব্যাপকতা আমাদের ধারণার তুলনায় অনেক গুণ বেশি। গবেষকরা বলছেন, জরিপের ফলাফলের প্রেক্ষিতে নারী নির্যাতনের বিষয়ে আমাদের বর্তমান ধারণায় পরিবর্তন আসা উচিত এবং সে মোতাবেক জরুরি পদক্ষেপ নেয়া উচিত যেন এটাকে প্রতিহত করা যায়।
একই ধরনের জরিপ এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় করা হয়েছিল, যেখানে দেখা গেছে ৪০ শতাংশ পুরুষ নারীকে ধর্ষণ করেছে। জরিপ ফলাফল রচয়িতারা বলেন, এ ৬টি দেশে এ রকম ফলাফলের পেছনে যৌন কামনা চরিতার্থ করার পাশবিক প্রবণতা অন্যতম কারণ। তবে, পুরুষদের এ রকম সহিংস আচরণের পেছনে অন্য কারণও রয়েছে। যেসব পুরুষ ছেলেবেলায় নির্যাতনের শিকার হয়েছে বিশেষ করে যৌন নির্যাতন; তাদের দ্বারা ধর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত বেশি। গবেষকরা এটাও উল্লেখ করেছেন, এ জরিপের ফলাফল সমগ্র এশিয়া এবং প্যাসিফিক এলাকার জন্য প্রযোজ্য নয়। পাপুয়া নিউগিনির ৬২ শতাংশ পুরুষ জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের কথা স্বীকার করেছে। বাংলাদেশের শহরগুলোতে গ্রাম্য এলাকার তুলনায় ধর্ষণ অপেক্ষাকৃত কম সংঘটিত হয় বলে জানা গেছে। ৯.৫ শতাংশ পুরুষ শহরে এবং ১৪.১ শতাংশ গ্রাম্য এলাকায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের পৃথক একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী নারীদের এক-তৃতীয়াংশ পারিবারিক অথবা যৌন নির্যাতনের শিকার। এশিয়ার ৬টি দেশে গবেষণামূলক এ জরিপটি পরিচালনা করার জন্য জাতিসংঘের একাধিক সংস্থার পাশাপাশি অর্থায়ন করেছে অস্ট্রেলিয়া, বৃটেন, নরওয়ে এবং সুইডেন। পুরুষদেরকে করা প্রশ্নে ধর্ষণ কথাটা ব্যবহার করা হয়নি বরং প্রশ্ন করা হয়েছিল কোন মেয়ের মতের বিরুদ্ধে অথবা, অতিরিক্ত মাতাল বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকা কোন মেয়ের সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে কিনা? ৬টি দেশের মধ্যে ধর্ষণের সর্বনিম্ন হার বাংলাদেশ এবং ইন্দোনেশিয়াতে পক্ষান্তরে পাপুয়া নিউগিনিতে এর হার সর্বোচ্চ।
Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, আন্তর্জাতিক, প্রচ্ছদ, শীর্ষ সংবাদ