• ৭ জ্যৈষ্ঠ ,১৪৩১,21 May ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

বিবেকের কাঠ গড়ায় যখন সাংবাদিক

| জুন 8, 2015 | 0 Comments

editor eurobd24সম্পাদকীয়:: বিবেকের কাঠ গড়ায় যখন সাংবাদিক।

 ফ্রান্সে অবস্থানরত বাংলা অনলাইন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াতে কর্মরত স্বেচ্ছা সেবক সাংবাদিকবৃন্দ সবাইকে ‍আমি একজন সামান্য সংবাদকর্মী হিসাবে আন্তরিক সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি ।ফ্রান্সের মত একটি উচ্চ জীবন মানের দেশে থেকেও সেচ্ছা শ্রমে সাংবাদিকতা করার মত দুরূহ ও কষ্ট সাধ্য কাজটি আপনারা অত্যন্ত দায়িত্বের সাথে করে যাচ্ছেন দীর্ঘ দিন। কমিউনিটিতে অনেকটাই নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করা সাংবাদিক বৃন্দ দীর্ঘ দিন চেষ্টা করে যাচ্ছিল একটি ঐক্যবদ্ধ প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠা করার জন্য। সেই প্রচেষ্টায় অনেক দূর এগিয়েও গিয়ে ছিল প্রেস ক্লাব প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে একাধিক বার সাধারণ সভা আয়োজন, সাংবিধানিক কমিটির মাধ্যমে একটি সুন্দর ও গ্রহণ যোগ্য সংবিধান রচনা, নির্বাহী কমিটি গঠনের লক্ষ্যে একাধিক বার আহ্বায়ক কমিটি গঠন এবং আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে ক্লাবের সদস্য পদের আবেদন ফরম তৈরি ও লোগো নির্বাচনের কাজ অগ্রগতি গুলোর মধ্যে উল্যেখ যোগ্য।

এই কাজ গুলো করতেই পুরো ২০১৩ সাল এক বছর ব্যয় করে ফেলে আহ্বায়ক কমিটি। তারপরও দীর্ঘ্য দিন সাংবাদিকদের স্বপ্নের প্রেস ক্লাব হচ্ছিলনা সেখানে এক বছরের এই অগ্রগতিকে ছোট করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।

এরপর যে কঠিন কাজটি ছিল তাহল একটি গ্রহণ যোগ্য নির্বাহী কমিটি গঠন। সেই কঠিন কাজটিই যেন বারবার চেষ্টা করেও করা যাচ্ছিলনা।সভাপতি-সেক্রেটারী এই পদ দুটিতে সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দই বারবার পিছিয়ে দিচ্ছিলো নির্বাহী কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া।

photo 1

সেদিনের হাতের লিখা ভোটের ছবি

সেরকম একটি সিদ্ধান্তহীনতার জায়গা থেকেই সাংবিধানিক কমিটির ৯ সদস্যের মধ্যে ৭ সদস্য ২০১৪ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারী প্যারিসের একটি রেস্টুরেন্টে মিলিত হন। সাংবিধানিক কমিটির সদস্য ফারুক নেওয়াজ খান,দেবেশ বড়ুয়া, এম এ হাশেম, খান বাবু রোমেল, ইমরান মাহমুদ, মাহাবুব হোসাইন এবং ‍ আবু তাহের এই সাত জন উপস্থিত থাকলেও নুরুল ওয়াহিদ ব্যক্তিগত কাজে বাংলাদেশে  এবং শাহীন আহমেদ ইতালীতে ছিলেন। উপস্থিত ৭ সদস্যের আলোচনার ভিত্তিতে সভাপতি ও সেক্রেটারী পদে তাৎক্ষণিক গোপন ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় (ভোটের ছবি সংযুক্ত)। সেই ভোটাভুটিতে ফারুক নেওয়াজ খান ৭ ভোট এবং দেবেশ বড়ুয়া ৫ ভোট পেয়ে যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে ৭ জনের উপস্থিতিতেই ১০ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয় (সেদিনের হাতের লিখা কমিটির ছবি সংযুক্ত)।

নির্বাহী কমিটি: সভাপতি ফারুক নেওয়াজ খান, সহ সভাপতি নুরুল ওয়াহিদ, সাধারণ সম্পাদক দেবেশ বড়ুয়া, সহ সাধারণ সম্পাদক এম এ হাশেম, সহ সাধারণ সম্পাদক খান বাবু রোমেল, কোষাধক্ষ্য মাহাবুব হোসাইন,  সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান মাহমুদ, অফিস সম্পাদক শাহীন আহমেদ, প্রচার সম্পাদক আবু তাহের ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফয়সল আহমেদ দ্বীপ।

আর এই কমিটিকে আরও সংযোজিত এবং বর্ধিত করে পরবর্তী সাধারণ সভার মাধ্যমে পাস করিয়ে প্রেস ক্লাবের একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।সিদ্ধান্ত গুলো জানানোর জন্য উপস্থিত সভা থেকে ফ্রান্সের বাহিরে অবস্থান রত নুরুল ওয়াহিদ এবং শাহীন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে, শাহীন আহমেদ গৃহীত সিদ্ধান্ত গুলোর সাথে একমত পোষণ করলেও নুরুল ওয়াহিদ জানান তিনি ফ্রান্সে ফেরার আগ পর্যন্ত যেন এই কমিটি কোন মিডিয়াতে প্রকাশিত না হয়। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ উপস্থিত সবাই নুরুল ওয়াহিদের এই প্রস্তাব মেনে নিলেন।

কিন্তু সেই রাতেই কোন এক দেবতার ইশারায় ঐ কমিটি নিয়ে বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়াতে সংবাদ প্রকাশিত হয় এবং নুরুল ওয়াহিদের কথা না রাখায় তিনি জেদের বশবর্তি হয়ে আরেকটি পাল্টা কমিটি গঠন করেন।

মূলত এখান থেকেই একটি ঐক্যবদ্ধ ও কার্যকর প্রেসক্লাব গঠনে জটিলতা তৈরি হয়। যার জট খোলার অপেক্ষায়ছিল ফ্রান্স তথা প্যারিসের সাংবাদিক বৃন্দ।

photo 2

সেদিনের হাতের লিখা কমিটির ছবি

 কিন্তু হায় প্যারিসের সাংবাদিক সমাজ যখন সেই জট খোলার অপেক্ষায় আর ঠিক তখনই সুযোগটি কাজে লাগালেন প্রথম নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক এবং পরবর্তীতে আগত প্যারিসের কিছু সংবাদকর্মী। উনারা দেখি প্যারিস বাংলা প্রেস ক্লাবের একটি কমিটি করে কিছু পত্র পত্রিকায নিউজ করে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করলেন বাংলার আনাচে কানাচে। তাতো দেয়াই উচিত, এতবড় সফলতা বলে কথা!!! উনারা এতটাই সফল যে আগের নির্বাহী কমিটির শুধু প্রচার সম্পাদক ছাড়া আর কাউকে উনাদের তথাকথিত সেই প্রেসক্লাবে রাখলেনতো নাই, এমনকি ডাকলেনও না। এ যেন আমার বাপের সেহলাম কারে দাওয়াত দিবো না দিবো আমার বিষয়। আবার উনারা নাকি আত্ম পক্ষ সমর্থনের জন্য বলছেন আমরাতো “প্যারিস বাংলা” করেছি “ফ্রান্স বাংলা” তো আর করিনি। যারা বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন তাদের বলছি শরবত যদি কেউ এলকোহলের বোতলে ঢেলে খায় তাহলে নিশ্চয়ই শরবত এলকোহল হয়ে যাবে না।

 আচ্ছা ধরে নিলাম আপনাদের কথাই ঠিক আপনারা প্যারিস বাংলাই করেছেন সেক্ষেত্রে প্যারিসের সকল সংবাদকর্মীদের কি ডেকেছেন। অন্তত যারা  প্যারিসের মাটিতে বাংলা কমিউনিটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের কি ডেকেছেন? না ডাকলে, তা কেন? কোন স্বার্থে?

 বিভিন্ন কমিউনিটি সংগঠনের নেত্রীবৃন্দদের বলব ভুলে যাবেন না নুরুল ওয়াহিদ, দেবেশ বড়ুয়া, এম এ হাশেম, খান বাবু রোমেল, ইমরান মাহমুদ,মাহবুব হোসাইন  ও ফারুক নেওয়াজ খানদের মত অনেকেরই অক্লান্ত পরিশ্রমে আপনারা কমিউনিটিতে নিজেদের প্রচার ও প্রসারে আজ এত দূর।তাই সাত-পাঁচ না ভেবে কোন কিছুকে সমর্থন করে নিজেদের বিবেককে হত্যা করবেন না। আর একটা কথা, নিজেদের অথবা রাজনৈতিক স্বার্থে সমর্থন দিয়ে বেয়াদব তৈরি করবেন না। মনে রাখবেন আজকে আপনার সৃষ্ট বেয়াদবই একদিন  অ‍াপনার সাথেই সবচেয়ে বড় বেয়াদবীটি করে বসবে। নিকট অতীতে এটা বহুবার প্রমাণিত।

 আর ‍আমাদের প্রচার সম্পাদকতো একটু বেশিই সফল বলে মনে হচ্ছে। প্রথম কমিটির প্রচারের কাজটি ঠিক মতো না সারতে পারলেও নিজের বড় ভাগটি নতুন কমিটিতে ঠিকঠাক বুঝে নিয়েছেন। একেবারে সিনিয়র সবাইকে ল্যাং মেরে তিনিই প্রেস ক্লাবের অভিভাবকের পদটি অলংকৃত করেছেন। বাহ্ ধন্য দেশের ধন্য রাজা।

 নতুন যারা সংবাদকর্মী প্যারিসে নানা মাধ্যমে কাজ করছেন তাদের বলছি সিনিয়রদের অবমূল্যায়ন ও ছোট করার অপরাজনীতিতে সামিল হবেন না। মনে রাখবেন একদিন আপনাকেও সিনিয়র হতে হবে। তা না হলে সেদিন ইটের জবাব পাটকেল দিয়ে পেতে হবে। এটা ঐতিহাসিক সত্য।

 আর সিনিয়র সাংবাদিকদের বলছি বর্তমান সংকট ময় পরিস্থিতিতে যারা ঘোলা জলে মাছ শিকার করছে বা করেছে তাদের মোকাবেলায় নিজেদের ব্যক্তিগত দ্বন্দের উর্ধ্বে রেখে প্যারিস তথা ফ্রান্সের বাংলা মিডিয়ার সাধারণ সাংবাদিকদের দীর্ঘ্ দিনের স্বপ্ন একটি  ঐক্যবদ্ধ ও কার্যকর প্রেস ক্লাব গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন।

Category: সম্পাদকীয়

About the Author ()

Leave a Reply