• ৯ অগ্রহায়ণ ,১৪৩১,23 Nov ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ৮ নেতাকে সাসপেন্ড, কোন্দল অব্যহত

| জানুয়ারী 21, 2016 | 0 Comments

07312013_003_USAL_LOGO31 বিশ্বজুড়ে বাংলা: কেন্দ্রের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের সাসপেন্ড বহাল সহ সংগঠনের ৮ নেতাকে সাসপেন্ড করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে কোন্দল অব্যহত রয়েছে। সংগঠনের ৮ নেতার সাসপেন্ড হওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ‘অফিসিয়ালী’ কোন বক্তব্য প্রকাশ বা প্রচার না করায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। এদিকে সংগঠনের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন এনিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। অপরদিকে সংগঠনের ৮ নেতাকে সাসপেন্ড হওয়ার খবর ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’ দাবী করেছেন ৭ নেতা। দলের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সংগঠনের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে সুসংগঠিত। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সঠিক ট্র্যাকে উঠেছে। আমি না থাকলেও দল চলবে, ৮/১০জন না থাকলেও দলের কোন ক্ষতি হবে না। তিনি আরো বলেন, আপাতত: সাধারণ সম্পাদক মনোনয়নের ব্যাপারে কোন চিন্তা-ভাবনা নেই।

দলীয় সূত্র মতে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদকের বহিষ্কার/সাসপেন্ড হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে প্রথম বহিষ্কার হন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম। কেন্দ্রের নির্দেশ তিনি বহিষ্কার হওয়ার পর অদ্যবধি এম সালামকে দলে ফিরিয়ে নেয়া হয়নি। পরবর্তীতে শামীম চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালন করেন এবং সর্বশেষ তিন বছর আগে সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়। এর আগে সাজ্জাদ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। গত বছরের শেষ দিকে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ সাসপেন্ড হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক পদের ব্যাপারে দলীয় নেতা-কর্মীসহ কমিউনিটির সচেতন মহলে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। সূত্র মতে, প্রবাসী বৃহত্তর সিলেটবাসীদের ‘কোঠা’ বিবেচনায় রেখেই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষমহল থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে একজন ‘সিলেটী’-কে মনোনয়ন দিতে আগ্রহী। সেই বিচেনায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সাধারণ সম্পাদক পদে ‘সিলেটী’ মনোনয়ন পেয়েছেন বা নির্বাচিত হয়েছেন। এম সালাম, শামীম চৌধুরী এবং সাজ্জাদ বৃহত্তর সিলেটের সন্তান। অপরদিকে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে নিয়োজিত আব্দুস সামাদ আজাদ জামালপুরের সন্তান। সূত্র মতে, ফেনীর সন্তান সংগঠনের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম চৌধুরী এবং বৃহত্তর সিলেটের সন্তান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাসিব মামুন সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রের নির্দেশে সাসপেন্ডর শিকার। তাই সাধারণ সম্পাদক পদে তাদের মনোনীত/নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় প্রবাসী সিলেটী রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যাশা আগামী দিনেও বৃহত্তর সিলেটের একজন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হবেন! আর এই পদের জন্য সিলেটের সন্তান, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ ও আব্দুর রহিম বাদশা আগ্রহী বলে তাদের ঘনিষ্টজনরা জানিয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ এবং অপর সাংগঠনিক সম্পাদক চট্টগ্রামের সন্তান চন্দন দত্তও প্রত্যাশী বলে তাদের ঘনিষ্ঠরা জানান।

দলের পূর্ণাঙ্গ সাধারণ সম্পাদকের ব্যাপারে সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ১৬ জানুয়ারী শনিবার ইউএনএ প্রতিনিধিকে বলেন, এব্যাপারে আপাতত: কোন চিন্তা-ভাবনা নেই। সংগঠনের ৮ নেতা সাসপেন্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে সুসংগঠিত। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সঠিক ট্র্যাকে উঠেছে। আমি না থাকলেও দল চলবে, ৮/১০জন না থাকলেও দলের কোন ক্ষতি হবে না। তিনি বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশে ৮ নেতাকে কারণ দর্শাণোর চিঠি দেয়া হয়েছিলো। তাদের কাছে চিঠি রয়েছে। এটা আমার সিদ্ধান্ত নয়, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত। সেই কারণ দর্শানো চিঠির জবাব সন্তোষজনক হয়নি। তাই তাদেরই বুঝা উচিৎ তাদের অবস্থান কোথায়। এব্যাপারে দলের কার্যকরী কমিটির সভায় আলোচনা হলেও ‘অফিসিয়ালী’ কোন বক্তব্য দেয়া হচ্ছে না কেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. সিদ্দিক বলেন, ‘সময়মত জানানো হবে’।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ৮ জন নেতাকে বহিষ্কারের সংবাদকে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর দাবী করেছেন কেন্দ্রের নির্দেশে সাসপেন্ড হওয়া ৭নেতা। মাহবুবুর রহমান, আইরিন পারভীন, মহিউদ্দিন দেওয়ান, আব্দুল হাসিব মামুন, হাজী এনাম, মুজাহিদুল ইসলাম ও তৈয়বুর রহমান টনি’র নামে ১৬ জানুয়ারী শনিবার প্রেরীত এক প্রেস বার্তায় এই দাবী করা হয়।

প্রেস বার্তায় বলা হয়: সম্প্রতি কোন কোন পত্রিয়ায় প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ৮ জন নেতাকে বহিষ্কার সংক্রান্ত সংবাদটির প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং শুভাকাক্ষীদের মধ্যে নানা ধরনের বিভ্রান্তি এবং নেতৃবৃন্দকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে পারে বিধায় আমরা প্রকাশিত সংবাদটির তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এখানে সকলের অবগতির জন্য স্পষ্টভাষায় উল্লেখ করতে চাই যে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান যখন পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে এই ধরনের কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ার কথা জোরালোভাবে উল্লেখ করেন, এমনকি তিনি এই ধরনের প্রচার প্রপাগান্ডায় কাউকে বিভ্রান্ত না হতে আহ্বান করেন। সেখানে কয়েকটি পত্রিকা কেন এই ধরনের একটি স্পর্শকাতর সাংগঠনিক বিষয়কে নানা ঘটনা, রটনা এবং কল্প-কাহিনীর আশ্রয় নিয়ে জনসম্মুখে প্রচার করতে গেল এটা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। কাউকে সামাজিক এবং রাজনৈতিকভাবে হেনেস্থা করা আর যাই হউক সুস্থ্য সাংবাদিকতা হিসাবে গণ্য করা যায় না। আমরা এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিভ্রান্তিককর সংবাদের তীব্র নিন্দা এবং ক্ষোভ জানাচ্ছি এবং সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট পত্রিকাগুলিকে এই ধরনের স্পর্শকাতর এবং অসত্য সংবাদ প্রকাশে আরও দায়িত্বশীল হতে আহ্বান জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে বলা হয়: সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের যে সকল সূত্র এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করা হয়েছে এই গুলি অনেকাংশে বিভ্রান্তিকর এবং একপেশে। প্রতিবেদনের কোথাও তাদের ভাষায় অভিযুক্তদের কোন বক্তব্য নেওয়া হয়নি। কিভাবে তথ্য গোপন রেখে এবং ক্ষেত্র বিশেষে অসত্য তথ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দকে নাজেহাল করার চেষ্টার কথা প্রতিবেদনে কোন উল্লেখ নাই। সবার অবগতির জন্য উল্লেখ করতে চাই যে, আমরা দীর্ঘদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করা নেতৃবৃন্দের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনে আরও সক্রিয়তা এবং দেশে-বিদেশে বিএনপি জামায়াতের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে আরও কার্যকর পথ এবং পন্থা নির্ধারণ করার জন্য কার্যকরি কমিটির সভার আয়োজন করতে নানাভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্ত অত্যন্ত দূঃখ এবং ক্ষোভের সঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে এক অজ্ঞাত কারণে সংগঠনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনীহা এবং অসহযোগীতার কারণে এটা সম্ভব হয়নি। এমনকি বার বার প্র¯ুÍতি নেওয়ার পরও হঠাৎ কোন কারণ ছাড়াই অসাংগঠনিকভাবে এই সকল উদ্যোগকে বাতিল করা হয়। আর ইদানিং কার্যকরি কমিটির সভার নামে কিছু আজ্ঞাবাহী ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে গ্রুপ মিটিং করে এটাকে কার্যকরি কমিটির সভা হিসাবে প্রচার করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। অসম্মানজনকভাবে মাননীয় নেত্রীর স্বাক্ষরীত কমিটিকে নানাভাবে পরিবর্তন, পরিসংযোজন করা হচ্ছে । মাননীয় নেত্রীর স্বাক্ষরীত কমিটির দুই তৃতীয়াংশ সদস্যকে অবজ্ঞা এবং অজ্ঞাত রেখে এই ধরনের সভা করে সাময়িক লাভবান হওয়া যায়, কিন্তু চূড়ান্ত বিবেচনায় এগুলো ঝুমেরাং হতে বাধ্য। একটি সংগঠনে সামায়িক ভূল বুঝাবুঝি হতে পারে, সংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় ভিন্ন মত ভিন্ন পথ থাকতেই পারে এগুলোর যথাযথ সামাধান না করে সম্পূর্ণ অন্যায় এবং অযৌক্তিভাবে সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে হেয় করা কিংবা রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার দৌড়-ঝাপে আত্বতৃপ্তি যে কেউ পেতেই পারেন। এতে সংগঠনের কোন কল্যাণ নিহীত নয়। পরিশেষে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আমরা উল্লেখ করতে চাই যে, আমরা ঐক্যবন্ধভাবে কাজ করতে চাই কোন ধরনের বিরাগ-বিভাজনের রেখা টেনে সংগঠনের কার্যক্রম থেকে কাউকে দূরে রাখার নীতিতে বিশ্বাস করি না। আশা করি আমাদের আজকের এই বক্তব্যের পর সকল ভূলবুঝাবুঝির অবসান ঘটবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক আইরিন পারভীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান ও আব্দুল হাসিব মামুন, প্রচার সম্পাদক দুলাল মিয়া (হাজী এনাম), মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম ও উপ প্রচার সম্পাদক তৈয়বুর রহমান টনি’র বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে এবং কেন্দ্রের নির্দেশে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তাদের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে কারণ দর্শানোর জাবাব প্রদান করা হলেও তা সন্তোষজনক নয় বলে সাসপেন্ড করা হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

Category: Scroll_Head_Line, বিশ্বজুড়ে বাংলা

About the Author ()

Leave a Reply