কেবলমাত্র উন্নয়ন ও মানবসেবা নয়-জনগণ বিনয়ও প্রত্যাশা করেন।
দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়’- এই ভাইরাস চরমভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে বাংলাদেশের সমগ্র রাজনৈতিক পরিবারে। আমরা আওয়ামী লীগারগণ দীর্ঘকাল ধরে ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়’ দর্শন লালন করে আসছিলাম। কিন্তু আমরা এখন ব্যক্তিবাদের প্রতিযোগিতায় শীর্ষে অবস্থান করছি ; যা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের আদর্শ, ঐতিহ্য ও প্রথার সম্পূর্ণ বিপরীত।
পুরান ঢাকার জনপ্রিয় ও সামর্থ্যবান ব্যক্তি হাজী সেলিম মহোদয় ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করে এমপি নির্বাচিত হন। তখন তিনি সিটি কর্পোরেশনের কমিশনার ছিলেন।
তিনি সেই সময়ে বড় বড় নিয়ন্ত্রিত মিছিল করতেন। মিছিলে ব্যানারের আগে একা একা হেঁটে নেতৃত্ব প্রদর্শন করতেন। যেহেতু তখন তিনি আওয়ামী লীগে নতুন এসেছেন, সেহেতু তার নেতৃত্ব প্রদর্শন তার দৃষ্টিতে অনেক প্রয়োজনীয় উপাদান ছিল।
কিন্তু, তিনি নিজেও জানতেন না যে, তিনি আইডল হতে চলেছেন। হাজী সেলিম সাহেবের দেখাদেখি অসংখ্য পোড় খাওয়া পরীক্ষিত নেতা মিছিলে ব্যানারের আগে হাঁটতে শুরু করলেন। শুরু হল দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়র অভিশপ্ত পথ চলা।
আওয়ামী লীগ ১৫ আগষ্ট- জাতীয় শোক দিবসের প্রকাশনায় কেবলমাত্র জাতির পিতা ও ১৫ আগস্টের অমর শহীদদের ছবি ব্যবহার করত। কখোনো নেত্রীর ছবিও ব্যবহার করা হত না।
অতি সম্প্রতি ১৫ আগস্টের ব্যানারের অনেক অনেক ‘পরীক্ষিত’ নেতাদের ‘নায়কোচিত’ ছবি দেখে নিজের ওপর ঘৃণা হয়। মনে হয়, আমি এই ‘মানুষ’গুলোর সহকর্মী বা নেতা !!! যারা তাদের চাকরদের ১৫ আগস্টের ভাবগাম্ভীর্য ও বিয়োগান্তক ট্র্যাজেডি বোঝানোর রাজনৈতিক তাগিদ অনুভব করেন না।
আমরা অনেক ব্যাঙ হাতি হওয়ার কদর্য প্রতিযোগিতায় নেমে আওয়ামী লীগ, রাজনীতি, সমাজ ও দেশের সর্বনাশ করছি। জাতির পিতা ও তাঁর জগৎবিখ্যাত মহীয়সী কন্যার ছবি মাইক্রোস্কপিক করে আমাদের বড় বড় ছবি প্রদর্শন করলেই আমরা মহৎ, মহান বা সর্বজন শ্রদ্ধেয় হব না – এই সহজ সরল কথাটি আওয়ামী লীগের মানসিক ব্যামোতে আক্রান্ত নেতাদের বুঝতে হবে।
আমাদের ছবির নীচে সৌজন্যে যে মাদক ব্যবসায়ী, ভূমি দস্যু, চাঁদাবাজ, ফটকাবাজ বা সুযোগ সন্ধানীর মেকআপ লাগানো ছবি প্রদর্শিত হয়, তা আমাদের সম্মানিত করে না, বরং অপমানিত ও জনবিচ্ছিন্ন করে তুলছে।
জনগণ দীর্ঘকাল আমাদের ক্ষমতায় রেখেছেন। আমাদের আইডল, আমাদের নেত্রী দম্ভ প্রদর্শন করেন না। তিনি বিনয়, ভদ্রতা ও শিষ্টাচারের জীবন্ত কিংবদন্তী।
তাঁর অনুগ্রহভাজন হয়ে একটা পদ প্রাপ্তির পর আমরা কেন দাম্ভিক বা অতি প্রচারপ্রিয় হয়ে দলের সর্বনাশ করছি ?
জনগণ কেবলমাত্র উন্নয়ন ও মানবসেবা চান না, জনগণ তাদের দয়ায় ক্ষমতাশীনদের নিকট বিনয় প্রত্যাশা করেন।
আমরা যত বেশী বিনয়ী হব, দ্বিগবিজয়ী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারী নেতৃত্বে দেশসেবার কাল তত দীর্ঘায়িত হবে।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বঙ্গবন্ধু সৃষ্ট অভীষ্ট পথে………
ল©️Abu Sayeed Al Mahmood MP
সাংগঠনিক সম্পাদক Bangladesh Awami League
Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, দেশের খবর, প্রচ্ছদ, রাজনীতি