স্নোডেনের উপর অত্যাচার এবং মৃত্যুদন্ড না দেয়ার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের
আন্তর্জাতিক: আমেরিকা গ্যারান্টি দিচ্ছে, যে এডওয়ার্ড স্নোডেনের উপর অত্যাচার করা হবে না এবং তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে না. রাশিয়ার শীর্ষনেতৃবৃন্দের ঠিকানায় পাঠানো এক বার্তায় আমেরিকার এ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন.এই. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্নোডেনেকে হস্তান্তর করার দাবীতে নাছোড়বান্দা.
যেহেতু রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এক্সট্রাডিশনের বিষয়ে কোনো দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নেই, তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেবল আন্তর্জাতিক রীতিনীতির দোহাই দিচ্ছে. আর আন্তর্জাতিক অধিকারে এক্ষেত্রে খোলাখুলি লিপিবদ্ধ আছে, যে দেশকে অনুরোধ করা হয়েছে হস্তান্তর করার জন্য, সেই দেশ বিচার করে দেখবে, যে অভিযুক্তকে কোনো রাজনৈতিক কারণে অপরাধী সাব্যস্ত করা হচ্ছে কিনা, তার উপর শারিরীক নির্যাতন করা হবে না এবং তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে না. স্নোডেনের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারে মস্কোর সন্দিহান হওয়ার বহু কারণ আছে, কারণ স্নোডেন বড্ড বেশি জানে ও গোটা দুনিয়াকে জানিয়েছে সেই সব কথা. গত শুক্রবার তার বাবা লন স্নোডেনও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যে তার ছেলে খুব সম্ভবত আমেরিকায় ন্যায্য বিচার পাবে না.
বোধহয় ঐ সব সন্দেহ ঘোচানোর জন্যই এরিক হোল্ডারের লেখা চিঠি এসেছে. এখানে উল্লেখ্য, যে চিঠিটিতে ২৩ তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, আর সেটি প্রকাশ করা হয়েছে ২৬ তারিখে. বোধহয় এটা করা হয়েছে এই জন্যই যাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে স্নোডেনকে হস্তান্তরিত করার বিষয়ে ভাবার সময় দেওয়া যায়. মার্কিনী প্রসিকিউটর দফতর থেকে আসা চিঠির বক্তব্য স্বচ্ছ নয়. বলা হয়েছে, যে স্নোডেনের মৃত্যুদন্ড চাওয়া হবে না, কিন্তু অন্যদিকে খেয়াল রাখা দরকার, যে স্নোডেন আমেরিকার গুপ্তচর বিভাগের অবৈধ কার্যকলাপ সম্পর্কে সারা বিশ্বকে জানিয়েছে. প্রসঙ্গত এই সপ্তাহেই হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, যে ফোনে কথাবার্তা আড়ি পেতে শোনা ও ইন্টারনেটে লেখালেখি অনুসরন করার জন্য প্রিজম প্রোগ্র্যাম ব্যবহার করা থেকে তারা বিরত হবে না. ওটা নাকি সম্ভাব্য সন্ত্রাস রোধ করার জন্য অপরিহার্য. আমেরিকা এইক্ষেত্রে রাশিয়াকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক সংকলিত ১৩৭৩ নং ধারা, যার বলে, কেউ অপরাধী সাব্যস্ত হলে তাকে স্বদেশে পাঠানোর দাবী করা যেতেই পারে. এই প্রসঙ্গে বলছেন আন্তর্জাতিক আইনজ্ঞ আলেক্সান্দর স্কাভারোদকা. –
আমেরিকা ঐ ধারাটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত. ঐ ধারাটি প্রনয়ণ করা হয়েছিল ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে নিউ-ইয়র্কে নারকীয় সন্ত্রাসের পরেই. ঐ ধারায় উল্লেখ করা আছে, যে সন্ত্রাসীকে হস্তার্পণ করার জন্য দেশগুলি যথাসাধ্য সাহায্য করবে. এখানে উল্লেখযোগ্য, যে এককালে আমেরিকাই সন্ত্রাসবাদী আখমাদ ইলিয়াসভকে রাশিয়ার কাছে প্রত্যার্পণ করতে অস্বীকার করেছিল, যে ছিল নৃশংস সন্ত্রাসী শামিল বাসায়েভের সাকরেদ. স্নোডেনের কথা বলতে গেলে বলতে হয়, যে সে পলাতকের স্ট্যাটাস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রথম পদক্ষেপটি নিয়েছেঃ সে রাশিয়ার রাশিয়ার অভিবাসন দপ্তরের কাছে সাময়িক আশ্রয় পাওয়ার আবেদন করেছে. ২৪শে জুলাইতেই রাশিয়া সেই আবেদন মঞ্জুর করতে পারতো, বা অন্তত ট্র্যানজিট জোন ছেড়ে সামসিকভাবে স্নোডেনকে রাশিয়ায় বসবাস করার অনুমতি দিতে পারতো. কিন্তু বাস্তবে সেটা ঘটেনি. তবে এইক্ষেত্রে কোনো আইন লঙ্ঘন করা হয়নি – বলছেন রাশিয়ায় স্নোডেনের পরামর্শদাতা আইনজ্ঞ আনাতোলি কুচেরেনা. –
আবেদনপত্র আপাতত অভিবাসন দপ্তরের বিচারাধীন. আইন অনুযায়ী, তারা তিন মাস সময় ধরে গ্রাহ্যতা যাচাই করতে পারে. রাশিয়ায় এই প্রথমবার এরকম ঘটনা ঘটেছে, সুতরাং সময় লাগতেই পারে.
সুতরাং সংবাদদাতাদের এখনো তিন মাস প্রত্যেকদিন শেরেমেতেভা-২ বিমানবন্দরে থীড় জমাতে হবে স্নোডেনকে দর্শনের প্রতীক্ষায়. তবে স্বয়ং এডওয়ার্ড স্নোডেন যতদিন তার আবেদনপত্র বিবেচনা করা হবে, ততদিন ব্যক্তিগত নিরাপত্তার আশঙ্কায় সাংবাদিকদের সাথে মিলিত হতে রাজি নন./রেডিও রাশিয়া
Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, আন্তর্জাতিক, ইউরো সংবাদ, ইউরো সংবাদ, শীর্ষ সংবাদ