বার্লিনের আনন্দমেলা ‘কার্নেভাল অফ কালচারস’ এ বাংলাদেশ
ইউরো সংবাদ: জার্মানির বার্লিনে গত ১৮ বছর ধরে আয়োজন করা হচ্ছে ‘কার্নেভাল অফ কালচারস’৷ এই আনন্দেমেলায় বিশ্বের আরো অনেক দেশের সঙ্গে অংশ নেন প্রবাসী বাঙালিরাও৷ বার্লিনে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের মানুষের সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয় কার্নেভালে৷
অবাধ স্বাধীনতা
গত ১৮ বছর ধরে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে আয়োজন করা হচ্ছে ‘কার্নেভাল অফ কালচারস’৷ এই উৎসবের প্যারেডে স্বাধীনভাবে অংশ নেন নানা সংস্কৃতির, নানা পেশার মানুষ৷ এবার আবহাওয়া ভালো ছিল৷ তাই রবিবার (১৯.০৫.১৩) বার্লিন কার্নেভালে হাজির হন সাত লাখ দর্শক, আনন্দমেলা চলেছে নয় ঘণ্টা ধরে৷
ক্রয়েৎসব্যার্গে উৎসব
কার্নেভাল প্যারেড এবার চার কিলোমিটারের মত পথ পাড়ি দিয়েছে৷ বার্লিনের ক্রয়েৎসব্যার্গ এলাকা থেকে এই প্যারেড গতি পায়৷ ক্রয়েৎসব্যার্গ বহুসাংস্কৃতিক পাড়া হিসেবে বিশেষ পরিচিত৷ এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের দাবি, ডোনার কাবাব আসলে তাদেরই আবিষ্কার৷
যে আনন্দমেলা সবার জন্য
ক্রয়েৎসব্যার্গ-এর বাসিন্দাদের মধ্যে তুর্কি বংশোদ্ভূতদের সংখ্যা বেশি৷ ফলে কার্নেভালে তাদের অংশগ্রহণও থাকে বেশি৷ কিন্তু তাই বলে বার্লিনের অন্য অঞ্চলের মানুষ এই প্যারেডে অংশ নেননা, এমনটা ভাবলে ভুল হবে৷ বরং বার্লিনে অবস্থানরত ১৮০টি দেশের প্রতিনিধিরাই হাজির হন এই আনন্দমেলায়৷ বার্লিনের ৪৬০,০০০ এর মতো বাসিন্দা বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাসপোর্টধারী৷
ব্যয়বহুল উৎসব
বার্লিনে এই উৎসবের পেছনে খরচও হয় অনেক টাকা৷ এতকাল প্যারেডের আয়োজকরা গাড়ি ভাড়া থেকে শুরু করে, জেনারেটর, বর্ণিল পোশাক আর রিহার্সাল রুমের খরচ জুগিয়েছেন৷ এখন, অনেকেই এই আনন্দমেলায় সরকারের বাজেট বরাদ্দ চাইছেন৷ কেননা তাদের মতে, এই উৎসব বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে মিলন ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে৷
ক্যামেরার চোখে দেখা
এ বছর অনেকে বিশেষ পোশাক পরে কার্নেভাল দেখতে এসেছেন৷ এবং ছবি তোলার জন্য তাদের পর্যাপ্ত সময়ও ছিল৷ সামগ্রিকভাবে এই আনন্দেমেলা চার কিলোমিটারের মত পথ অতিক্রম করে৷
বার্লিনে সাম্বা
আনন্দেমেলার অন্যতম আকর্ষণ ব্রাজিল৷ দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নৃত্যগোষ্ঠী এই উৎসবে অংশ নেন৷ ফলে অনেকটা রিও ডি জানেরোর কার্নেভাল প্যারেডের স্বাদ পায় বার্লিনবাসী৷ আর বার্লিনের অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা পরিবেশে এই ছবির মতো পোশাক কার্নেভাল ছাড়া তেমন একটা দেখা যায় না৷
কার্নেভাল পরখ করছে বার্লিন
১৯৯৬ সালে প্রথম কার্নেভাল উদযাপন করে বার্লিন৷ সেসময় উদ্দেশ্য ছিল, ক্যাথলিকদের ঐতিহ্যবাহী কার্নেভাল উদযাপন করা, যা জার্মানির রাইনল্যান্ড অঞ্চলে বহু আগে থেকেই হয়ে আসছিল৷ আয়োজকরা সেই উৎসবের একটি সংস্করণ বার্লিনে আনতে চেয়েছিলেন৷
ভিন্ন ধারার সূচনা
তবে বার্লিনের কার্নেভাল জার্মানিতে এক ভিন্ন ধারার সূচনা করেছে৷ সুনির্দিষ্ট কোন জাতি নয়, বরং বহুসংস্কৃতির এক মিলনমেলায় পরিনত হয়েছে এই কার্নেভাল৷ অনেকটা ব্রিটেনের নটিং হিল কার্নেভালের মতো৷ ১৯৬০ সাল থেকে সেখানে বহুসংস্কৃতির মধ্যে সম্প্রতি এবং সহনশীলতার উদাহরণ হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে এমন উৎসব৷
ক্ষুদে বার্লিনালেরাও থাকছে উৎসবে
বার্লিনের শিশুকিশোররাই বা বাদ থাকবেন কেন? বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যকার সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় তারাও৷ এবছর তাই ক্রয়েৎসব্যার্গ-এর কার্নেভালে হাজির হয় দেড় হাজারের মতো শিশু৷
বাঙালির অংশগ্রহণ
বার্লিনের কার্নেভালে গত এক দশক ধরে অংশ নিচ্ছেন বাঙালিরা৷ ইতোমধ্যে তাদের বর্ণিল অংশগ্রহণ বিশেষ নজর কড়েছে কার্নেভাল কর্তৃপক্ষের৷ আনন্দমেলায় বাঙালির সংস্কৃতির উপস্থাপন পুরস্কারও জয় করেছে৷ (ফাইল ফটো)
দেখা হবে আগামী বছর!
কার্নেভালের নিজস্ব সংস্করণকে কার্যত ভালোবেসে ফেলেছে বার্লিনবাসী৷ তাই ২০১৪ সালে আরো ভালোভাবে এই উৎসব আয়োজনে আগ্রহী তারা৷ আগামী বছর এই উৎসবের আয়োজন করা হবে ৮ জুন৷
Category: 1stpage, ইউরো সংবাদ, ইউরো সংবাদ, ইউরো-সংবাদ - German