• ৯ অগ্রহায়ণ ,১৪৩১,23 Nov ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

পুলিশ দম্পতি খুনের ৩০ পৃষ্ঠা জবানি,এমব্রয়ডারি শিখছে ঐশী রহমান:

| আগস্ট 26, 2013 | 0 Comments

দেশের খবর: পুলিশ দম্পতির নির্মম খুনের বর্ণনা উঠে এসেছে তাদের মেয়ে ঐশী রহমানের জবানিতে। আদালতে রেকর্ড করা ৩০ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে খুনের ঘটনার আদ্যোপান্ত খুলে বলেছে সে। জানিয়েছে, পিতা-মাতাকে খুন করার আগে মাতাল ছিল সে। খুনের আগে হুইস্কি পান করেছিল। খুনের পর আশ্রয়ের খোঁজে কোথায় কোথায় ঘুরেছে তারও বর্ণনা দিয়েছে। জানিয়েছে, সন্ধ্যা থেকে খুনের পরিকল্পনা করলেও রাত ২টায় তার হত্যা মিশন শুরু হয়। তার এক ঘণ্টা আগে হুইস্কি পান করে সে। গতকাল আদালত সূত্র জানিয়েছে, ঐশীর দেয়া জবানবন্দিতে রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের এ বিস্তারিত বর্ণনা উঠে এসেছে। এতে হত্যাকাণ্ডের প্ররোচনাকারী হিসেবে তার বয়ফ্রেন্ড জনির সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রকাশ হয়েছে।

জবানবন্দিতে ঐশী বলে, চারদিন আগে বাবা-মাকে হত্যার পরিকল্পনা করি। পুরো বিষয়টি বন্ধু জনির সঙ্গে আলোচনা করি। সে-ও উৎসাহিত করে। আগে থেকেই দুই বোতল মদ বাসায় এনে ওয়ারড্রোবের ভেতরে লুকিয়ে রাখি। মদের বোতল দু’টি বন্ধুই দিয়েছিল।

জবানবন্দিতে ঐশী বলেছে, ‘রাত ২টার দিকে দু’পাশে ধারালো চাকু নিয়ে মায়ের রুমে ঢুকি। আম্মু কাত হয়ে ঘুমাচ্ছিল। আম্মুর পাঁজরের নিচে পেটের পাশে চাকু দিয়ে স্ট্যাব করলে আম্মুর ঘুম ভেঙে যায়। ছোট ভাই ঐহীও জেগে ওঠে। ঐহী চিৎকার শুরু করে। তখন ঐহীকে বাথরুমে নিয়ে আটকে রাখি। আম্মুর পাশে এসে বসি। আম্মু বলে, আমি তোর মা…..না? আম্মু পানি খেতে চায়। আমি আম্মুর রুমে থাকা জমজমের পানি খেতে দিই। এরপরই আম্মুকে আরও কয়েকবার স্ট্যাব করি। তবে স্পষ্ট মনে নাই। আম্মুর কষ্ট হচ্ছিল দেখে শেষে গলার মধ্যে স্ট্যাব করি। তখন আম্মু মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে বিছানা থেকে ফ্লোরে পড়ে গিয়েছিল। জবানবন্দিতে ঐশী তার বাবাকে হত্যার বিষয়ে বলেছে, আম্মুর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আব্বুর রুমে গিয়ে আব্বুর গলার মধ্যে স্ট্যাব করি। কিছুক্ষণ পর বাবা মারা যায়। সুমি তখন গেস্টরুমে ঘুমাচ্ছিল। দরজা বন্ধ ছিল। আমি সুমিকে ডেকে তুলি। এবং বলি, আব্বু-আম্মুকে মেরে ফেলেছে। সুমি জানতে চেয়েছিল কে মেরে ফেলেছে। আমি কিছু বলি নাই। সুমিকে সাথে নিয়ে আব্বু ও আম্মুর লাশ আমার রুমের (আব্বু যে রুমে ঘুমাচ্ছিলেন) বাথরুমে রেখে দিই। আম্মুর রুমের রক্তমাখা বেডশিট আমার রুমে নিয়ে রাখে সুমি। এরপর সুমি আম্মুর রুম পরিষ্কার করে। আমি গোসল করি এবং আমার পোশাক চেঞ্জ করি। আমার রুম লক করে রাখি যাতে ঐহী কিছু বুঝতে না পারে। এরপর ঐহীকে বাথরুম থেকে বের করে নিয়ে আসি। এরপর ঐহীকে বলি, আম্মুর একটু ইনজুরড হয়েছে, আব্বু হাসপাতালে নিয়ে গেছে আম্মুকে। ঐহীকে বলি, আমরা অন্য জায়গায় চলে যাবো। আব্বু এসে আমাদের নিয়ে যাবে। আম্মুর লাশ বাথরুমে ঢোকানোর আগে আংটি ও চুড়ি খুলে রাখি।

ঐশী তার জবানিতে বলেছে, ঘটনার পর জনিকে ফোন করি। সে ফোন ধরেনি। এরপর জনির মাধ্যমে পরিচিত এক আঙ্কেল রকির সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং আশ্রয় চাই। তখন রকি আঙ্কেল রনি নামে একজনকে বাসা ঠিক করে দিতে বলেন।

জবানবন্দির একটি অংশে ঐশী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ১০ মিনিটের দিকে বাসা থেকে বের হওয়ার পর আশ্রয়ের জন্য সিএনজি নিয়ে সারা দিন ঘুরি। দিনের বিভিন্ন সময় রকি ও জনির সঙ্গে দেখাও হয়। আর রনির সঙ্গে ফোনে কথা হয়। রাতে থাকার জায়গা না পেয়ে সুমিকে এক সিএনজি চালকের বাসায় রাখি। আরেক সিএনজি চালক আমাকে ও ঐহীকে তার মালিকের বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন। তার মালিক সম্ভবত ব্যাংকে চাকরি করেন। ওই রাতে সুবর্ণ খালার সঙ্গে যোগাযোগ করি। সুবর্ণা খালাই রবিউল মামার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমার সঙ্গে রবিউল মামার কথাও হয়। তাই ঐহীকে রিকশায় উঠিয়ে দিই মামার বাসায় যাওয়ার জন্য। পরদিন শুক্রবার রাতে ছিলাম রনির খালার বাসায়, তার নাম কুলসুম। বাসা বাসাবোতে। রাতে আমার অনুশোচনা হতে থাকে। আমি সিদ্ধান্ত নিই সব ঘটনা প্রকাশ করে দেবো। শনিবার সকালে উত্তরায় সুবর্ণা খালার বাসায় যাই। খালাকে না পেয়ে পল্টন থানায় চলে আসি। জনি ও রকির পরিচয়ের ব্যাপারে ঐশী বলেছে, ‘জনি আমার বন্ধু, তার বয়স ২৫-২৬ হবে। গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ, থাকে ঢাকায়। আফতাব নগরে স্টেপ আপ নামে তার একটি নাচের স্কুল ছিল। পরে জানতে পারি জনির বাড়ি রূপগঞ্জে। জনির সঙ্গে ইয়াবা সেবন করতাম, সেই ইয়াবা সাপ্লাই দিতো। আর রকির সঙ্গে পরিচয় হয় জনির মাধ্যমেই। বাড্ডা এলাকার ৮ নম্বর রোডে রকির অফিস আছে। রকি রেন্ট-এ-কারের ব্যবসায়ী। বয়স অনুমান ৪০ বছর।

বাবা-মায়ের সঙ্গে দূরত্ব প্রসঙ্গে সে বলে, ‘আমার বয়স যখন ১২-১৩ বছর তখন থেকেই আব্বু-আম্মুর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে। আব্বু-আম্মু আমাকে মারধর করতেন। আমি একাধিকবার পালিয়ে যাই। আমাকে খোঁজ করে এনে বাসায় আটকে রাখা হতো। আমি বাসায় কারও সঙ্গে কিছু শেয়ার করতে পারতাম না। জনির সঙ্গে সবকিছু আলোচনা করতাম। ঘটনার চার-পাঁচ দিন আগে থেকেই আব্বু-আম্মুকে মেরে ফেলার চিন্তা করছিলাম। জনিকে পরিকল্পনার কথা জানাই। জনি বলে তাদের শেষ করে দেয়ার জন্য। পরে শেল্টার লাগলে সে ব্যবস্থা করবে।

ঐশী জবানবন্দিতে বলে, বিগত ১৩ই আগস্ট বৃহস্পতিবার আমি ওষুধের দোকান থেকে তিন পাতা টেনিল ও তিন পাতা নাইট্যাচ (মোট ৬০টি) কিনে এনে রাখি। পরদিন শুক্রবার বাসায় আব্বু-আম্মুর জন্য কফি তৈরি করি। সব ওষুধই গুঁড়ো করে কফির সঙ্গে মিশিয়ে দিই। মাগরিবের নামাজের পর আম্মুকে কফি খেতে দিই। আম্মু কফি খেয়ে ঘুমিয়ে যান। রাত ১১টার পর অবশিষ্ট কফি গরম করে বাবাকে খেতে দিই। বাবাও কফি পান করে ঘুমিয়ে যান। এরপর রাত ১টায় হুইস্কি খেতে শুরু করি। এটা শেষ করে হত্যা মিশন শুরু করি রাত ২টার দিকে।

গত ১৬ই আগস্ট শুক্রবার রাতে রাজধানীর চামেলীবাগের ‘চামেলী ম্যানশনে’র ছয় তলার বি-৫ নম্বর ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে পুলিশ দম্পতির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঐশীর কক্ষের বাথরুম থেকে চাদর দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় লাশ দু’টি উদ্ধার করা হয়। দু’জনের শরীরেই ছিল উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন।
ঘটনার পর পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে ঐশী। এর পর তাকে ও কাজের মেয়ে সুমিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে গাজীপুরের কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সেখানে কাজের মেয়ে সুমিকেও পাঠানো হয়েছে।

এমব্রয়ডারি শিখছে ঐশী রহমান:

এমব্রয়ডারি শিখছে ঐশী রহমান। গাজীপুর কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে তার পছন্দ অনুযায়ী এ কাজ দেয়া হয়েছে। পুলিশের এসবি’র পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না বেগমের হত্যার দায় স্বীকার করার পর তাদের সন্তান ঐশী রহমানকে ওই সংশোধনী কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ঐশী জানিয়েছে, সে খুনের ঘটনার জন্য অনুতপ্ত। সংশোধনী প্রতিষ্ঠানের নিয়মানুযায়ী কেন্দ্রের নিবাসী সবাইকে কোন না কোন কাজ করতে হয়। প্রশিক্ষণ নিতে হয়। ঐশীকে তার ইচ্ছার ওপর ভিত্তি করে এমব্রয়ডারি প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। শনিবার রাতে ঐশী ও তাদের কাজের মেয়ে সুমীকে আনা হয় ওই কেন্দ্রে। গতকাল সকালে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেগম নাসিমা ও গাজীপুরের উপ-পরিচালক লুৎফুন্নেছা কোনাবাড়ির ওই কেন্দ্রটি পরিদর্শনে যান। কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে ঐশীকে ডেকে আনেন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তার এক পর্যায়ে ঘটনার জন্য অনুতপ্ত বলে জানান ঐশী। তাকে বলা হয়েছে, এখানে যারা থাকে সবাইকে কিছু না কিছু করতে হয়। তোমাকেও কিছু করতে হবে। কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে ঐশী সেলাইয়ের কাজই পছন্দ করে। উপ-পরিচালক লুৎফুন্নেছা জানান, ঐশীর পছন্দ অনুযায়ী এমব্রয়ডারি প্রশিক্ষণের কাজ দেয়া হয়েছে। শিগগিরই তার জামিন হয়ে যাবে এমন দাবি করে কেন্দ্রের নিবাসী ঐশী তার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করে। কেন্দ্রের কর্মকর্তা জানান, তার আত্মীয়স্বজন বই-পুস্তক দিয়ে গেলে নিজে নিজে লেখাপড়া করতে পারবে এবং জামিন না হলে কেন্দ্রের ভেতরে থেকেই বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দিতে পারবে সে। কোনাবাড়ী কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক শঙ্কর চরণ সাহা জানান, শনিবার রাত নয়টায় পুলিশ প্রহরায় ঐশীকে আনা হয়েছে এ কেন্দ্রে। ওই সময় তার পরনে জিন্সের প্যান্ট, নীল-সাদা গ্রামীণ চেকের শার্ট ও সাদা ওড়না ছিল। ঐশীকে কেন্দ্রের তেতলায় এবং তাদের কাজের মেয়ে সুমীকে চারতলার কক্ষে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রে আনার পর ঐশীকে অনেকটাই স্বাভাবিক দেখা গেছে। গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ীতে অবস্থিত এই কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে বর্তমানে কিশোরী রয়েছে ১১০ জন। কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা ১৫০ জন। সংশোধনী এই কেন্দ্রটিতে নিবাসী কিশোরীদের মানসিক পরিবর্তনে কাউন্সেলিং করানো হয়। এছাড়াও ধর্মীয় শিক্ষা, সেলাই, বাটিক, রান্না ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। এখানকার নিবাসীদের সকাল সাড়ে আটটার দিকে নাশতা, বেলা একটার দিকে দুপুরের খাবার, বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে নাশতা এবং রাত আটটার দিকে রাতের খাবার দেয়া হয়। অপরাধের সঙ্গে জড়িত বা অভিযুক্ত কিশোরীদের এখানে পাঠানো হয়। বিচারকালীন অবস্থায় সাধারণ কারাগারে প্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীদের থেকে আলাদা স্থানে রেখে সংশোধনমূলক এই প্রতিষ্ঠানে রাখা হয় কিশোরীদের। টঙ্গীতে এমনি ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে কিশোরদের জন্য। শনিবার ঢাকার আদালতে খাসকামরায় জবানবন্দি নেয়ার পর ঐশীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মহানগর হাকিম আনোয়ার সাদত। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার পর শনিবার দুপুরে ঐশীকে ঢাকার আদালতে নেয় পুলিশ। তার সঙ্গে নেয়া হয় বন্ধু মিজানুর রহমান রনি ও শিশু গৃহকর্মী খাদিজা খাতুন সুমীকে। ওই আদালতে ঐশী ও সুমী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দি দেয়ার পর ঐশী ও তাদের বাড়ির গৃহকর্মী সুমীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। তবে তাদের বয়স ১৮ বছরের কম দাবি এবং তা নিয়ে জটিলতা দেখা যাওয়ায় তাদের আনা হয় সংশোধনী প্রতিষ্ঠান গাজীপুরের কোনাবাড়ি কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে। এদিকে ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি। তাকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও ১০ দিন হেফাজতের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আবু আল খায়ের মাতব্বর। ওই তিনজনকে গত ১৮ই আগস্ট পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছিল ঢাকার হাকিম আদালত। এর মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক ঐশী ও সুমিকে রিমান্ডে নেয়ায় ব্যাপক সমালোচনা ওঠে। অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ও লেভেলের ছাত্রী ঐশীকে রিমান্ডে পাঠানোর পর বয়স নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় বয়স প্রমাণের জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করেছে পুলিশ। তার প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি।

Category: 1stpage, দেশের খবর, শীর্ষ সংবাদ

About the Author ()

Leave a Reply