• ৭ অগ্রহায়ণ ,১৪৩১,21 Nov ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

নরওয়ে: এত বিত্ত বৈভব নিয়ে কী করা যায়?

| অক্টোবর 13, 2013 | 0 Comments

ইউরো সংবাদ: সুন্দর প্রকৃতি, প্রচুর অর্থ৷ নিশীথ সূর্যের দেশ নরওয়ের অভিযোগ করার কিছু নেই৷ একটি দেশের প্রায় সবকিছু থাকা সত্ত্বেও আর কিছু কী প্রয়োজন?

নরওয়ের ট্রন্ডহাইম শহরের ৩০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত ছোট্ট শহর স্টোরডালে শেষ গ্রীষ্মের এক সন্ধ্যা৷ বাগান থেকে বৃক্ষরাজির ফাঁক দিয়ে দেখা যায় সাগরের কোল ঘেঁষা পাহাড়ের সারি৷ সূর্যের অস্ত যাচ্ছে ধীরে ধীরে৷ চোখে পড়ে সোনালি রঙের টলটলে পানি৷ এখানেই একটি বাড়িতে বাস করেন রুনে ভিস্ট৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে বাস করতে পারাটা পরিবারের জন্য সৌভাগ্য৷” বাচ্চাদের জন্য একটি সুন্দর জায়গা৷ শান্তি ও প্রশান্তি এনে দেয়৷ জীবনের মানও অনেক উন্নত৷ ৪১ বছর বয়সি রুনে ভিস্ট ট্রন্ডহাইমের একটি ব্যাংকে চাকরি করেন৷ প্রতি সকালে বাসে করে ট্রন্ডহাইম শহরে কাজে যান৷ বিকাল চারটায় বাসায় ফিরে আসেন৷

অনেকেই চান নিজস্ব বাড়ি

রাজধানী অসলোতে প্রায় দশ বছর বাস করার পর, ভিস্ট ও তাঁর স্ত্রী নিনা দুই কন্যা নিয়ে ট্রন্ডহাইমের নতুন বাড়িতে সদ্য উঠে এসেছেন৷ ক্যাটালগ দেখে কেনা তৈরি একটি বাড়ি৷ আলোকিত, আধুনিক, বিশাল কাচে ঢাকা সদর৷ ২৫০ বর্গ কিলোমিটারের তিন তলা বাড়িটি এটি৷ বিস্তৃত জায়গা৷ তবে দামও কম নয়৷ ‘‘আমরা ছয় মিলিয়ন ক্রোনার দিয়ে কিনেছি এই বাড়ি”, বলেন নিনা৷ অর্থাৎ, বাড়ির দাম সাড়ে সাত লক্ষ ইউরো৷

বেশিরভাগ নরওয়েজিয়ান নিজস্ব বাড়ি কিনতে আগ্রহী৷ যেমন ভিস্ট ও তাঁর প্রতিবেশী বাড়ি কিনেছেন৷ অল্প বয়সিরাও সহজে বাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে ধার পেতে পারেন৷ অল্প কিছু নিজস্ব মূলধন থাকলেই হলো৷ সেই সাথে একটি চাকরির চুক্তি৷ নরওয়ের প্রায় প্রত্যেকেরই চাকরি আছে৷ দেশব্যাপী বেকারত্বের হার মাত্র তিন শতাংশের একটু বেশি৷ ভিস্টের প্রতিবেশী স্বামী স্ত্রী দুজনই চাকরিজীবী৷ স্ত্রী লিনা আইকেডাল স্টুয়ার্ডেস, স্বামী আটলে আইকেডাল ট্রন্ডহাইম বিমান বন্দরে চাকরি করেন৷

কোনো সমস্যাই কী নেই?

সাধ্যের মধ্যে বাড়ি কেনার সুযোগ, বেকারত্বের হার নামমাত্র৷ ইউরোপের মধ্যে জীবনের মান সবচেয়ে উঁচুতে৷ প্রশ্ন জাগতে পারে নরওয়েজিয়ানদের কী কোনো সমস্যা নেই? বাবা আইকেডালের মতে অবশ্যই আছে৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের রাস্তাগুলি খারাপ, রেলযোগাযোগও তেমনি৷” তাঁর পরামর্শ, ‘‘ভিখারিদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে হবে৷ অয়েল ফান্ড থেকে পাওয়া অর্থ সামাজিক ব্যবস্থায় ঢালতে হবে৷ অর্থ তো যথেষ্ট আছে৷ কেন আমরা আমাদের দেশে তা বিনিয়োগ করছি না?”

রাষ্ট্রীয় অয়েল ফান্ড দুই ভাগে বিভক্ত৷ একটি ছোট অংশ দেশের অভ্যন্তরে বিনিয়োগ করা হয়৷ এই অর্থ বয়স্ক ও সামাজিক বিমাখাতে ব্যয় করা হয়৷ বাকি বড় অংশটা বিদেশে বিনিয়োগ করা হয়৷ ব্যাখ্যা করে বলেন ভিস্ট৷ অসলোর ব্যাংকে চাকরি করার সময় বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগের ব্যাপারে পরামর্শ দিতেন তিনি৷ এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় অয়েল ফান্ডও ছিল৷ ইউরোপীয় শেয়ার মার্কেটের এক থেকে দুই শতাংশ অয়েল ফান্ডের দখলে৷ সংখ্যায় ৫৬০ বিলিয়ন ইউরো৷ কখনও যদি দুঃসময় আসে কাজে লাগবে এই অর্থ৷

সম্প্রতি নরওয়ের সংসদীয় নির্বাচনেও দেশটির বিত্ত বৈভবের প্রভাব পড়েছে৷ জয়ী হয়েছে রক্ষণশীল ঘরানার দলগুলি৷ ধনীদের ভোট তাদের দিকেই পড়েছে৷

১৯৯০ সালের পর থেকেই উত্তরের এই দেশটিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ সঞ্চিত অর্থ ফুলেফেঁপে উঠছে৷ জানা গেছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা রয়েছে ৭৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার৷

Category: 1stpage, ইউরো সংবাদ, ইউরো সংবাদ

About the Author ()

Leave a Reply