বাবা-মার ভরণপোষণ না করলে জেল-জরিমানার নতুন আইন
দেশের খবর: বাবা-মার ভরণপোষণে ব্যর্থতার জন্য সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, আর তা দিতে ব্যর্থ হলে তিন মাস কারাভোগের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে বিল পাস হয়েছে৷
এমনকি কোনো সন্তানের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে বা নিকট আত্মীয় এ দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে তারাও একই অপরাধে অপরাধী হবেন এবং একই শাস্তি পাবেন।
‘পিতা-মাতার ভরণপোষণ বিল-২০১৩’ শিরোনামে বেসরকারি বিলটি বৃহস্পতিবার সংসদে পাসের জন্য প্রস্তাব করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হক চুন্নু। এটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
মন্ত্রী ছাড়া অন্য সদস্যরা আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়ে কোনো বিল আনলে তা বেসরকারি বিল হিসেবে বিবেচিত হয়।
২০১১ সালে বিলটি উত্থাপন করেছিলেন মুজিবুল হক। বিলের ওপর দেয়া জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদের ৫টি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়।
এই আইন প্রণয়নের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে মুজিবুল বলেন, পরিবর্তিত সমাজ ব্যবস্থায় অসহায় ও সহায় সম্বলহীন বাবা-মা, দাদা-দাদী, নানা-নানীর প্রতি তাদের সন্তানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ করে দেয়ার সময় এসেছে।
এই আইনে পিতার অবর্তমানে দাদা-দাদী এবং মাতার অবর্তমানে নানা-নানীরও ভরণপোষণ নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতার কথাও বলা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, একাধিক সন্তান থাকলে সন্তানরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে বাবা-মার ভরণপোষণ নিশ্চিত করবে।
প্রত্যেক সন্তানকে বাবা-মার একই জায়গায় একই স্থানে বসবাস নিশ্চিত করতে হবে। কোনো সন্তান তার বাবা বা মাকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বৃদ্ধ নিবাস কিংবা আলাদাভাবে বসবাসে বাধ্য করতে পারবে না।
নতুন আইন অনুযায়ী, সন্তান তার বাবা-মার স্বাস্থ্য সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখবে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা ও পরিচর্যা করবে।
বাবা-মা আলাদা থাকলে সন্তানের আয়ের যুক্তিসঙ্গত অংশ তাদের নিয়মিত দিতে হবে।
এই আইনের অধীনে কোনো সন্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করতে পারবে শুধু বাবা-মা। অভিযোগকারী বাবা বা মাকে শুনানির সুযোগ না দিয়ে কোনো আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জামিন দিতে পারবে না।
তবে আইনে আপস-নিষ্পত্তির বিধানও যুক্ত রয়েছে।