• ৭ অগ্রহায়ণ ,১৪৩১,21 Nov ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাইগারদের সিরিজ জয়, হোয়াইটওয়াশের প্রতীক্ষা

| অক্টোবর 31, 2013 | 0 Comments

ইউরোবিডি২৪নিউজঃ রাত তখন ৯টা ২০ মিনিট। ৪৬.৪ ওভারে টাইগার পেসার মাশরাফির ডেলিভারিতে নিউজিল্যান্ডের শেষ ব্যাটসমান টিম সাউদির স্ট্যাম্প ভেঙে গেলে নতুন ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। ব্ল্যাকক্যাপসরা ২০৭ রানে অলআউট। আর ৪০ রানের জয় দিয়ে টানা দ্বিতীয় জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিজেদের করে নেয় টাইগাররা।

২৪ বলে ২৬ রান আর ৩৪ রানে ৩ উইকেট শিকারী সোহাগ গাজী হলেন ম্যাচ সেরা। দেশের মাটিতে ১১তম সিরিজ জয় এটা। আর সব মিলিয়ে দেশে-বিদেশে ১৬তম। পাশাপাশি টেস্ট খেলুড়ে কোনো উপরের র্যাং কিংয়ে থাকা দলকে পর পর দুই বার সিরিজে হারানোর স্বাদ গ্রহণ প্রথম বার। ২০১০ সালের পর দ্বিতীয় বার নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন দেখা শুরু। ফতুল্লা স্টেডিয়ামে ৩ নভেম্বর সিরিজের শেষ ম্যাচ।

সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। মিরপুর স্টেডিয়ামে উপস্থিত ২৫ হাজার দর্শক বোবা হয়ে গেছে। কারও মুখে কথা নেই। কারণ হোম সিরিজ জয়ের মিশনে মুশফিকদের দেয়া টার্গেট ২৪৭ রানের জবাবে ব্যাট করছে নিউজিল্যান্ড। স্কোর ৩ উইকেটে ৪৫। ৪র্থ উইকেটে এন্ডারসন আর টেইলর ব্যাট করছে। ১০৬ রান পর্যন্ত টেনে নিয়ে ৬১ রানের জুটি মুশফিকদের বিপদ সংকেত দিচ্ছে। এর পরই ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে আসা পেসার মাশরাফির হাত ধরে। ২৭তম ওভারের শেষ বলে মাশরাফি বল এন্ডারসনের ব্যাট স্পর্শ করে মুশফিকের গ্লাভসে জমা হলে প্রাণ ফিরে আসে মিরপুরের গ্যালারিতে।

বাংলাদেশের ২৪৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ডের দলীয় ৫ রানেই রাদারফোর্ডকে ফেরালেন মাশরাফি বোল্ড করে। এরপর ৪০ রানের জুটি গড়ে উঠে ডেভচি আর ইলিয়টের মধ্যে। কঠিন হয়ে উঠার পথে ১৯ রান করা ডেভচিচকে দলীয় ৪৫ রানে সোহাগ ফিরতি ক্যাচ বানালেন। আর ইলিয়ট ১৪ রান করে দলীয় রাজ্জাকের শিকারে পরিণত হলেন এলবি’র ফাঁদে পড়ে। নিউজিল্যান্ডকে জয় পেতে হলে আরও ৭ উইকেটে ১৯৭ রান স্কোরে জমা করতে হবে। এন্ডারসন আর টেইলের জুটি ৬১ রানের জুটি ভাঙ্গলেন মাশরাফি। আর ৫ম উইকেটে ম্যাককালাম আর টেইলের জুটি সেট হবার আগেই বিদায়। স্পিনার মমিনুল এলবি’র ফাদে ফেলেন ১৪ রান করা ম্যাককালামকে।

এরপর ক্রিজে এসেই রান আউট হলেন ল্যাথাম। ৬ উইকেটে স্কোর  ১৩১! সত্যি বলতে ম্যাচ তখন মুশফিকদের নিয়ন্ত্রণে। কারণ ৪ উইকেটে ১৭ ওভারে ১১৭ রান দরকার। ওভার প্রতি প্রায় ৭ রান। এক পর্যায়ে স্কোর ৮ উইকেটে ১৫৭। আর প্রয়োজন ৬১ বলে ৯১ রান। সম্ভব হয়নি সফরকারীদের পক্ষে। ৯ম জুটিতে ৩৭ আর শেষ জুটিতে ১৩ রান করে চেষ্টা করেছে সফরকারীরা।

এর আগে সিরিজের দ্বিতীয় ওডিআই মাঠে গড়ানোর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের মাটিতে আগে ব্যাট করে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর ছিল আগের ম্যাচে ২৬৫ আর ২০১০ সালের সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ২৪১ রান। আজ তামিম-শামসুর  রহমান যেভাবে উদ্বোধনী জুটিতে শুরু করেছিলেন তাতে মনে হয়েছিল ২৬৫ রানের সেরা স্কোরটা বুঝি পেছনে চলে যাবে। লম্বা জুটি না হওয়াতে বাংলাদেশ ২৪৭ রানে অলআউট হল। এই সিরিজে পর পর দুই ম্যাচে মুশফিকরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করতে ব্যর্থ হল। আগের ম্যাচে ৪৯.৪ ওভারে আর এবার তো ৪৯তম ওভারে।

ওপেনিং জুটিতে তামিম ব্যাট করতে নেমে টিকে থাকলেন। করলেন নিজের ২৫তম ওডিআই ফিফটি। সঙ্গী শামসুর রহমান এনামুলের বদলী হিসাবে একেবারে খারাপ করলেন না। ২৫ রানে ফেরত গেলেন। ৬৩ রানের ওপেনিং জুটির ভিত্তিতে চড়ে দ্বিতীয় জুটিতে তামিম আর মমিনুল হক ৪৭ রান যোগ করলেন। মমিনুল ফেরত গেলেন ৩১ রান করে। দলীয় স্কোর ২ উইকেট ১১০।

তামিম টিকলে আরও রান আসবে। এমন ভাবনা স্থায়ী হবার পর পরই দলের ১৩৬ রানে তামিম ব্যক্তিগত ৫৮ রানে আউট।

তৃতীয় জুটিতে অধিনায়ক মুশফিক আর নাইম। আগের ম্যাচে মুশফিক করেছিলেন ৯০ আর নাঈম ৮৪।

এবার এতো কিছু হল না। মুশফিক ৩১ রানে আর নাঈম ১৬ রানে সাঁজঘরে ফেরত। তৃতীয় জুটিতে যোগ হল মাত্র ২৬ রান।  ৪র্থ উইকেট জুটিতে আসে ৩৩ রান। নাসিরও ফেরত গেলেন মাত্র ৩ রান যোগ করে। ৬ উইকেটে স্কোর ১৭৬ রান! ৩৮.২ ওভার শেষ। অনেকটা সময় সামনে পড়ে আছে।

ক্রিজে তখন মাহমুদুল্লাহ আর আর সোহাগ গাজী। ৭ম উইকেটে এই জুটি যোগ করল ৪৮ রান। বাংলাদেশ আড়াই শত রান স্পর্শ করার পথ খুঁজে পায়। ২১ রানে মাহমুদুল্লাহ আউট। এরপর ৮ম জুটি মাশরাফি আর সোহাগ। মারকুটি রূপে নিজের পুরনো চেহারাটা দেখালেন নিউজিল্যান্ডকে। ৪৫ ওভার শেষে স্কোর ৬ উইকেটে ২১৬ রান। এর মধ্যে ২২ রানে থাকা সোহাগ ক্যাচ দিলেন ডেভচিচকে, কিন্তু মিস। মাশরাফির মারকুটে ব্যাটিংয়ে উতাল মিরপুরের গ্যালারি। ৪৬ তম ওভারে মাশরাফি চার-ছয় দিয়ে রান টেনে নিলেন ২৪০-এর ঘরে। পরে বলেই মাশরাফি বোল্ড ৮ বলে ১৪ রানে। রাজ্জাক আর রুবেল শেষ জুটিতে ৭ রান যোগ করে। ২৪৭ রানেই শেষ হল স্বাগতিকদের ব্যাটিং মিশন।

Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, খেলাধুলা, প্রচ্ছদ, ব্রেকিং নিউজ, শীর্ষ সংবাদ

About the Author ()

Leave a Reply