ঢাকা মেডিকেলের তিন তারকা
স্টুডেন্ট কর্ণার: পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় ডেঙ্গুজ্বরে ভুগেছিলেন। তখন তাঁর চিকিৎসা করেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এম আর খান। তাঁকে দেখেই প্রথম চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা জাগে মেয়েটির। সেই থেকে শুরু। যদিও এরপর কখনো পাইলট, কখনো কম্পিউটার প্রোগ্রামার আবার কখনো কূটনীতিক হওয়ার ইচ্ছা হয়েছে, তবু শেষ পর্যন্ত চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছারই হয়েছে জয়। বলছিলাম আনিকা তাহসিনের কথা। গত বছর অনুষ্ঠিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ১৯৬.৫ মেধাস্কোর নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে এখন পড়ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে মাত্রই ভর্তি হওয়া নতুন ব্যাচ কে-৭১-এর শিক্ষার্থীদের এ বছরের ১১ জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হয়। এর আগে ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় সদ্য আগতদের পরিচিতি অনুষ্ঠান।
সপ্তাহ খানেক ক্লাস হওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ক্যানটিনে এক আড্ডায় কথা হচ্ছিল আনিকার সঙ্গে। আনিকা ছাড়াও সেখানে ছিলেন মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকারী প্রীতম দাস ও তৃতীয় স্থান অধিকারী প্রদীপ্ত সাহা। মেডিকেল কলেজের নতুন জীবন ভালোই লাগছে তাঁদের। নতুন বিষয়গুলোর মধ্যে প্রদীপ্ত আর প্রীতমের ভালো লাগছে বায়োকেমিস্ট্রি। আনিকা আবার পছন্দ করছেন অ্যানাটমি, অ্যানাটমি ডিসেকশন হল বেশ ভালো লাগছে তাঁর। অবশ্য এ কদিনেই আনিকা বুঝে গেছেন অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ে মেডিকেল কলেজে ছুটি পাওয়া যায় খুবই কম।/প্রথম আলো
আনিকা পড়তেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। হাউস ক্যাপ্টেন ছিলেন সেখানকার ‘অপরাজিতা’ হাউসের। প্রথম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা ও অন্যান্য কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে পেয়েছেন স্বর্ণপদক। যুক্ত ছিলেন ভিকারুননিসা নূন ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবেব সঙ্গেও। ছবি আঁকা, লেখালেখি, নাচ, অভিনয়—অনেক কিছুই করেছেন জীবনে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে পরিচিতি অনুষ্ঠানে হওয়া শপথগ্রহণ পর্বটি বেশ ভালো লেগেছে তাঁর। স্বপ্ন দেখেন শিশু বিশেষজ্ঞ সার্জন হওয়ার। একটি শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা আছে তাঁর।
প্রীতম থাকতেন ফরিদপুরে। পড়ালেখা করেছেন ফরিদপুর জিলা স্কুল ও ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে। কখনো পাইলট, কখনো শিক্ষক, আবার কখনো ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। প্রীতমের বড় ভাই পড়ছেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে। পরিবারের ইচ্ছা ছিল, প্রীতমও যেন পড়েন চিকিৎসাবিদ্যা। শেষ পর্যন্ত নিজেই চাইলেন মেডিকেলে ভর্তি হতে। মেধা স্কোর ১৯৫ পেয়ে ভর্তি হলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। ভবিষ্যতে শিক্ষকতা করার স্বপ্ন দেখেন এখনো। কাজ করতে চান স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো নিয়ে।
প্রদীপ্ত পড়তেন খুলনা জেলা স্কুল আর খুলনা সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজে। মেধা স্কোর ১৯২.৫ পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ‘আইটেম’ নামের ছোট পরীক্ষা এবং হোস্টেলের নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন তিনি। মেডিকেলে পড়ার পাশাপাশি বিজ্ঞানবিষয়ক ব্লগিং করছেন নিয়মিত। মেডিকেল কলেজে না পড়লে হয়তো প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগ দিতেন অথবা চাইতেন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার হতে। এখন অবশ্য হতে চান নিউরোসার্জন।
আনিকা, প্রীতম আর প্রদীপ্ত— প্রত্যেকেরই রয়েছে ভিন্ন গল্প। আজ তাঁরা একই পথের পথিক। অনেক বড় চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন চোখে নিয়ে তাঁরা প্রত্যেকেই এগিয়ে যেতে চান অনেক দূর।
Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, স্টুডেন্ট কর্ণার