লন্ডনে শাহ আব্দুল করিম সংগীত প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত
বদরুল মনসুর, যুক্তরাজ্য থেকে :: সেলিব্রেশন অব ব্রিটিশ বাংলাদেশী কালচারের উদ্যোগে গত ৩ আগস্ট রোববার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল শাহ আব্দুল করিম সংগীত প্রতিযোগিতা। অক্সফোর্ডশ্যায়ারের হেইথ্রোপ পার্ক রিসোর্টের বল রুমে ব্রিটেনের জনপ্রিয় উপস্থাপক উর্মি মাজহার, ফারহান মাসুদ, আমিন রাজা ও নাদিয়া আলীর মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনায়, ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েকশ অতিথি দিনভর গানে আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন।
বাংলাদেশের সংগীত, লোক ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ব্রিটেনে কাজ করছে সেলিব্রেশন অব ব্রিটিশ বাংলাদেশী কালচার।
বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয় মূল প্রতিযোগিতা। আয়োজনে অংশ নেয়া ২০জন প্রতিযোগীর মধ্য থেকে উপস্থিত অতিথিরা ডিজিটাল ভোটিং সিস্টেমের মাধ্যমে তাদের মতামত জানান। বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন প্রবাসী শিল্পী হিমাংশ গোস্বামী, আলাউর রহমান, বাংলাদেশ থেকে আগত সেলিম চৌধুরী ও আশিক। বিচারকরা গান শুনে তাদের মতামত দিয়েছেন কিন্তু তাদের হাতে কোন মার্ক ছিল না। শুধুমাত্র দর্শকদের ভোটেই প্রতিযোগীদের ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়।
২০জন থেকে দর্শকদের ভোটে নির্বাচিত হন ১০ সেমিফাইনালিস্ট, সেখান থেকে আবার ভোটের মাধ্যমে ৫জন নির্বাচিত হন ফাইনাল রাউন্ডের জন্য। পরে ৫জন থেকে দর্শক বেছে নেন তাদের প্রিয় শিল্পীকে। প্রত্যেক পর্বে গান গেয়ে দর্শকদের মন জয় করে চুড়ান্ড পর্বে আসতে হয়েছে প্রতিযোগীদের।
বাউল স¤্রাট শাহ আব্দুল করিমকে নিয়ে বাংলাদেশের বাইরে এত বড় পরিসরে কোন আয়োজন এর আগে হয়নি। তাছাড়া আনোয়ার চৌধুরী পেরুর অ্যাম্বাসেডর হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছেন, তার এই অর্জনকে বাংলাদেশী কমিউনিটির অংশ হিসেবে উদযাপন করতেই সংগঠনটি আব্দুল করিমের প্রিয় গানগুলো ইউরোপের জনপ্রিয় শিল্পীরা গেয়ে শোনান। সেখান থেকে দর্শকরা বেছে নিলেন ব্রিটেনের নতুন প্রজন্মের আব্দুল করিমের গানের সেরা শিল্পী বাউল শহিদকে। বিজয়ী শিল্পীর হাতে ১০ হাজার পাউন্ডের চেক তুলে দেন এর স্পন্সর কিফটন গ্রুপের সিরাজ চৌধুরী ও আল হারামাইন গ্রুপের মোহাম্মদ মাহাতাবুর রহমান। প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হয়েছেন জয়নাল ও দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন শাহ টুনু মিয়া।
প্রথম স্থান অর্জনকারী সহিত যিনি ব্রিটেনে বাউল সহিদ নামে পরিচিত তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, আমার সংগীত জীবন সার্থক হলো, দর্শকদের ভালোবাসার কাছে ঋণী হয়ে গেলাম, বাউল স¤্রাটের গান গাইবার মতো ক্ষমতা আমার নেই, সেই শিল্পী আমি হতে পারিনি, তবু চেষ্টা করে যাব এই ভালোবাসার দাম দেয়ার।
ইভেন্ট কো অর্ডিনেটর আব্দুল আজিজ বলেন, সফলভাবে আয়োজনটি সম্পন্ন করতে পেরে সত্যিই আমরা আনন্দিত। আগামীতে আরো ব্যাপক পরিসরে লালন উৎসব উদযাপনের প্রেরনা পেয়ে গেলাম।
বিচারক হিমাংশু গোস্বামী বলেন, আয়োজনটি আমার কাছে খুব অসাধারণ মনে হয়েছে, এখানে প্রতিযোগিতায় যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের সবাইকে আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি, সবাই ভালো গান গায়। আমার জন্য আলাদাভাবে নির্বাচন করাটা খুব কঠিন হতো। দর্শক শ্রোতারাও যে গান বোঝেন সহিদের বিজয়ী হওয়া তারই প্রমাণ।
শাহ আব্দুল করিমের গান, জীবন ও দর্শনের ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিকমানের প্রামাণ্য চলচ্চিত্র তৈরির পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে সেলিব্রেশন অব ব্রিটিশ বাংলাদেশি কালচার। আমন্ত্রিত অতিথি ও আয়োজকরা ছবি নির্মানের অর্থের যোগান দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। পাশাপাশি সিলেটে কালচারাল ইনস্টিটিউট নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
Category: Community news 1st page, Community UK, Scroll_Head_Line, ইউরোবিডি কমিউনিটি সংবাদ