নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী পালন
দেশের খবর: প্রয়াত জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে।এ উপলক্ষ্যে নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের কবরে পুস্পস্তবক অর্পন ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
রোববার সকাল সোয়া ১১টার দিকে হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন তার দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিদকে নিয়ে নুহাশ পল্লীতে আসেন। পরে তিনি সন্তানদের নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের কবর জিয়ারত করেন। এসময় হুমায়ূন ভক্তরা পুস্পস্তবক অর্পন ও দোয়ায় শরিক হন।
মেহের আফরোজ শাওন বলেন, আমি ও আমার দু’সন্তান কোন নির্দিষ্ট দিনে নুহাশ পল্লীতে আসি না। প্রত্যেক মাসে অন্তত তিনবার আসি। সারা বছরই আমরা তাকে স্বারণ করি। আজকের (১৯ জুলাই) জন্য আলাদা করে বলার কিছু নাই। গত সাত দিন ধরে বা প্রতি বছর ১৯ জুলাই আমি একটা প্রশ্নের সম্মুখিন হই, আমাদের কর্মসূচি কি? মৃত্যুবার্ষিকী নিয়ে আমি কোন কর্মসূচি করতে চাই না।
তিনি বলেন, আমার কাছে মৃত্যুবার্ষিকী একেবারেই পারিবারিক একটা সময়। হুমায়ূন আহমদের প্রিয় মানুষ তার বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে যা করতেন। তিনি ঘরোয়াভাবে কোরানখানি ও দোয়ামাহফিল করতেন, রোজার মাস থাকলে তার প্রিয় মানুষের নিয়ে, এতিম বাচ্চাদের নিয়ে ইফতার করতেন। এটা এই নূহাশ পল্লীল মাঠেই হতো।
হুমায়ূন আহমেদ তার প্রিয় মানুষটি চলে যাওয়ার দিন যেভাবে পালন করতেন আমিও আমার প্রিয় মানুষটির জন্য সেভোবেই করি প্রতিবছর। এবার ১৯ জুলাই ঈদের পরদিন হয়েছে, ঈদের দিন হবার সম্ভবনাও ছিল। সে জন্য আমরা সবাই মিলে আলাপ আলোচনা করে ১৩ জুলাই কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল করেছি। নূহাশ পল্লীর আশপাশের এতিমখানার এতিম বাচ্চারা আমাদের সাথে ইফতার করেছে।
তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদের ক্যান্সার হাসপাতাল করার স্বপ্ন ছিল। যাদের পরিবারের কেউ ক্যান্সার ভিকটিম হয়েছেন। যারা কাছ থেকে ক্যান্সসারের রোগী ধুকতে দেখেছেন, সেই প্রত্যেকটা পরিবারের স্বপ্ন বাংলাদেশে একটা বিশ্বমানের ক্যান্সার হাসপাতাল হোক। ওনার সঙ্গে আমরা যারা সম্পর্কিত ক্যান্সার হাসপাতালের স্বপ্নটা আমরা লালন করি। উনি যেভাবে বড় আকারে করতে চেয়েছেন । সেভাবে করার জন্য যে প্রিপারেশন দরকার, সেটা আমার একার নেই। আমার একার সে প্রিপারেশন হওয়া আমি মনে করি সম্ভব না। এ জন্য অনেক মানুষের একত্রিত হতে হবে। সেই মানুষগুলোকে একত্রিত করা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি এখনো স্বপ্ন দেখি এবং আশা রাখি সে স্বপ্নটা পূরণ হবে।
দুপুর পৌণে তিনটার দিকে হুমায়ূন আহমেদের ভাই ড. জাফর ইকবাল, ছোটভাই কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব এবং তিন বোন সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শহীদ, রোকসানা আহমেদসহ তাদের সন্তানরা নুহাশপল্লীতে যান এবং কবর জিয়ারত করেন।
এছাড়া দুপুরে ‘হিমু পরিবহণ’-এ করে রাজধানী শাহবাগ থেকে অর্ধশতাধিক ‘হিমু’ নুহাশ পল্লীতে পৌঁছেন। পরে তারা হুমায়ূন আহমেদের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পন করেন।
এদিকে সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে শত শত ভক্ত নুহাশপল্লীতে ভিড় জমাতে শুরু করেন। তাদের অনেকেই তার আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং প্রিয় লেখকের কবরে ফুল দিয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানান।
Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, দেশের খবর, শীর্ষ সংবাদ