• ৪ জ্যৈষ্ঠ ,১৪৩১,18 May ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

চিংড়ি রপ্তানি বন্ধে বিপাকে খুলনার ব্যবসায়ীরা

| জানুয়ারী 12, 2016 | 0 Comments

images (1) দেশের খবর: কাস্টমস জটিলতায় খুলনার হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ থাকায় রপ্তানিকারকরা বিপাকে পড়েছে। ইতোমধ্যেই অনেক প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়েছে। ফলে খুলনার মাছ কোম্পানিগুলোতে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের সিংহভাগ হিমায়িত চিংড়ি খুলনা অঞ্চল থেকে রপ্তানি হয়। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শর্তের কারণে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কার্টন ও এক্সেসরিজ সংগ্রহে টাকার পরিবর্তে ডলারের এলসি খোলার নির্দেশ জারি করে। যে কারণে গত ১৭ নভেম্বর থেকে খুলনাঞ্চল থেকে চিংড়ি রপ্তানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। আগে কার্টন ও এক্সেসরিজের জন্য স্থানীয় মুদ্রায় এলসি খোলা হলেও এখন ডলারে খোলার নির্দেশ জারি করায় জটিলতা সৃষ্টি হয়। যে কারণে একদিকে যেমন খুলনার মাছ কোম্পানিগুলো মাছ রপ্তানি করতে যেমন পারছে না, তেমনি অনেক কোম্পানি মাছ কেনাও বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। একই সঙ্গে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মাছ কেনা ও রপ্তানি বন্ধ থাকার ফলে কয়েকটি কোম্পানি শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না। বেতন দিতে না পারায় কোনো কোনো কোম্পানি শ্রমিক ছাঁটাইও শুরু করেছে। এতে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে খুলনার মাছ কোম্পানিগুলোতে। খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কাজি আমিনুল হক বলেন, চট্টগ্রামে স্থানীয় মুদ্রায় কার্টন ও এক্সেসরিজ কিনে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি করা হলেও খুলনার ক্ষেত্রে কাস্টমস জটিলতার পেছনে মহল বিশেষের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। বৈদেশিক মুদ্রায় কার্টন কেনার কোনো সুযোগ না থাকলেও কেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এমন ফরমান জারি করেছে সেটিও তার বোধগম্য নয়। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ খাতটি থেকে বৈদেশিক মুদ্রার আয় যেমন বন্ধ হয়ে যেতে পারে তেমনি মাছ কোম্পানিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর মাছ কোম্পানিগুলো বন্ধ হলে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হবে। সার্বিক বিষয় নিয়ে তিনি কাস্টমস কমিশনার আলামিন প্রামাণিকের সঙ্গে কথা বলেছেন উল্লেখ করে জানান, এনবিআরের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে দ্রত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। রপ্তানি প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলেও তিনি মনে করেন। তবে কাস্টমস্ কমিশনার আলামিন প্রামাণিকের নিজস্ব মোবাইল ও টেলিফোন নাম্বারে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস্ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, বিগত একমাস ধরে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি খাতে নিয়োজিত প্রক্রিয়াজাতকারী কারখানাগুলোর প্যাকেজিং দ্রব্যাদি সংগ্রহে জটিলতায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া খুলনাঞ্চল থেকে অনেক হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান সময়োত্তীর্ণের ফলে বেশকিছু রপ্তানি আদেশ বাতিল হওয়ায় এবং ব্যাংকের সুদ ও অন্যান্য ব্যয়ের ফলে বিপুল পরিমাণ লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে। অপরদিকে, মাছ কোম্পানিগুলোর এমন পরিস্থিতিতে গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যেই কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হয় সংশ্লি্লষ্ট বিভিন্ন মহলে। তাছাড়া যেখানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রপ্তানি খাতের মধ্যে মাছকে এক নাম্বারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সেখানে এ ধরনের সিদ্ধান্ত বা শর্ত কাদের ইঙ্গিতে হচ্ছে সেটিও খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এর মধ্যদিয়ে কোনো অপশক্তি ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে কিনা সেটিও দেখা হচ্ছে বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গোয়েন্দা সদস্য জানান। খুলনার মাছ কোম্পানিগুলোতে এমন অশনিসংকেতকে কিভাবে মোকাবেলা করা যায়। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস্ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মো. আব্দুল বাকীর নেতৃত্বে চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করার পাশাপাশি দু’দফায় অ্যাসোসিয়েশনের সভাকক্ষে বৈঠক হয়।

Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, দেশের খবর

About the Author ()

Leave a Reply