কেন্দ্রীয় নেতাদের ভূমিকায় হতাশ: যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি গঠনের দাবী
বিশ্বজুড়ে বাংলা: অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর বিভক্তির কারণে নিউইয়র্ক যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সফল হচ্ছে না। আর এই কমিটি গঠনে নেতৃত্বদানকারী কেন্দ্রীয় বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন বাধার সম্মুখীন হয়েছেন ফ্লোরিডায়। নিউজার্সী বিএনপি’র কমিটি গঠন নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। নিউইয়র্কের কমিটি গঠনে উদ্যোগ নেয়াই সম্ভব হয়নি। বরং নিউইয়র্কে মিলনের সমর্থনে আয়োজিত দু’টি সভা মিলন বিরোধীরা পন্ড করে দিয়েছেন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের দাবী সবার আগে মূল কমিটি (যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি) গঠন করা হোক। উল্লেখ্য, এহসানুল হক মিলন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি স্বেচ্ছায় যুক্তাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে বাংলাদেশে ফিরে যান এবং নিজ জেলা চাঁদপুর থেকে একাধিকবার বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯১-১৯৯৬ সময়কালীন সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শিক্ষা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
প্রায় চার বছর হতে চললো যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি নেই। সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট ও সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু নেতৃত্বাধীন কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার পর থেকেই যুক্তাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি গঠনের দাবী উঠে। আর এই দাবীর প্রেক্ষিতে দলের মধ্যে নেতৃত্বের কোন্দল মাথাচাড়া দেয়। শুরু হয় গ্রুপিং, পাল্টা গ্রুপিং। দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার, সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ও শরাফত হোসেন বাবু, সাবেক সহ সভাপতি সামসুল ইসলাম মজনু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দীন ও আকতার হোসেন বাদল প্রমুখের নেতৃত্বে ৩/৪ ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। এমনি পরিস্থিতিতে সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় ৪জন নেতা লন্ডনে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং কমিটি গঠনের দাবী জানান। কিন্তু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে শীর্ষ নেতারা ঐক্যমতে পৌছতে না পারায় সেসময় কমিটি গঠনের উদ্যোগ ভেস্তে যায়। আরো উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সভাপতি পদে অন্যতম দাবীদার ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার, আব্দুল লতিফ সম্রাট, সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস আহমেদ, শরাফত হোসেন বাবু আর সাধারণ সম্পাদক পদের অন্যতম দাবীদার সামসুল ইসলাম মজনু, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, হেলাল উদ্দীন, আকতার হোসেন বাদল প্রমুখ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কোন মূল কমিটি না করে সমন্বয় কমিটির তত্ত্বাবধানে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি’র কর্মকান্ড পরিচালনা করা। এর আগে সকল ষ্টেট কমিটি অর্থাৎ অঙ্গরাজ্যগুলোর কমিটি গঠন করা। আর এই উদ্যোগের দায়িত্ব দেয়া হয় কেন্দ্রীয় নেতা এহসানুল হক মিলনকে। কিন্তু দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী এই উদ্যোগ এবং সিদ্ধান্তের সাথে একমত নয়। তারা এর বিরোধীতা করে এক সভায় প্রকাশ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি’র রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় নেতা মিলনকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছেন। এনিয়ে দলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রেও খবরটি পৌছে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় অনেক নেতাও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিব্রতবোধ করছেন বলে ঢাকা থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে।
এদিকে চিকিৎসার জন্য নিউইয়র্কে অবস্থানরত কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকাসহ যুক্তরাষ্ট্র সফররত কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম, নাজিম উদ্দিন আলম বিভক্ত সভা-সমাবেশে যোগ দিলেও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি গঠনে তাদের কোন উদ্যোগ বা ভূমিকা না থাকায় প্রবাসের দলীয় নেতা-কর্মীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। ইতিমধ্যে খবর বেরিয়েছে যে কেন্দ্রীয় আরেক নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী, ডাকসু’র সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসলেও অজ্ঞাত কারণে প্রকাশ্যে আসছেন না বা দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে কোন মতবিনিময় বা সভায় যোগ দিচ্ছেন না। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি-তে হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। এতে শুধু দলীয় নেতা-কর্মীরাই নয়, প্রবাসে বিএনপির সমর্থক, শুভাকাঙ্খী আর পৃষ্ঠপোষকরাও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
Category: Scroll_Head_Line, বিশ্বজুড়ে বাংলা