সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ হাইকমিশনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
বিশ্বজুড়ে বাংলা: যথাযোগ্য ভাবগম্ভীর অনুষ্ঠানাদির মধ্য দিয়ে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ হাইকমিশনে আজ অমর একুশে এবং আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস পালিত হয়। চার শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথির উপস্থিতিতে অভিজাত সিঙ্গাপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।হাইকমিশনের কর্মকর্তাগণ এবং সিঙ্গাপুরে প্রবাসী বাংলাদেশি কম্যুনিটির উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা পতাকা অর্ধ-নমিত উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
পবিত্র কোরান তেলাওয়াতের পর ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি বাংলাদেশের অব্যাহত শান্তি, প্রগতি ও অগ্রগতির লক্ষ্যে বিশেষ মোনাজাত আদায় করা হয়।দিনভর আয়োজনের উল্লেখযোগ্য অংশের মধ্যে ছিল অমর একুশে শীর্ষক আলোচনা। শিক্ষাবিদ, গুণীজন, পেশাজীবী, গণ্যমান্যজনের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিরাও এতে অংশ নেন।
আলোচনায় মুখ্য প্রবন্ধ উপস্থাপনকারী ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফকরুল ইসলাম ২১ ফেব্রæয়ারি দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে পালনের প্রেক্ষিত হিসাবে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এবং তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। অধ্যাপক আলম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বীরত্বব্যঞ্জক ভ‚মিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, বাঙালি জাতির আশা-আকাঙ্খার প্রশ্নে তিনি ছিলেন এক অবিচল যোদ্ধা। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকের অর্থনৈতিক অত্যাচার ও সাংস্কৃতিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে জেগে ওঠার জন্য বাঙালি জাতির উদ্দেশে আহন জানান তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য বঙ্গবন্ধুর ডাক শুনেই আমরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম মহান মুক্তিযুদ্ধে। ছিনিয়ে আনতে পেরেছি সোনালি স্বাধীনতা। অধ্যাপক আলম একই সঙ্গে উল্লেখ করেন ১৯৯৯ সালে সেই নিবেদিতপ্রাণ মানুষগুলোর অবদানের কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও প্রেরণায় যাদের উদ্যোগে ইউনেসকো এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসস হিসাবে ঘোষণা করে।
সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাই কমিশনার তার বক্তব্যে ভাষাশহীদদের উদ্দেশ্যে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, ১৯৫২ সালে এ আন্দোলনের পর ১৯৭১ সাল অবধি বাঙালির গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিটি লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। হাই কমিশনার একইসঙ্গে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে সমুন্নত রাখা, জাতীয় সংস্কৃতির গৌরব বিদেশের মাটিতে আরও বেশি ছড়িয়ে দেয়া, একুশের প্রেরণায় দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করতে কঠোর পরিশ্রম অব্যাহত রাখার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহন জানান।
আয়োজনের প্রধান আকর্ষণ ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এখানে অমর একুশের উদ্দেশ্যে নিবেদিত অনেকগুলো গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা। বাংলা স্কুলের শিক্ষার্থী শিশুরা বর্ণাঢ্য পোশাকে দেশীয় নৃত্য পরিবেশন করে, বাংলায় কবিতা আবৃত্তি করে দর্শকশ্রোতাদের তাক লাগিয়ে দেন।সিঙ্গাপুরের সুশীল সমাজের সদস্যগণের পাশাপাশি গণমাধ্যম প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদগণ আয়োজনে যোগ দেন। এ ছাড়া সর্বস্তরের মানুষের মিলনমেলা হয়ে ওঠে অমর একুশে’র এ আয়োজন।
Category: Scroll_Head_Line, বিশ্বজুড়ে বাংলা