• ১৫ বৈশাখ ,১৪৩১,28 Apr ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

প্যারিস বন্ধু মরহুম শহীদুল আলম মানিকের সংক্ষিপ্ত জীবনী।

| মার্চ 21, 2022 | 0 Comments

ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটিতে নিজ কর্ম গুনে ধীরে ধীরে দলমত নির্বিশেষে সকলের বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন সবার প্রিয় শহীদুল আলম মানিক। সকলের প্রিয় পরোপকারী শহীদুল আলম মানিক কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষকে কাঁদিয়ে ২০ নভেম্বর ২০১৩ সালে মাত্র ৫৫ বছর বয়সে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী মিসেস ফাতেমা মেহরুন নেসা এবং দুই ছেলে সন্তান শহীদুল আকসিন(বড় ছেলে) ও শহীদুল আরনিক(ছোট ছেলে) সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। তাঁর মৃত্যুর পর কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষ ভালবেসে মরহুম শহীদুল আলম মানিককে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করে উপাধি দেন “প্যারিস বন্ধু”। ইউরোবিডি24নিউজের ৯ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ২১শে ফেব্রুয়ারি আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে “প্যারিস বন্ধু” মরহুম শহীদুল আলম মানিককে কমিউনিটি সেবায় আমৃত্যু বিশেষ অবদান রাখায় মরোণত্তর সম্মাননা জানানো হয়। আজ আমরা মরহুম শহীদুল আলম মানিকের সংক্ষিপ্ত জীবনী জানবো মিসেস প্যারিস বন্ধু ও তার সন্তানদের মুখে।

মিসেস “প্যারিস বন্ধু” ফাতেমা মেহরুন নেসা, জনাব শহীদুল আকসিন এবং জনাব শহীদুল আরনিক আপনাদের তিন জনকে ইউরোবিডি24নিউজের পক্ষ থেকে স্বাগতম জানাচ্ছি।

জ্বি ধন্যবাদ, আপনাকেও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আপনাদের সকলের প্রিয় “প্যারিস বন্ধু” কে নিয়ে স্মৃতিচারণ করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।

প্রথমেই জানতে চাই মরহুম শহীদুল আলম মানিক কখন এবং কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? তিনি ১৯৫৮ সালে ফেনী জেলার ফেনী সদর থানার ফরাদনগর ইউনিয়নের হাজী দুলহামিয়া মাতব্বর বাড়িতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বাবা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী জনাব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম এবং মা গৃহিণী মোসম্মৎ পেয়ারা বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।

শহীদুল আলম মানিকের পড়াশোনা সম্পর্কে কিছু বলুন? শহীদুল আলম মানিকের বাবা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে তার ছেলে বেলা ও প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রামের একটি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য তিনি ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার অন্তর্গত আহমদ পুর নূর নবী উচ্ছ বিদ্যালয় ভর্তি হন। ১৮৮১ সালে তিনি ঐ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জনের লক্ষে তিনি ঐতিহ্যবাহী ফেনী সরকারি কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৮৩ সালে কৃতিত্বের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করেন। পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের লক্ষে তিনি ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তি হন।

প্যারিস বন্ধু কবে কখন প্রথম প্যারিসে আসেন? তিনি ১৯৮৬ সালে প্রথম ফ্রান্সে আসেন।

শহীদুল আলম মানিকের কর্মজীবন সম্পর্কে কিছু বলুন? তিনি ফ্রান্সে আসার পর ফুলকে ভালোবেসে প্রথমে ফুলের ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ফ্রান্সের ইল দ্যো ফ্রঁসের ৭৮ জেলায় অবস্থিত একটি ফার্স্ট ফুডের দোকান গোল্ডেন বার্গারে কাজ নেন। তারপর নিজের পরিশ্রম, মেধা আর যোগ্যতা দিয়ে ১৯৯২ সালে ঐ গোল্ডেন বার্গার সপটি নিজ নামে কিনে নেন। এরপর শহীদুল আলম মানিককে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজের ভেতর সুপ্ত মেধা আর পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে শুরু করেন হাউজিং ব্যবসা। এই ব্যবসায় ব্যাপক উন্নতি সাধন করেন তিনি। পাশাপাশি নতুন নতুন রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠা করে রেস্টুরেন্টে ব্যবসার কলেবর বৃদ্ধি করেন। আইফেল টাওয়ারের পাশে মেট্রো স্টেশন ডুপ্লেক্সে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশী মালিকানায় রেস্টুরেন্ট “তাজ মহল”।

তিনি কত সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন? তিনি ১৯৯৪ সালে ফেনীর প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সিরাজুল হুদা এবং মিসেস রওশন আরা বেগমের ৩য় সন্তান মিসেস ফাতেমা মেহরুন নেসার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

প্যারিস বন্ধু খ্যাত শহীদুল আলম মানিকের কমিউনিটি সেবা সম্পর্কে কিছু বলুন? তিনি কমিউনিটির সেবায় ছিলেন এক নিবেদিত প্রাণ। যেকোন মানুষের বিপদে তিনি ছুটে যেতেন স্বাধ্যমতো সহযোগিতা করতেন। কমিউনিটির সকল মানুষকে নিয়ে একসাথে যেকোনো জাতীয় উৎসব উদযাপনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। সেই লক্ষে তিনি একুশ উদযাপন পরিষদ গঠন করে দলমত নির্বিশেষে কমিউনিটির সকল মানুষকে নিয়ে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারিতে আইফেল টাওয়ারের পাদদেশে মাতৃভাষা দিবস ও জাতীয় শহীদ দিবস পালন করতেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটির জন্য উবারভিলিয়ে বাংলাদেশী জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা চর্চা ধরে রাখতে প্যারিস ১৮ আরন্দিসমোতে মেট্রো স্টেশন মার্কাদের পাশে বাংলাদেশ ভিউ এসোসিয়েশনের মাধ্যমে প্রথম বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠায় স্ত্রী ফাতেমা মেহরুন নেসাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। ঐ স্কুলে প্যারিস বন্ধু শহীদুল আলম মানিকের সুযোগ্য সহধর্মিণী মিসেস ফাতেমা মেহরুন নেসা বাংলা বিভাগের প্রধান হিসবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।

Category: Uncategorized

About the Author ()

Leave a Reply