সিরিয়ার উপরে আঘাত রাষ্ট্রসঙ্ঘকেই কবর দেবে
আন্তর্জাতিক: সিরিয়ার উপরে সম্ভাব্য আঘাত নতুন করে হিংসার ঢেউ তুলতে সক্ষম ও এই বিরোধকে এই দেশের সীমান্তের বাইরে নিয়ে যেতে পারে. এই বিষয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর “দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস” সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রবন্ধে বলেছেন.
ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি ভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগনের ও রাজনীতিবিদদের প্রতি সম্বোধন করে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে রাশিয়ার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন. রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি লিখেছেন, – “বহু দেশ, রাজনৈতিক এবং রোমের পোপ সমেত ধর্মীয় নেতাদের তরফ থেকে খুবই কঠোর বিরোধ স্বত্ত্বেও, সিরিয়ার উপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে সম্ভাব্য আঘাতে বহু সংখ্যক নিরীহ মানুষের প্রাণ যাবে, এই বিরোধ বাড়বে ও তা সিরিয়ার সীমান্ত ছাড়িয়ে বাইরে ছড়িয়ে পড়ারও সম্ভাবনা রাখে”. রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদকে এড়িয়ে শক্তি প্রয়োগ করা হলে, ভ্লাদিমির পুতিনের মতে, এটা আরও বিপদের কারণ এই জন্যই হবে যে, এই কাঠামো জাতীয় লীগের রাস্তাই আবার করে ধরতে পারে, যা আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে বাস্তব কোন রকমের প্রভাব ফেলার মতো ক্ষমতা না থাকায় ধ্বসে পড়তে বাধ্য হয়েছিল.
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও সিরিয়ার বিরোধে শক্তি প্রয়োগের কোন ভবিষ্যত যে নেই, তা বোঝা শুরু হয়েছে. বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের সঞ্চয়ের উপরে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাশিয়ার উদ্যোগ আমেরিকার সমাজে ও বারাক ওবামার প্রশাসনে, যারা খুব একটা এই সামরিক সংঘর্ষে জড়াতে চায় নি, সেখানেও ইতিবাচক সাড়া তুলতে পেরেছে. তার ওপরে, নিজের প্রবন্ধে ভ্লাদিমির পুতিন যেমন উল্লেখ করেছেন যে, “কেউই সিরিয়াতে রাসায়নিক অস্ত্র যে ব্যবহার করা হয়েছে, সেই বাস্তব ঘটনাকে সন্দেহ করছে না. কিন্তু এখানে একটা ভিত্তি রয়েছে মনে করার যে, এটা সিরিয়ার সামরিক বাহিনী করে নি, বরং করেছে বিরোধী পক্ষই. লক্ষ্য – তাদের বাইরের ক্ষমতাশালী অভিভাবকদের হস্তক্ষেপ করাতে প্ররোচনা দেওয়া, যারা সেই ক্ষেত্রে বাস্তবে কাজ করতে পারতো, কট্টর পন্থীদেরই পক্ষে”.
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে সামরিক হস্তক্ষেপে নিরস্ত হওয়া ও শক্তি একত্র করে সিরিয়ার বিরোধের রাজনৈতিক সমাধানের খোঁজ করা শুধু নিকটপ্রাচ্যে বাড়তি ক্ষতিগ্রস্থদের সংখ্যাই কম করবে না, বরং এই দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সুবিধা করে দেবে, এই রকমের বিশ্বাস নিয়ে কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর সের্গেই রোগভ বলেছেন:
“একটা দ্রুত প্রগতির বিরল সুযোগের উদ্ভব হয়েছে – রাজনৈতিক ভাবেই সিরিয়ার সমস্যার সমাধান করার জন্য. আর এটা একেবারেই রুশ-মার্কিন সম্পর্ককে পাল্টে দিতে পারে, যদি আমরা একসাথে রাষ্ট্রসঙ্ঘের উদ্যোগে সিরিয়াতে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারকে বন্ধ করতে সক্ষম হই, তাহলে, আর পরবর্তী সময়ে সেগুলোকে একেবারে ধ্বংসও করে ফেলার ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়”.
বিশেষজ্ঞ যেমন বিশেষ করেই উল্লেখ করেছেন যে, খুবই বেশী রকমের সম্ভাবনা রয়েছে রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মিলিত অবস্থান যে তৈরী হতে পারে, তা নিয়ে. রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন সমাজের প্রতি সরাসরি আহ্বান আরও বেশী করেই ভাল পরিস্থিতি তৈরী করে দিতে পারে, যাতে একটা সমঝোতার সৃষ্টি হয়.
Category: 1stpage, আন্তর্জাতিক, ইউরো সংবাদ, ইউরো সংবাদ, শীর্ষ সংবাদ