মিসর ফের রণক্ষেত্র, বান কি মুনের উদ্বেগ
আন্তর্জাতিক: ফের রণক্ষেত্রে পরিণত হল মিসর। দেশটির রাজধানী কায়রো, আলেজান্দ্রিয়াসহ আরও কিছু নগরে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি, এর বিরোধী পক্ষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে ভারী গুলিবর্ষণ ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম জানিয়েছে, কায়রো ছাড়াও দেশটির পূর্বের গিজা, উত্তরের শরকিয়া ও বন্দর নগরী আলেজান্দ্রিয়ায় সংঘর্ষ ঘটেছে। নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের তাহরির স্কয়ার থেকে দূরে রাখতে ও বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কায়রোর কেন্দ্রে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এপি, এএফপি, আল জাজিরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুডের শত শত সমর্থক কায়রোর তাহরির স্কয়ারে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের দমনে নিরাপত্তাবাহিনী গুলি ছোঁড়ে ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে। কায়রোতে অবস্থানরত বিবিসি সংবাদদাতা জানাচ্ছেন যে, সেখানে তিনি ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ শুনেছেন। কয়েকটি হাসপাতাল সূত্র জানায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ব্রাদারহুডের পাঁচ জন সমর্থক নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভের সময় মোহাম্মদ মুরসির সমর্থনকারীরা মুরসি মুরসি বলে মিছিল করতে থাকে।
সেনাবাহিনী অবশ্য বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান বলে আখ্যা দিয়েছে। দেশটিতে গত জুলাইয়ে মুরসির ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে এ ধরনের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কয়েকশ’ মানুষ নিহত হয়েছে। গত আগস্টে নিরাপত্তা বাহিনী রাব্বা আল-আদাইয়া স্কয়ার থেকে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দিয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় আগৌজা শহরের উপকণ্ঠ বিক্ষোভকারীদের রাব্বা, রাব্বা ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল। গত দুই মাসে এক হাজারেরও বেশি মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য আটকাবস্থায় রয়েছেন।
মুরসিসহ ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ বদিইর বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। গত শুক্রবারের এ সংঘর্ষের আগে সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাহরির স্কয়ারসহ কায়রোর অন্যান্য মূলকেন্দ্রগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মুরসির সমর্থকরা জানিয়েছেন, ১৯৭৩ সালে ঘটা আরব-ইসরাইল যুদ্ধের ৪০তম বার্ষিকী সামনে রেখে তাদের আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে। বিভিন্ন খবরে জানা যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে যে কয়জন নিহত হয়েছেন তারা সবাই ব্রাদারহুড সমর্থক। গত জুলাইয়ে মোহাম্মদ মুরসির ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে এ ধরনের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কয়েকশ’ মানুষ নিহত হয়েছেন। গত দুই মাস ধরে এক হাজারেরও বেশি মুসলিম ব্রাদারহুড সদস্য আটক অবস্থায় রয়েছেন।
মিসরের প্রতিবাদী জনতার ওপর সেনাবাহিনীর নির্মম দমন অভিযানের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। গত শুক্রবার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুরসির সমর্থকদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে চারজন নিহত হওয়ার পর এ উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুন। ইখওয়ানুল মুসলিমিন আজ রোববার তাদের আসল বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ দিনের বিক্ষোভকে সামনে রেখে বান কি মুন বলেছেন, মিসরের বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে হবে। পক্ষান্তরে সরকারকে মত প্রকাশ ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখানোর পাশাপাশি সহিংস পন্থায় বিক্ষোভকারীদের দমন বন্ধ করতে হবে। মুনের মুখপাত্র মার্টিন নেসিরকি গত শুক্রবার নিউ ইয়র্কে এক বিবৃতি প্রকাশ করে জাতিসংঘ মহাসচিবের এ উদ্বেগের কথা জানান। তিনি বলেন, বান কি মুন মিসরের চলমান সহিংস পরিস্থিতির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
Category: 1stpage, আন্তর্জাতিক, ব্রেকিং নিউজ