দুই নেত্রীর ফোনালাপ প্রকাশ নিয়ে বিতর্ক
দেশের খবর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার ফোনালাপের পুরোটাই বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়৷ যা নিয়ে সৃষ্টি হয় রাজনৈতিক বিতর্কের৷ তথ্যমন্ত্রী অবশ্য বলেন, এই ফোনালাপ কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নয়৷
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সোমবার সচিবালয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দুই নেত্রীর ফোনালাপ অবশ্যই প্রকাশ করা উচিত৷ দেশের মানুষকে জানানো উচিত যে, এই রাজনৈতিক সংকট নিয়ে তাঁরা কি কথা বলেছেন৷ এর কয়েক ঘণ্টার মাথায় মধ্যরাতের ‘বুলেটিন’-এ দেশের দুইটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার পুরো টেলিফোন সংলাপ প্রচার করে৷ সকাল নাগাদ প্রায় ৪০ মিনিটের এই ফোনালাপের অডিও পৌঁছে যায় সবগুলি টিভি চ্যানেলে৷ ছাপা হয় পত্রিকাতেও৷ বলা বাহুল্য, মঙ্গলবার সব কিছু ছাপিয়ে তাঁদের এই ফোনালাপই আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয় সারা দেশে৷ অনলাইন নিউজ পোর্টাল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম – সবখানেই ৪০ মিনিটের অডিও ক্লিপটি ছড়িয়ে যায়৷
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুই নেত্রীর ফোনালাপ রেকর্ড এবং তা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের বহির্ভূত৷ এটি একটি গর্হিত কাজ৷ তিনি এর জন্য তথ্যমন্ত্রী এবং সরকারকে দায়ী করেন৷ তিনি বলেন, এই ফোনালাপ সংবাদমাধ্যমকে দিয়ে সরকার বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলতে চায়৷ সরকার সে সংলাপ নিয়ে আন্তরিক নয়, তারা যে সংলাপ চায় না, সেটাই প্রমাণ হয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলির কাছে এই ফোনালাপ সরবরাহের মধ্য দিয়ে৷ তাঁর কথায়, বিরোধী দল এখনও সংলাপ চায়৷ তবে মঙ্গলবারের হরতাল শেষ হলে সরকারকেই সংলাপের উদ্যোগ নিতে হবে৷
এদিকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু দাবি করেছেন যে, দুই নেত্রীর টেলিফোন সংলাপ কারা রেকর্ড করেছে এবং সংবাদমাধ্যমকে কারা সেটা দিয়েছে, তা তাঁর জানা নেই৷ তবে তিনি মনে করেন, দুই নেত্রীর ফোনালাপ দেশের মানুষের জানা অবশ্যই উচিত৷ এর কারণ, তাঁরা মূলত দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটএবং তার সমাধান নিয়ে কথা বলেছেন৷ এখানে গোপন এবং ব্যক্তিগত কোনো কথা থাকতে পারে না৷ তিনি বলেন, সরকার সংলাপ নিয়ে আন্তরিক৷ বরং বিএনপিই আন্তরিক নয়৷ তাই তারা হরতাল প্রত্যাহার তো করেইনি, প্রধানমন্ত্রীর সোমবারের আমন্ত্রণও গ্রহণ করেনি৷ তাই এখন তাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে৷ আর তারা যদি এই উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা নির্বাচনের ট্রেন মিস করবে৷
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি দুই নেত্রীর ফোনালাপ নিয়ে অপপ্রচার শুরু করেছিল৷ তারা বলার চেষ্টা করেছিল, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সংলাপ নয়, নৈশ ভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷ কিন্তু এখন পুরো টেলি-সংলাপ প্রকাশ হয়ে পড়ায়, কে কি বলেছেন তা দেশের মানুষ জানতে পারছেন৷ কার আচরণ কেমন, তাও বুঝতে পারছেন৷ বুঝতে পারছেন সংলাপ নিয়ে কে কতটুকু আন্তরিক৷
সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত দুই নেত্রীর দীর্ঘ ফোনালাপে হরতাল, সংলাপসহ নানা বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে৷ প্রাধান্য পেয়েছ ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা, মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধের বিচারসহ নানা বিষয়৷ জানা গেছে এ স সমস্ত বিষয় নিয়ে দুই নেত্রীর অবস্থানও৷ এই টেলি-সংলাপ কখনো শান্ত, কখনো বা দ্বন্দ্বমুখর৷
দুই তরফ থেকেই এই ফোনালাপ হয়েছিল মোবাইল ফোনের মাধ্যমে৷
Category: 1stpage, দেশের খবর, শীর্ষ সংবাদ