• ২৮ বৈশাখ ,১৪৩১,11 May ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

বিশ্ববিখ্যাত স্বয়ংক্রিয় বন্দুক একে-৪৭ এর নির্মাতা মিখাইল কালাশনিকভ প্রয়াত

| ডিসেম্বর 25, 2013 | 0 Comments

ইউরো সংবাদ: আজ জীবনের পঁচানব্বইতম বছরে পরলোকে গিয়েছেন গুলি করার অস্ত্র নির্মাণের এক বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিত্ব মিখাইল তিমোফিয়েভিচ কালাশনিকভ, বিশ্বের সবচেয়ে অধিক প্রচলিত স্বয়ংক্রিয় বন্দুকের স্রষ্টা. বিশ্বের একশটিরও বেশী দেশের সামরিক বাহিনীতে তাঁর নির্মিত “একে-৪৭” মডেলের কালাশনিকভ অস্ত্র আজ ব্যবহার করা হচ্ছে.

আজ কালাশনিকভের নাম বিশ্বের সর্বত্র পরিচিত. তিনি এক কিংবদন্তী পুরুষ, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মতো বহু রাষ্ট্রের বিজ্ঞান একাডেমী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে সম্মানিত সদস্য পদ দেওয়া হয়েছিল. বিংশ শতকের সবচেয়ে বিখ্যাত আবিষ্কারের মধ্যে তাঁর সৃষ্ট স্বয়ংক্রিয় বন্দুক রয়েছে.

মিখাইল কালাশনিকভ ১৯১৯ সালের ১০ই নভেম্বর এক কৃষকের পরিবারে অনেক ভাইবোনদের মধ্যে জন্মেছিলেন. ১৯৩৮ সালে তাঁকে সামরিক বাহিনীতে নেওয়া হয়েছিল ও তিনি ট্যাঙ্ক বাহিনীতে কাজ করতেন. সেখানেই তিনি নিজের আবিষ্কার করার ক্ষমতা দেখিয়েছিলেন. কালাশনিকভ তখন “টিটি” পিস্তলের জন্য বিশেষ ধরনের ব্যবস্থা তৈরী করেছিলেন, যা দিয়ে ট্যাঙ্কের মাথায় গর্ত দিয়ে পিস্তল থেকে গুলি করার সময়ে বেশী করে লক্ষ্যভেদ করা সম্ভব হয়েছিল.

মহান পিতৃভূমি রক্ষার যুদ্ধে তিনি ১৯৪১ সালে সামিল হয়েছিলেন আর অক্টোবর মাসে খুবই গুরুতর ভাবে আহত হয়েছিলেন. স্বাস্থ্যের কারণেই তিনি ছ’মাসের জন্য ছুটি পেয়েছিলেন, আর সেই সময়ে সিনিয়র সার্জেন্ট কালাশনিকভ নিজের পিস্তল-মেশিনগানের প্রথম মডেল তৈরী করেছিলেন. ১৯৪৪ সালে তিনি পরীক্ষামূলক ভাবে একটি অনেকগুলো গুলি ভরার ক্যারাবিন তৈরী করেছিলেন. যদিও সেই ক্যারাবিন সারিবদ্ধ ভাবে পরে বানানো হয় নি, তবুও তা অংশতঃ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র বানানোর জন্য “প্রোটোটাইপ” হতে পেরেছিল. ১৯৪৭ সালে পরীক্ষার সময়ে কালাশনিকভের অটোম্যাটিক বন্দুক দারুণভাবে সফল বলে প্রমাণিত হয়েছিল. নির্মাতা নিজেই উল্লেখ করেছিলেন যে, তিনি এই বন্দুক তাঁরই মত সাধারণ সেনার জন্যই তৈরী করেছেন.

এই অটোম্যাটিক রাইফেলের গঠনের বৈশিষ্ট্য হল তার ব্যবহারের সহজ উপায়, খুবই ভরসা করার মতো ও বহুদিন ধরে একটানা ব্যবহার করার মতো ক্ষমতা. আমাদের দেশের ও বাইরের দেশের সমস্ত বিশেষজ্ঞরাই স্বীকার করেছেন “একে-৪৭” বিংশ শতকের সেরা অস্ত্র বলেই. জনপ্রিয়তার জন্য এই রাইফেল “গিনিজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে” জায়গা পেয়েছে. বিশ্বে এই ধরনের অস্ত্র রয়েছে ১৫ কোটির চেয়েও বেশী.

মিখাইল কালাশনিকভের পক্ষে সম্ভব হয়েছিল রাশিয়ার অস্ত্রকে জাতীয় ব্র্যান্ডে পরিণত করার. “জাতীয় প্রতিরক্ষা” নামের জার্নালের প্রধান সম্পাদক ইগর করোতচেঙ্কোর মতে “কালাশনিকভ” সত্যই একটি সবচেয়ে বেশী জানা রুশী শব্দ.

মিখাইল কালাশনিকভ এক সারি নানা ধরনের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের স্রষ্টা ও নির্মানের ভিত্তি তৈরী করেছেন, যা বিশ্বে “কালাশনিকভের অটোম্যাটিক অস্ত্র” নামের ব্র্যান্ডে পরিচিত. যদিও বাস্তবে এগুলো প্রায় খান দশেক নানা রকমের অস্ত্র, যা তিনি নির্মাণ করেছেন. আর আজও রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত অস্ত্র সেই কালাশনিকভের স্বয়ংক্রিয় বন্দুক. তাঁর অবদান বিশাল রকমের – এই জাতীয় “আত্মজ ব্যক্তিত্ব”, রাশিয়ার গর্ব, এই কথাই বলেছেন ইগর করোতচেঙ্কো.

কালাশনিকভ ভিত্তি করে প্রায় দেড়শ রকমের নানা ধরনের অস্ত্র বানানো হয়েছে, তার গুলির সাইজ নানা রকমের, তার মধ্যে ছোট মেশিনগানও রয়েছে, আছে কার্বাইন ও “সাইগা” মার্কা মসৃণ নলওয়ালা বন্দুকও.

কর্মে আগ্রহী মিখাইল কালাশনিকভ এমনকি প্রবীণ বয়সেও কাজ করে গিয়েছেন. তিনি তাঁর জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ““ইঝমাশ” অস্ত্র নির্মাণ কনসার্নের” মুখ্য অস্ত্র নির্মাতা ছিলেন.

Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, ইউরো সংবাদ, ইউরো সংবাদ, শীর্ষ সংবাদ

About the Author ()

Leave a Reply