• ২১ বৈশাখ ,১৪৩১,04 May ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

লন্ডনে নামসর্বস্ব ইভেন্টসের নামে বাটপারি!

| জানুয়ারী 12, 2014 | 0 Comments

ইউরোবিডি কমিউনিটি সংবাদ: প্রবাসে বাংলাদেশকে প্রমোট করার মহতী এই কাজটি নিয়েই প্রচারণা চালিয়ে প্রতি বছর বেশ কয়েকটি ইভেন্টস করে বৃটেনে ও বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ইভেন্টস পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান।

তবে, গত কয়েক বছর ধরেই এই ইভেন্টস বাণিজ্যের সাথে যোগ হয়েছে আদম বাণিজ্য। নামসর্বস্ব ইভেন্টস প্রতিষ্ঠানগুলোই এগিয়ে আছ এই আদম বাণিজ্যের দৌড়। শুধু তাই নয়, এসব ইভেন্টসে যোগ দিয়ে সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের। নানা ধরণের আশ্বাস দিয়ে এসব ইভেন্টস কোম্পানীগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। বড় বড় হলে অনুষ্ঠান আয়োজন করলেও প্রচার প্রচারণার অভাবে মেলায় আসে মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন।

এ বছরের মাঝামাঝি স্বয়ং বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে উদ্যোগে শেষ হয়ে যায় ইকমার্স ফেয়ার। তিনদিনের পুরো এই অনুষ্ঠানের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী আসলেও আসেনি কমিউনিটির কেউই। বাঙালী অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডন থেকে অনুষ্ঠানস্থল অনেক দূরে হওয়ায় দর্শকশূণ্যতার মাঝেই শেষ করতে হয়েছিল এই আয়োজনটি।

এতো গেল সরকারী আয়োজকদের কথা। বেসরকারীভাবে গজে উঠা ইভেন্টস কোম্পানীগুলো অবস্থা একবার ভেবে দেখুন।

এক সময়ের মডেল হিসেবে নিজেকে জাহির করে গড়ে তুলেন ইফোরইভেন্টস। তিনি আর কেউ নন, কারো কারো কাছে ইমন নামে কিংবা কারো কারো কাছে খান নামেই নিজেকেই উপস্থাপন করেন। যাতে কোন সমস্যা হলেই নাম পাল্টে সাধু সাজতে পারেন। নামের মতোই তার মোবাইলের সিম পাল্টে অহরহ।

লন্ডনের আইকন হিসেবে পরিচিত লন্ডন আই দিয়ে প্রচারণা চালালেও গত ২০১১ সালের ১৬-১৭ জুলাই লন্ডন সামার ফেয়ার এর নামে দুইদিন ব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়েছিল পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলিতে। তবে, সেখানে কোন লোকজন না আসায় ইমন খানও স্টলদাতাদের ভয়ে হলেও যায় নি।

গত ২০১২ সালে দুই দিনব্যাপী ইসলামিক শরীয়াহভিত্তিক আবাসন নিয়ে চলে বেশ প্রতারণা। শুধু ‘ইসলামিক’ শব্দটা ব্যবহার করেই বেশ কিছু কোম্পানীকে মেলায় অংশগ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে লন্ডন আনলেও পুরো অনুষ্ঠানটিই ছিল একটি হোটেলে বার ও ড্যান্সফোরে। সেখানেও সেই কথিত মডেল ইমন খানের পরিবারের লোকজন ও স্টলদাতারা ছাড়া আর কাউকেই চোখে পড়েনি। লোকসংকটের কারণে ঐ মেলার উদ্বোধন করতেও দেরী হয় তিন ঘন্টা।

অলিম্পিককেও টার্গেট বানাতে ভুল করেন নি তিনি। পুরো বৃটেনবাসী যেখানে ব্যস্ত অলিম্পিক আয়োজনে, ইমন খান সেখানে ব্যস্ত ছিলেন আদম বাণিজ্য করে পকেট ভারি করতে। ২০১২ সালেও নতুন করে প্রচারণা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত মেগা ফেয়ার করেন নি। ১৬ ও ১৭ জুন এই দুইদিনব্যাপী মেগা ফেয়ার ইন অলিম্পিক টাউন নামে স্টার্টফোড টাউন হলে ইভেন্টসে অংশগ্রহণের জন্য স্টল বরাদ্দ দিয়ে বেশ কিছু লোককে ভিসা করিয়ে লন্ডন নিয়ে আসলেও তা আর আয়োজন করা হয় নি। জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আখি আলমগীরও সেই মেগা ফেয়ারে আসার কথা ছিল। তবে, বৃটেনের জনপ্রিয় চ্যানেল বাংলা টিভিও একই দিন আখিঁ আলমগীরকে দিয়ে পূর্ব লন্ডনের টক্সি হলে কনসার্ট এর আয়োজন করেন। তখন, কমিউনিটির অনেকই প্রশ্ন করেছিল – আখিঁ আলমগীর কোন অনুষ্ঠানের জন্য লন্ডনে আসছেন? শেষতক ভেস্তে যায় ইমন খানের পুরো অনুষ্ঠান।

এই ব্যাপারে বাংলাদেশে আখিঁ আলমগীর এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ইমন খান কিংবা ইফোরইভেন্টস নামে কোন কোম্পানীর সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই।

শুধু ইভেন্টস আয়োজন করেই ক্ষান্ত হন নি এই মডেল। বাংলাদেশে জায়গা জমির দালালীও করছেন লন্ডনে বেশ দেদারচ্ছে। ইফোর বিজনেস গ্রুপ নামের কোন অস্তিৃত্ব বৃটেনের কোম্পানী হাউজেও পাওয়া যায়নি। জায়গা জমি কেনা বেচার সেই লিফলেটে আনোয়ার হোসাইন ও রুশনা আলী নামের দুই ব্যক্তির বক্তব্য ব্যবহার করা হলেও তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত কোন তথ্যই দেওয়া হয়নি।

নিজের এই বাণিজ্যকে আরো বড় আকারে রূপ দিতে যৌথ ইভেন্ট ম্যানজেম্যান্ট চুক্তি করেন ঢাকার প্রপার্টি প্রমো ইভেন্ট এন্ড হোল্ডিংস লি এর সাথে। তিন বছরের জন্য এই চুক্তি থাকলেও আর্থিক লেনদেন নিয়ে ইমন খানের অসংগতির কারণেই তা এক বছরও যায়নি।

প্রপার্টি প্রমো ইভেন্ট এন্ড হোল্ডিংস লি: এর সাথে লন্ডনে মেলা আয়োজনের জন্য ইফোরইভেন্টস এর সাথে প্রপার্টি প্রমোর চুক্তি হয়েছিল। তবে, লন্ডনে ফেয়ার আয়োজন করলেও ইফোরইভেন্টস এর দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে তা সফল হয়নি।

সর্বশেষ গত ৩ ও ৪ ডিসেম্বর পূর্ব লন্ডনে ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড কনফারেন্স সেন্টারে দুই দিন ব্যপী বাংলাদেশ এক্সপো ২০১৩ আয়োজন করেন। আর এতে মূল স্পন্সর ছিল বাংলাদেশের বেসরকারী মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড।

আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের ব্যাপক সম্ভাবনা উন্মোচনের উদ্দেশ্যে এই ইভেন্টস আয়োজন করলেও কতটা সম্ভাবনা সৃষ্টি করে দিয়েছিল তাই রহস্য হয়ে দাড়িয়েছে কমিউনিটির অনেকের কাছে। পুরো দুইদিনের মেলা মিলিয়ে শতাধিক মানুষও অংশগ্রহণ করেন। তবে, এই দিকে এই মেলাকে নিয়ে রবির আশাও ছিল অনেক।

মেলা শুরুর আগে রবি‘র প্রধান বিপণন কর্মকর্তা প্রদীপ শ্রীবাস্তব বলেছিলেন, মেলায় আামদের ভালৈা পণ্য ও সেবাগুলো প্রর্দশন করা হবে। এটি বাংলাদেশের জণ্য আন্তর্জাতিক দর্শকদের কাছে নিজেদের তুলে ধরার একটি বড় প্ল্যাটফর্ম।

ইউকেবিডিনিউজ এর অনুসন্ধানে জানা যায়, এক সময়ের সহপাঠী রবির এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার যোগসাজশেই বিশাল অংকের স্পন্সর হাতিয়ে নেয় কথিত এই মডেল ইমন খান।

ঢাকার খ্যাতনামা একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানী গত ২০১১ সালে এসেছিল লন্ডন সামার ফেয়ারে। তবে, বেশ আশা নিয়েও লন্ডন আসলেও যেতে হয়েছিল হতাশ হয়ে। দর্শকশূণ্যতার কারণে সেসময় কোন কেনাবেচাও হয়নি বলে ইউকেবিডিনিউজকে জানান ঐ প্রতিষ্টানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
সে সময়ে চট্টগ্রামের খ্যাতনামা আরএফ বিল্ডার্সের স্টলে গিয়েও দর্শকশূণ্যতার কারণে স্টলে কেউই ছিল না। জানা যায়, ঐ ফেয়ার কেউই আসে নি বলে আরএফ বিল্ডার্সের প্রতিনিধি সকালে কিছুক্ষণ থেকেই চলে যায়।

Category: Community UK, Scroll_Head_Line, ইউরোবিডি কমিউনিটি সংবাদ

About the Author ()

Leave a Reply