আটলান্টায় বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত
বিশ্বজুড়ে বাংলা: বাঙালির হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে লালিত নানা পার্বণের মধ্যে গ্রামের ঘরে ঘরে শীতের পিঠা খাওয়া ও আপ্যায়ন করার আনন্দময় পর্বটি অন্যতম। আর বংশ-পরাম্পয়ার এই সংস্কৃতিটি এখনও বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে ও শহরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে চালু রয়েছে। শহরগুলিতে আজকাল পিঠার তৈরি ও উপভোগের লক্ষে মহা সমারোহে উৎসবমুখর সম্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। প্রবাসেও এই ঐতিহ্যগত চর্চাটিকে অব্যাহত রাখতে শীতের হাড় কাঁপানো আবহাওয়ার মাঝেও শীতকালীন উৎসবের আয়োজন করছে বাংলাদেশি কমিউনিটিগুলো।
জর্জিয়া রাজ্যের আটলান্টাতেও এইরকম এক জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন দেখা গেলো গত ৩ জানুয়ারি রোববার স্থানীয় বার্কমার হাই স্কুল মিলনায়তনে।
আর এটির আয়োজক ছিল যৌথভাবে বাংলাদেশি আমেরিকান এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএএজি) ও আটলান্টা কালচারাল সোসাইটি (আকাস)।
দুপুর দুইটা থেকে শুরু হওয়া এই পিঠা মেলা ও মিনা বাজারটি ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে অগনিত অংশগ্রহণকারীদের ভিড়ে সম্মিলনী উৎসবটি এক অভাবনীয় জনারণ্যে পরিনত হয়।
প্রবাসের মাটিতে বাংলাদেশের ভিন্ন স্বাদের প্রায় ৪০ ধরনের পিঠার সমাহার ছিল এই পিঠা উৎসবে। অনুষ্ঠানে পিঠা নির্মাণ শিল্পীদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসা পিঠাগুলি যখন বিশাল টেবিলের ওপর সারিবদ্ধভাবে সাজানো হয়, তখন আবাহমান বাংলার দীর্ঘদিনের ধরে রাখা এই ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির পর্বটি স্বদেশের এক অভূতপূর্ব প্রতিচ্ছবি প্রতিবিম্বিত হয়ে ওঠে গোটা মিলনায়তন জুড়ে। অংশগ্রহণকারী পিঠা শিল্পীদের মধ্যে পরে এক আকর্ষণীয় রাফেল ড্র আয়োজনের মাধ্যমে দুইটি বিভাগে বিজয়ীদেরকে পুরস্কৃত করা হয়।
আটলান্টার স্বনামধন্যা আবৃত্তিকার জাকিয়া তওফিকের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অনারম্বর গানের আসরটি গোটা উৎসবকে আরও প্রাণময় করে তোলে। এসময় সংগীত পরিবেশন করেন রোমেল হোসেন খান, গাইডেন হকিন্স, তৃষা, হোসনে আরা বিন্দু, দীপঙ্কর দত্ত, চন্দ্র শেখর দত্ত, মহসিন, সুমন প্রমুখ।
এর আগে এক আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী পর্বে বাংলাদেশি আমেরিকান এ্যাসোসিয়েশন অব জর্জিয়া ও আটলান্টা কালচারাল সোসাইটির পক্ষে দুই সভাপতি যথাক্রমে জসিম উদ্দিন ও এম মওলা দিলু শুভেচ্ছা বক্তব্যে এই সুন্দর আয়োজনটিকে সফল করে তোলার জন্যে সংগঠকসহ সকল অংশগ্রহণকারীকে ধন্যবাদ জানান এবং বাঙালির এই ঐতিহ্যবাহী পিঠা তৈরি ও পিঠা আস্বাদের সংস্কৃতিকে প্রবাসে নতুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরার আহবান জানান।
মেলার সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন ডিউক খান, নাহিদুল খান সাহেল, আরিফ আহমেদ, মোহাম্মদ লদী, মোহাম্মদ রহমান আজাদ, সজল খান, মামুন শরীফ, আজিজুল হাকিম, সোহেল আহমেদ প্রমুখ।
মেলার মুল আকর্ষন পিঠার পাশাপাশি আয়োজিত মিনা বাজারে বাঙালির প্রিয় নানা পোশাক, শাড়ি, সালোয়ার, কামিজ, পাঞ্জাবীসহ হরেক রকমের দেশিও সামগ্রির সমাহারে প্রবাসীদের বিকি কিনি ছিল লক্ষ করার মতো। মেলায় আয়োজক গোষ্ঠী বরাবরের মত এবারও আমন্ত্রিত সকলকে বিনা মুল্যে পিঠা ও পরে নৈশ ভোজে আপ্যায়িত করে।
Category: Scroll_Head_Line, বিশ্বজুড়ে বাংলা