• ৭ অগ্রহায়ণ ,১৪৩১,21 Nov ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

ব্রেক্সিট চুক্তিতে অনুমোদন দিল ইইউ

| নভেম্বর 26, 2018 | 0 Comments

brexitইউরো সংবাদ:  যুক্তরাজ্য:

যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিচ্ছেদ চুক্তি অনুমোদন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আজ রোববার ব্রাসেলসে ইইউর বিশেষ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর সর্বসম্মতিক্রমে চুক্তিটি পাস হয় বলে এক টুইট বার্তায় জানান ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ প্রায় ৪৬ বছরের সম্পর্ক গুটিয়ে নিতে সম্মত হলো উভয় পক্ষ। সেই সঙ্গে বিচ্ছেদ সমঝোতা নিয়ে দীর্ঘ প্রায় দুই বছরের নানা বিতর্ক ও উত্তেজনার আপাত-অবসান হলো।

তবে এই চুক্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে গৃহবিবাদ এখনো তুঙ্গে। যুক্তরাজ্য ও ইইউ পার্লামেন্টের অনুমোদন সাপেক্ষে চুক্তিটি কার্যকর হবে। ইইউ চুক্তি নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে ব্রিটিশ এমপিরা চুক্তিটি অনুমোদন করেন কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

প্রায় ৮০০ পৃষ্ঠার এই চুক্তিতে বিচ্ছেদের শর্তগুলো নির্ধারণের পাশাপাশি দুই পক্ষের ভবিষ্যৎ বাণিজ্য ও অন্যান্য আদান-প্রদানের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই বিষয়ে একটি রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে।

ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে স্পেনের আপত্তি ছিল। তবে গতকাল শনিবার রাতেই ডোনাল্ড টাস্ক আভাস দেন, বিনা আপত্তিতে এটি পাস হবে। রোববার আলোচনার জন্য দুই ঘণ্টা সময় নির্ধারিত ছিল। শেষ পর্যন্ত এক ঘণ্টারও কম সময়ে চুক্তি পাস করে সম্মেলন শেষ হয়।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন, যুক্তরাজ্যের চলে যাওয়া ইউরোপের জন্য গভীর মর্মবেদনার। ইইউ নেতারা মনে করেন, সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ভালো চুক্তিতে তাঁরা সম্মত হয়েছেন। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট যদি এ চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে এবং নতুন করে সমঝোতার চেষ্টা চালায়, সে ক্ষেত্রেও আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেন ইইউ নেতারা।

এদিকে যুক্তরাজ্যে এই চুক্তি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। সরকারি কিংবা বিরোধী, বিচ্ছেদপন্থী কিংবা বিচ্ছেদবিরোধী—সব পক্ষ থেকেই চুক্তির সমালোচনা অব্যাহত আছে। সমালোচকেরা বলছেন, এটা না বিচ্ছেদ, না সঙ্গে থাকা (হাফ ইন, হাফ আউট)। এই চুক্তি যুক্তরাজ্যকে ইইউর অধীন করে রাখবে বলে তাঁদের অভিযোগ। বিচ্ছেদপন্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এই চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক ভুল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। লেবার দল বলছে, এই চুক্তি যুক্তরাজ্যের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ। কট্টর বিচ্ছেদপন্থী নাইজেল ফারাজ বলেছেন, এমন চুক্তির চাইতে চুক্তিহীন বিচ্ছেদই ভালো হবে।

ক্ষমতাসীন দলের অন্তত ৯১ জন এমপি এই চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন বলে আলোচনা আছে। সরকারের অংশীদার ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টিও (ডিইউপি) বলছে, তারা চুক্তিতে সমর্থন দেবে না। এমনকি থেরেসা মের সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে কি না, সেই বিষয়টিও পুনর্বিবেচনা করবে।

তবে থেরেসা মে এই চুক্তির প্রতি সমর্থন আদায়ে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। বারবার রেডিও-টেলিভিশনে হাজির হয়ে জনগণের প্রশ্নের সরাসরি জবাব দিচ্ছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক-টুইটারেও চুক্তির পক্ষে জোর প্রচার চালানো হচ্ছে। গতকাল শনিবার তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখে চুক্তি সমর্থনের আহ্বান জানান। অন্যদিকে স্কটল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নিকোলা স্টারজন প্রধানমন্ত্রীর সেই চিঠির বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, চুক্তি সম্পাদনে প্রধানমন্ত্রী নিজের প্রতিশ্রুতিগুলোও রক্ষা করেননি।

১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যাডওয়ার্ড হিথ ‘দ্য ইউরোপিয়ান কমিউনিটিস অ্যাক্ট’ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এক ঐতিহাসিক সম্পর্কের সূচনা করেছিলেন, যার পরিবর্তিত রূপ ২৮ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এই জোটে পরিবেশ সুরক্ষা থেকে খাদ্য নিরাপত্তা কিংবা বাণিজ্য ও নাগরিক অধিকার সমান নিয়মে চলে।

২০১৬ সালে এক গণভোটে যুক্তরাজ্যের মানুষ ইইউ থেকে বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দেন। সেই রায় কার্যকর করতেই ব্রেক্সিট চুক্তি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে চুক্তিটি পাস না হলে কয়েকটি বিকল্প পরিস্থিতির কথা বলা হচ্ছে। এগুলো হলো—পুনরায় সমঝোতার চেষ্টা, চুক্তি ছাড়াই বিচ্ছেদ, পুনরায় গণভোট কিংবা যুক্তরাজ্যে মধ্যবর্তী নির্বাচন।

Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, আন্তর্জাতিক, ইউরো সংবাদ, ইউরো সংবাদ, ইউরো-সংবাদ -UK, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাজ্য, শীর্ষ সংবাদ

About the Author ()

Leave a Reply