মাত্র ৩৩ হাজার টাকায় কর্মী যাবেন মালয়েশিয়ায়
দেশের খবর : সরকারিভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার খরচ আরও অন্তত সাড়ে ছয় হাজার টাকা কমছে। সরকার ৪০ হাজার টাকা খরচ নির্ধারণ করলেও বিমানভাড়া কমে যাওয়ায় এখন ৩৩ হাজার টাকায় একজন কর্মী বিদেশে যেতে পারবেন।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা বলছেন, ইতিমধ্যে যাঁদের কাছ থেকে সরকার ৪০ হাজার টাকা নিয়েছে, তাঁদের বাড়তি টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে মালয়েশিয়া থেকে ২০০ জনের ভিসা এসেছে। তাঁদের সবকিছু চূড়ান্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ঢাকায় মালয়েশিয়ার দূতাবাস থেকে ১৬০ জনের ভিসা সংগ্রহ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ২৫ এপ্রিল প্রথম ফ্লাইটে ৭০ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় যাবেন। এরপর ২৭ এপ্রিল এবং পরে বাকিরা যাবেন।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জাফর আহমেদ খান বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, আমাদের কাজ ব্যবসা করা নয়। আমাদের কাজ কর্মীদের স্বার্থ দেখা। যেহেতু বিমানভাড়া কমে গেছে, সেহেতু খরচ এখন সাড়ে ছয় হাজার টাকা কমে যাবে। আমাদের সবকিছু চূড়ান্ত। আশা করছি, চলতি সপ্তাহ থেকেই কর্মীরা মালয়েশিয়ায় যাওয়া শুরু করবেন।’
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারিভাবে প্ল্যান্টেশন (বনায়ন) খাতে মালয়েশিয়ায় কর্মী যেতে এর আগে জনপ্রতি ৩৯ হাজার ৫০০ টাকা খরচ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এর মধ্যে এক পথের বিমানভাড়া বাবদ ৩১ হাজার, স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সাড়ে তিন হাজার, কল্যাণ ফি বাবদ ২৫০, নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের জন্য ৩০০, ভিসা ফি এক হাজার ১০০, সার্ভিস চার্জ দুই হাজার, আয়কর ২০০ এবং প্রশিক্ষণ বাবদ এক হাজার টাকা নেওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী কর্মীদের কাছ থেকে প্রথমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণ বাবদ সাড়ে চার হাজার টাকা এবং পরে আরও ৩৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়।
কিন্তু পরে বিমানভাড়া এবং সরকারি সার্ভিস চার্জ ও আনুষঙ্গিক খরচ কমে যাওয়ায় সব মিলিয়ে ছয় হাজারের কিছু বেশি টাকা খরচ কমে গেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে বনায়ন খাতে যে ১০ হাজার কর্মী নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা সবাই এই সুবিধা পাবেন।
বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক সেলিম রেজা গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কর্মীদের কাছ থেকে মোট ৩৯ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছিলাম। এর মধ্যে বিমানভাড়া ধরা হয়ছিল ৩১ হাজার টাকা। কিন্তু বিমানভাড়া এখন কমে ২৩ হাজার ৫৭৮ টাকা হয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে এখন কর্মীদের যাওয়ার খরচ পড়বে মাত্র ৩৩ হাজার ১৭৮ টাকা। তাই আমরা কর্মীদের ছয় হাজার ৩২২ টাকা করে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা কর্মীদের সেটি জানিয়েও দিয়েছি।’
মালয়েশিয়ায় বর্তমানে ছয় লাখ থেকে সাত লাখ বিদেশি শ্রমিক রয়েছেন। তবে ২০০৯ সালের মার্চে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল দেশটি। দীর্ঘ কূটনৈতিক যোগাযোগের পর এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সরকারিভাবে কর্মী নিতে রাজি হয় দেশটি। গত বছরের ২৬ নভেম্বর এ ব্যাপারে দুই দেশের সরকারের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়। ৩০ ডিসেম্বর প্রথম দফায় আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ হাজার কর্মী নেওয়ার জন্য চাহিদাপত্র পাঠায় মালয়েশিয়া।
গত ১৩ থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারিভাবে কর্মী নেওয়ার জন্য নিবন্ধন চলে। সারা দেশে সাড়ে ১৪ লাখ মানুষ নিবন্ধন করেছেন। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম দফায় ৩৬ হাজার ৩৮ জন নির্বাচিত হন। পরে তাঁদের মধ্য থেকে লটারিতে ১১ হাজার ৭৫৮ জনকে প্রথম দফায় পাঠানোর জন্য নির্বাচিত করা হয়।
Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, দেশের খবর