ড. শিরিন শারমীনই সম্ভাব্য স্পিকার
দেশের খবর: এডভোকেট আবদুল হামিদ দেশের ২০তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই কে হচ্ছেন স্পিকার- এ নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। সরকার চমক দিতে দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোন একজন নারীকে স্পিকার পদে মনোনয়ন দিতে পারেন। সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে এমনটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রথম নারী স্পিকার হওয়ার দৌড়ে এ অবস্থায় এগিয়ে আছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী। সরকারের একাধিক সূত্র এমনটাই নিশ্চিত করেছে। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত স্পিকারের দায়িত্বে থাকা শওকত আলীকে প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেয়া হতে পারে। ইতিমধ্যে ড. শিরিন শারমীনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েক দফা আলোচনা করেছেন। স্পিকার পদে তার কোন আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে স্পিকার পদে শিরিন শারমীনকে নিয়োগ দেয়া নিয়ে পরামর্শ করেন। শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে তার সিদ্ধান্ত সঠিক বলে মতামত দেন। সরকারদলীয় কয়েক নেতা জানান, ড. শিরিন শারমীনকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বেবী মওদুদ বলেন, আগামীতে স্পিকার হচ্ছেন একজন নারী। তবে তার নামটা এখনই বলা যাবে না। এদিকে রোববার সংসদ সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে ২৪শে এপ্রিলের পর স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার পদে মনোনয়ন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওইদিন আওয়ামী লীগ দলীয় এক এমপি স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুললে প্রধানমন্ত্রী তাকে থামিয়ে দেন। তিনি বলেন, আজ কেবল প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। একজন এমপি হিসেবে তার জানা প্রয়োজন এর মধ্যে অন্য কোন বিষয় উত্থাপন করা ঠিক নয়। এদিকে স্পিকার পদে ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী চূড়ান্ত হলে ডেপুটি স্পিকার পদ নিয়ে কিছুটা জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে সংসদ সচিবালয়ে নানা ধরনের গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। বলা হচ্ছে, পদত্যাগ করতে পারেন ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী। তার কয়েক জন ঘনিষ্ঠ সহকর্মী জানিয়েছেন, শওকত আলীকে স্পিকার পদে মনোনয়ন না দিলে বিষয়টি তার জন্য মর্যাদার হানি হয়। এ জন্য হয়তো তিনি ডেপুটি স্পিকারের পদ থেকে পদত্যাগ করতে পারেন। ওদিকে সরকারদলীয় কয়েক এমপি জানান, ডেপুটি স্পিকার হিসেবে শওকত আলী যথেষ্ট অভিজ্ঞ ও যোগ্য। তবে শারীরিকভাবে তিনি বেশ অসুস্থ। বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের শেষ দিকে। সংবিধান অনুযায়ী প্রতি দুই মাস পরপর সংসদ অধিবেশন আহ্বান করা হয়। এ হিসেবে আরও চারটি অধিবেশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাজেট অধিবেশন। তাই অসুস্থতার কারণে ডেপুটি স্পিকার হয়তো এত চাপ নিতে পারবেন না। এ ধরনের শঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্পিকার পদে মনোনয়ন দিতে চান না। তাকে সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেয়া হতে পারে।
প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদ অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গতকাল নির্বাচন কমিশন তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেয়। আগামীকাল সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে দেশের ২০তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি শপথ নেবেন। এর আগে তিনি স্পিকার ও সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। এরপরই শূন্য হবে স্পিকারের পদ।
Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, দেশের খবর