“ফ্রান্সে ব্যবসায়ের নামে প্রতারণার ফাঁদ!”-শিরোনামে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ও আমাদেরসময় এর সংবাদ প্রকাশ
কমিউনিটি সংবাদ: বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এবং আমাদের সময় পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে “ফ্রান্সে ব্যবসায়ের নামে প্রতারণার ফাঁদ!”-শিরোনামে তথ্য সমৃদ্ধ চাঞ্চল্যকর সংবাদ প্রকাশ করা হয়।যা নিয়ে ইতিমধ্যে ফ্রান্স বাংলা কমিউনিটিতে ব্যাপক জলপনা কল্পনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এর বরাত দিয়ে সংবাদটি নিচে হুবহু ছাপা হল:
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম: ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে কয়েক বছর যাবত ব্যবসার ফাঁদ পেতে কতিপয় প্রতারক দোকান করার নামে প্রবাসী ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে হাজার হাজার ইউরো হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, বাগেরহাট মোড়েলগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা বর্তমানে প্যারিস প্রবাসী এমদাদুল হক স্বপন প্যারিসে প্রবাসীদের প্রলোভন দেখিয়ে ব্যবসায়ে উদ্ধুদ্ধ করেন। বিভিন্ন সময়ে প্যারিসে আসা নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের বাসা কেনাবেচা এবং ভাড়া দেওয়ার নাম করে দুপক্ষের আগোচরে হাজার হাজার ইউরো আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে।
ঘটনার শুরু ৩ বছর পূর্বে ‘যমুনা বসুন্ধরা আবাসিক প্লট’ সমিতির নাম করে ১১জন প্রবাসীর কাছ থেকে প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে নিজ ব্যবসায় সমস্ত টাকা লগ্নী করে এমদাদুল হক স্বপন। কয়েক বছর পর বাংলাদেশী টাকায় প্রত্যেককে ৫২ হাজার টাকা কমে সেই টাকা ফেরত দিলেও এরপর সে নতুন করে সে ভিন্ন প্রতারণার ফাঁদ পাতে।
প্যারিসে বাংলাদেশী প্রবাসীদের অনেকে দীর্ঘদিন ধরে ফ্রান্সে বসবাস করলেও স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি না পাওয়ার কারণে কোন ধরনের ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারছেন না। নিজের রিফিউজি কার্ড থাকার সুবাদে সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে অন্যদের প্রলুব্ধ করে সুচতুর স্বপন পরিচিতজনদের নিয়ে সমিতি করে ব্যবসা করার কথা বলে।
প্যারিসের সিম্পলনে ‘রূপসী বাংলা’ নামে একটি গ্রোসারি দোকান ৫জন প্রবাসীকে নিয়ে স্বপন শুরু করে। দোকানের মূল মালিক, ব্যবসায়ের অংশীদারদের অগোচরে ১২ হাজার ইউরো অগ্রিম দিয়ে মাঝখানে ২৮ হাজার ইউরো স্বপন চুরি করে বলে অভিযোগ করেছেন স্বপনের ব্যবসায়িক পার্টনার পিটু, রাজীবসহ অন্যান্যরা।
এভাবে অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও স্বপন পার্টনারদের কাছ থেকে তাদের কষ্টার্জিত সর্বমোট প্রায় ৫০ হাজার ইউরো যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৫৫ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মস্বাৎ করে। এছাড়া স্বপন দোকানের মালামাল কেনার দায়িত্বে থেকে বিভিন্নভাবে হাজার হাজার ইউরো সরিয়ে নিলে একপর্যায়ে বিষয়টি তার ব্যবসায়িক অংশীদারদের দৃষ্টিগোচর হলে দোকানের অংশীদাররা সকলে স্বপনের নিকট হিসাব চাইতে থাকে। তখন স্বপন অংশীদারদের মধ্যে পিটুকে পক্ষে রাখার জন্য গোপনে ৭ হাজার ইউরো দেয়ার প্রস্তাব করে কিন্তু পিটু রাজি না হলে সে হুমকি প্রদর্শন করে।
এসব ঘটনা নিয়ে প্যারিসে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে তোলপাড় শুরু হয় তখন বিষয়টি মধ্যস্থতা করার জন্য গত ০৮ মে প্যারিসের কয়েকজন ব্যবসায়ী বৈঠকে বসেন। সেখানে শুধুমাত্র স্বপনসহ তার অন্যান্য অংশীদারগণ উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ভীতি প্রদর্শনের জন্য স্বপন তার পক্ষে ৩০/৪০জন লোক নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয় এতে করে উত্তেজনা দেখা দেয়। দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। কয়েকঘণ্টা বৈঠক চলাকালে স্বপনের পক্ষের ভাড়াটে লোকেরা দোকানের বাইরে অবস্থান করে তখন স্বপন তাদেরকে মদ ও বিয়ার দিয়ে আপ্যায়ন করে।
অনুসন্ধানে জানা যায় স্বপন বর্তমানে যে বাসায় থাকে সেটি প্যারিসের মিউনিসিপ্যালটির পরিত্যক্ত একটি ঘর। ৪২/বি রুই মার্কস দরমোয়ার বাসাটি বাবদ সে অন্যান্যদের কাছ থেকে নিয়মিত ঘর ভাড়া বাবদ ইউরো গ্রহণ করলেও নিজে দুই বছর যাবৎ ভবন মালিককে কোন ধরনের ভাড়া পরিশোধ করছেন না। এ নিয়ে স্বপনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলছে।
হেলাল নামক এক প্রবাসী অভিযোগ করেন প্যারিসে আসার পর তার পাসপোর্ট তিনি জমা রাখেন স্বপনের কাছে এবং উক্ত পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলার কথা বলে স্বপন তার আপন বড়ভাইকে পাসপোর্টটি ব্যবহার করে গলাকাটা ভিসায় স্পেন পর্যন্ত নিয়ে আসলেও সেখানে ইমিগ্রেশনের হাতে ধরা পড়ে দেশে ফেরৎ পাঠায়। প্যারিসে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ এলে তাদের সাথে স্বপন ছবি তুলে সেই ছবি দিয়ে অনেকের সাথে প্রতারণার ফাঁদ পাতে।
এমদাদুল হক স্বপন ফ্রান্সে বাংলাদেশী কমিউনিটির বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে রেখেছেন। তেমনি একটির সংগঠনের নাম ‘সুন্দরবন কল্যাণ সমিতি’। অনুসন্ধানে জানা যায়, সংগঠনের সদস্যদের টাকায় ফান্ড সংগ্রহ করে বাংলাদেশে জমি কেনা হয় এবং পরবর্তীতে স্বপন উক্ত জমি গোপনে বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেয়।
‘স্বরলিপি শিল্পী গোষ্ঠী’ নামে আরেকটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের পদে থেকে সংগঠনের শিল্পীদের এবং মিউজিকের যন্ত্রাংশ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাড়া খাটিয়ে নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। স্বপন কৌশলে ‘কালচার প্লাস’ নামক আরো একটি সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদসহ ‘আয়েবা’ নামক সংগঠনের সাংস্কৃতিক সম্পাদকের পদে রয়েছের। প্যারিস প্রবাসী বাংলাদেশীরা মনে করছেন স্বপনের পেছনে কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির মদদ রয়েছে। প্রবাসীরা এ ধরনের প্রতারককে চিনে রাখতে এবং এদের ফাঁদ থেকে সতর্ক থাকার জন্য সকলকে আহবান জানান।
সংবাদটি নজরে আসার পর ইউরোবিডি২৪নিউজ কর্তৃপক্ষ প্রথমে ফোনে যোগাযোগ করলে এমদাদুল হক স্বপন ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তার সাথে সরাসরি সাক্ষাতে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি ইউরোবিডি২৪নিউজকে জানান ওনার ব্যবসায়িক পার্টনারদের পাওনা অর্থ চেকের মাধ্যমে দুই কিস্তিতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য এমদাদুল হক স্বপন প্যারিসে নানা সাংস্কৃতিক সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের দায়িত্বশীল পদে থাকার পাশাপাশি এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত প্যারিস থেকে ফয়সাল আহমেদ দ্বীপের সম্পাদনায় ইউরোপের কথা নামে একটি অনলাইন ব্লগের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক পদেও দায়িত্বরত আছেন।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এ প্রকাশিত সংবাদটি দেখার জন্য নিচের লিংটিতে ক্লিক করুণ:
আমাদের সময় এ প্রকাশিত সংবাদটি দেখার জন্য নিচের লিংটিতে ক্লিক করুণ:
http://www.amadershomoy2.com/content/2013/05/10/middle0212.htm
Category: Community France, Scroll_Head_Line, ইউরোবিডি কমিউনিটি সংবাদ