মুসলিম বিদ্বেষী সহিংসতায় আলোচিত মিয়ানমার!
ইউরোবিডি ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কঃ মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলে মুসলিম জনগণ এবং ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস, অগ্নিতে ভস্মীভূত করার পর বুধবার দ্বিতীয় দিনের মত ফের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা।
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইয়ে হুতুত জানান, শান প্রদেশের ল্যাশিও শহরে নতুন করে মুসলিমদের ওপর বৌদ্ধ ভিক্ষুদের হামলা ও দাঙ্গা ঠেকাতে পুলিশ ফাঁকা গুলী বর্ষণ করে। দাঙ্গায় ১ জন নিহত এবং অপর ৪ জন আহত হন। দফায় দফায় হামলা, সংঘর্ষের ঘটনায় বৌদ্ধ রাষ্ট্রটিতে বিশৃঙ্খলা অনৈক্য ক্রমশ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্রসহ ল্যাশিওর রাস্তায় রাস্তায় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকদের খুঁজতে ব্যাপক ছোটাছুটি করতে থাকে। এ সময় সংখ্যালঘুদের দু’টি বাড়ি জ্বলতে দেখা যায়। স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়, আহত ৪ জনকে সেখানে চিকিৎসা দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ৪১ বছর বয়সী মিন্ট নেইং নামক আহত একজনকে ব্যান্ডেজ অবস্থায় দেখা যায়। রাষ্ট্র পরিচালিত এমআর টিভি রিপোর্টে জানানো হয়, জনৈকা মহিলার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার কথিত অভিযোগে ৪৮ বছর বয়সী এক মুসলিম পুরুষকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের হাতে মুসলমানদের মসজিদ, মাদরাসা, এতীমখানা এবং দোকানপাট ধ্বংস ও ভস্মীভূত হয়। ইয়ে হুতুত বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ল্যাশিওতে বিবদমান পক্ষদ্বয়ের সহিংসতার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে। ল্যাশিও শহরের স্থানীয় বাসিন্দারা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শংকিত লোকজনকে আরও ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রায় ত্রিশটি বৌদ্ধ জঙ্গী গ্রুপ শহরের রাস্তায় বিশাল মোটরসাইকেল বহর নিয়ে চারদিকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। এ সময় তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানা উস্কানিমূলক শ্লোগান ও অশ্রাব্য ভাষায় খিস্তি খেউড় করতে থাকে। তারা আরো জানান, এ সময় শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর তেমন কোন টহলই ছিল না। জনৈক অধিবাসী জানান, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন অত্যন্ত ভীতি সন্ত্রস্ত অবস্থায় যে যার মত অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিয়েছে। তিনি আরও জানান, ‘আমি জানিনা এমন অনিশ্চিতত্রাসের মধ্যে আজকের রাতটি কীভাবে কাটবে। তিনি বলেন, একজন প্রভাবশালী বৌদ্ধ ভিক্ষু মুসলমানদের রাস্তায় পেলেই হত্যা করার প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে মিয়ানমার প্রেসিডেন্ট থেইন সেনের ওয়াশিংটন সফরের প্রাক্কালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির চরম অবনতিতে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সাবেক সামরিক শাসকদের কবল থেকে মুক্তির পর বর্তমানে দেশটিতে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির জন্য বিশ্বব্যাপী মিয়ানমারের প্রতি ব্যাপক উদ্বেগের বার্তা ধ্বণিত প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।
Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, আন্তর্জাতিক, প্রচ্ছদ, শীর্ষ সংবাদ