ইইউ নির্বাচন পর্যবেক্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকায় পাঠাচ্ছে
ইউরো সংবাদ: আসন্ন নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলগুলো এখনও বৈরী অবস্থানে। সমঝোতার কোন লক্ষণ নেই। সংলাপ বা আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনকালীন একটি গ্রহণযোগ্য পন্থা-পদ্ধতি বের করার তাগিদ রয়েছে বিদেশের কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা-সংগঠনের বন্ধুদের তরফে। দেশের নাগরিক সমাজ, অরাজনৈতিক সংস্থা ও সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জোর দেয়া হচ্ছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে বিষয়টি নিয়ে কোন ধরনের রাখঢাক না করেই ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা কথা বলছেন। এই সময়ে ঢাকায় আসা জাতিসংঘের দূত থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় সংলাপ-সমঝোতার তাগিদ দিয়ে গেছেন। অতি সমপ্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন শীর্ষ দু’নেত্রীকে টেলিফোন করে সংঘাতের পথ ছেড়ে সমঝোতায় পৌঁছানের আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু কোন ‘দাওয়াই’-ই কাজে আসছে না। ক্ষমতাসীনরা হাঁটছেন একদলীয় নির্বাচনের পথে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নিজের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়বেন না তিনি। তার এ অবস্থানকে ‘সংবিধানের অবস্থান’ বলে উল্লেখ করেছেন। অপরদিকে বিরোধী দল বলছে, কোন অবস্থাতেই তারা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না। কোন পাতানো গেম-এ পা দিতে রাজি নয় বিরোধী জোটের শরিক ও সমমনা অন্য দলগুলোও। এ অবস্থায় নির্বাচন আদৌ হবে কিনা- এ প্রশ্ন আসছে বারবার। কূটনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সর্বত্র যখন এমন অনিশ্চয়তা- তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকায় পাঠাচ্ছে। ইইউ’র এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের বালথাজার বেনৎস-এর নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের ওই দল ১৭ দিন বাংলাদেশে অবস্থান করে আসন্ন নির্বাচনের পরিবেশ ও প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করবে। ঢাকাস্থ ইইউ ডেলিগেশন প্রধানের কার্যালয় থেকে গতকাল পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিনিধি দলের আগমন ও মিশন সম্পর্কে জানানো হয়েছে। সেখানে তাদের কর্মসূচির বিস্তারিত উল্লেখ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় আভাস দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ৭ থেকে ২৩শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বাংলাদেশে অবস্থানকালে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন। নির্বাচনের স্টেকহোল্ডার, যেমন- সরকারি দল আওয়ামী লীগ, প্রধান বিরোধীদল বিএনপি ও উভয় জোটের অন্য শরিক দলের নেতা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারা মতবিনিময়ে মিলিত হবেন। প্রতিনিধিদলের সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ইইউ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা নির্বাচনের সম্ভাব্যতা ও উপযোগিতা যাচাই করবেন। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন আয়োজন সমীচীন হবে কিনা, সরকার ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের আর কোন করণীয় আছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখবেন তারা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন থাকতে পারে- তার একটি আগাম ধারণা লাভে বরাবরই ইইউ এমন মিশন পাঠায়। একাধিক প্রতিনিধিদলের রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচনকালে পর্যবেক্ষক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ইইউ’র ওই প্রতিনিধিদল সে বিষয়টিও পর্যবেক্ষণ করবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
Category: 1stpage, ইউরো সংবাদ, ইউরো সংবাদ, শীর্ষ সংবাদ