আর কোন নারীকে ‘যৌন জিহাদে’ যেতে দেবে না তিউনিশিয়া
আন্তর্জাতিক: সিরিয়ার তাকফিরি বিদ্রোহীদের অবৈধ যৌনলালসা চরিতার্থ করার জন্য দেশটিতে আর কোন নারীকে যেতে দেবে না তিউনিশিয়া। তিউনিশিয়ার নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।
শনিবার ওই মন্ত্রণালয় সিরিয়ায় যৌন জিহাদে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেইসঙ্গে এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যারা এ ধরনের কাজ করতে চায় (সিরিয়ায় যৌন জিহাদ করতে যেতে চায়) তাদেরকে বাধা দিতে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এ মন্ত্রণালয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে একসাথে কাজ করবে।”
তিউনিশিয়ার নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে একটি জরুরি কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটির হাজার হাজার সদস্য গণসচেতনতামূলক কাজ করবে। যেসব পরিবার তাদের মেয়েদের সিরিয়ায় পাঠাতে চায় তাদেরকে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও দিক-নির্দেশনা দেবে এ কমিটি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার তিউনিশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লোতফি বিন জেদ্দো জানান, যেসব নারী সিরিয়ার বিদ্রোহীদের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য সিরিয়ায় গিয়েছিল তারা সন্ত্রাসীদের যৌন সঙ্গী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছেন। তিনি বলেন, “তিউনিশিয়ার এসব মেয়ে ২০, ৩০ কিংবা ১০০ বিদ্রোহীর মাঝে ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে এবং তারা এখন কথিত যৌন জিহাদের ফল বয়ে আনছে দেশে। আর আমরা এ নিয়ে এখনো নীরব রয়েছি কিছুই করছি না।”
এদিকে শনিবার তিউনিশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, জিহাদ আন-নিকাহ’য় অংশ নিতে তরুণীদের সিরিয়ায় যাওয়ার প্রবণতা বন্ধ হয়নি। ঠিক কত সংখ্যক নারী এ অবৈধ কাজ করতে সিরিয়ায় গেছে তাদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশিত হয়নি। তবে তিউনিশিয়ার গণমাধ্যম বলছে, তাদের সংখ্যা ‘শত শত’।
কিছু সৌদি ওহাবি মুফতি চলতি বছরের শুরুতে এই ফতোয়া দিয়েছিলেন যে, সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহীদের যৌন সেবা দেয়ার জন্য মুসলিম মেয়ে ও নারীরা যেন সিরিয়া যান। এই সেবার নাম দেয়া হয় ‘জিহাদ আন-নিকাহ’। ওহাবি মুফতিদের এ ফতোয়ার ধোঁকায় পড়ে বিভিন্ন মুসলিম দেশের শত শত নারী সিরিয়া গেছেন এবং তাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার চালাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। শরিয়তসম্মত উপায়ে বিয়ে করার পরিবর্তে এসব মেয়ের ওপর পালাক্রমে বলাতকার চালাচ্ছে বিদ্রোহীরা। একদিনে বহু বিদ্রোহীকে ‘সেবা’ দিতে গিয়ে ক্লান্ত এসব ‘যৌন জিহাদি’ নারী এখন সিরিয়া থেকে পালানোর পথ খুঁজছেন।
কিন্তু যেসব নারী উগ্র ওহাবি ফতোয়াবাজদের ফতোয়া শুনেছেন কিন্তু ‘জিহাদ’ থেকে ফিরে আসা কোন নারীর সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়নি তারা এখনো ঘোরের মধ্যে রয়েছেন এবং সিরিয়ায় যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে রয়েছেন। বিদেশে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর নারীদের যে উপায়ে পাচার করা হয় তিউনিশিয়াসহ অন্যান্য আরব দেশের নারীদের মধ্যে ঠিক সেরকম প্রচারণা চালাচ্ছে ওহাবি গোষ্ঠীগুলো। আর এ ধোকায় পড়ে সিরিয়া যাওয়ার পর পালাক্রমে ধর্ষিত হচ্ছেন মুসলিম নারীরা।
Category: 1stpage, আন্তর্জাতিক, শীর্ষ সংবাদ