পোপ অভিবাসীদের অধিকার সমর্থন করেছেন
ইউরো সংবাদ: পোপ ফ্রান্সিস একটি বার্তায় অভিবাসীদের প্রতি মনোভাবে বিশ্বব্যাপী পরিবর্তন দাবি করেছেন৷ অভিবাসীরা ‘‘জ্ঞান ও সমৃদ্ধির’’ ভাগ পেতে চায়, বলে পোপ মন্তব্য করেন৷
পোপ বিশ্বের সব দেশের প্রতি অভিবাসী ও উদ্বাস্তুদের স্বাগত জানানোর এবং শ্রদ্ধা করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তাঁদের ‘‘মানবতার দাবার ছকে বোড়ে” হিসেবে দেখা উচিত নয়, বলেন পোপ৷ মঙ্গলবার ছিল বিশ্ব অভিবাসী ও উদ্বাস্তু দিবস৷ সেই উপলক্ষ্যে পোপের বার্তা বিভিন্ন দেশের সরকার ও জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো হয়েছিল৷
‘‘এই সব শিশু, পুরুষ ও মহিলা স্বেচ্ছায় অথবা বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছে৷ এঁদের জ্ঞান ও সমৃদ্ধির অংশ পাবার, বিশেষ করে নিজেরা আরো বেশি কিছু, বড় কিছু একটা হয়ে ওঠার একটা বৈধ আকাঙ্খা আছে,” তাঁর বার্তায় বলেন পোপ ফ্রান্সিস৷ ‘‘অভিবাসী, গৃহহারা, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী এবং উদ্বাস্তুদের আগমন অনেক ক্ষেত্রেই সন্দেহ ও বৈরিতার উদ্রেক করে৷ (স্থানীয় বাসিন্দাদের) ভয় থাকে যে, নিরাপত্তা হ্রাস পাবে, জাতীয় সত্তা ও সংস্কৃতির বিলুপ্তি ঘটবে, চাকুরির জন্য প্রতিযোগিতা বাড়বে, এমনকি অপরাধমূলক কাজকর্ম বাড়বে৷” কাজেই পোপ এই ধরনের পূর্ব ধারণা পরিত্যাগ করার আহ্বান জানান৷
যে সব কোম্পানি কিংবা প্রতিষ্ঠান এই সব অভিবাসী ও উদ্বাস্তুদের কম বেতনে কাজ করিয়ে নেয়, পোপ তাদের আচরণের নিন্দা করেন এবং বলেন: ‘‘বিশেষভাবে উদ্বেগজনক হলো সেই ধরনের পরিস্থিতি, যেখানে অভিবাসন শুধু অস্বেচ্ছাকৃত নয়, বরং মানুষ-পাচার ও আধুনিক দাসপ্রথার সুবিধার জন্যই সূচিত হয়েছে৷ ‘দাসশ্রম’ আজ প্রবচনে পরিণত হয়েছে৷”
কাজেই আমাদের সকলকেই আত্মরক্ষা এবং ভীতি, অবহেলা এবং অস্পৃশ্যতার মনোভাব থেকে সরে আসতে হবে, বলেন বিশ্বায়নের সমালোচক এই পোপ, যাঁর মতে বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তি ‘‘এ গড নেম্ড মানি” হতে পারে না৷ তাঁর মতে, অভিবাসী ও উদ্বাস্তুরাও বিশ্বায়নের প্রভাবের শিকার হচ্ছে৷
অভিবাসনের প্রশ্নে ইউরোপ দ্বিধাবিভক্ত
ফ্রান্সে নাসিওঁনাল ফ্রঁ অভিবাসন বিরোধী অবস্থান নিয়ে ভোটে সাফল্য পেয়েছে এবং পাচ্ছে৷ ইটালিতে অনুরূপভাবে রয়েছে অভিবাসন বিরোধী নর্দার্ন লিগ৷ গ্রিসে নব-নাৎসি দল গোল্ডেন ডন-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলেছে৷ ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মানুয়েল ভালস হাজার হাজার রোমাকে ফ্রান্স থেকে বহিষ্কার করার ডাক দিয়েছেন: এই রোমারা সাধারণত জিপসি বা ভবঘুরে বলে পরিচিত, এবং এরা এসেছে প্রধানত বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া থেকে৷
মজার কথা এই যে, ভালস নিজে স্পেন থেকে আগত অভিবাসীদের সন্তান এবং তাঁর নিজের জন্ম বার্সেলোনায়৷ পোপ ফ্রান্সিসের পূর্বপুরুষরা বিংশ শতাব্দীর সূচনায় ইটালি থেকে আর্জেন্টিনায় অভিবাসী হন৷ অর্থাৎ দু’জনেরই ব্যক্তিগত ইতিহাসে অভিবাসন একটি ভূমিকা পালন করেছে – অথচ দু’জনের মনোভাবের মধ্যে কত ফারাক৷
Category: 1stpage, আন্তর্জাতিক, ইউরো সংবাদ, ইউরো সংবাদ, শীর্ষ সংবাদ