• ৭ অগ্রহায়ণ ,১৪৩১,21 Nov ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

নিজের অজান্তে কি যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন আপনিও?

| মার্চ 25, 2014 | 0 Comments

লাইফ স্টাইল: আজকাল সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রায়ই শিক্ষকের দ্বারা ছাত্রী হয়রানির খবর প্রকাশিত হয়। একসময় শিক্ষক শব্দটি শুনলেই আমাদের মাথা শ্রদ্ধায় অবনত হতো। এখন সময় পাল্টে গেছে, পরিস্থিতি অনেকটা বিপরীত দিকেই ধাবিত। কালের বিবর্তনে এখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক অনেকটা সহজ হয়ে উঠেছে। এটি শিক্ষাক্ষেত্রে কিছু স্বস্তি তৈরি করলেও মেয়েদের ক্ষেত্রে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহজ সম্পর্কের সুযোগের অপব্যবহার করছেন অনেক শিক্ষকই। অনেক সময় শিক্ষার্থী হয়তো বুঝতেও পারছেন না তাকে নিয়ে শিক্ষকের করা মন্তব্যটি যৌন হয়রানির পর্যায়ে পড়ছে। আবার অনেক সময় হয়রানি অনুভব করলেও ভয়ে কিছু বলতে পারেন না মেয়েরা। কেউ যদি মনে করেন হয়রানির শিকার হচ্ছেন, তাহলে তিনি আইনি আশ্রয় নিতে পারেন অথবা অন্য কারো পরামর্শ নিতে পারেন। কারণ হয়রানির প্রথম পর্যায়ে সঠিক উপায়ে তা ঠেকাতে না পারলে অপরাধী আরো উৎসাহ পায়। পরে এ থেকেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।  তাই কোন ধরনের বিষয়গুলো হয়রানির পর্যায়ে পড়ে তা জেনে রাখা ভাল।

যাচাই করুন মন্তব্যগুলো নির্দোষ নাকি ইঙ্গিতপূর্ণ
নির্দোষ ও ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যের মধ্যে সূক্ষ্ম ফারাক রয়েছে। একটি উদাহারণ দেওয়া যাক, ধরুন শান্তাকে তার শিক্ষক বললেন দেশি পোশাকের চেয়ে পশ্চিমা পোশাকে তাকে ভালও মানায়। অনেক শিক্ষার্থীই মনে করেন এ ক্ষেত্রে কোনো কথা না তুললেও তা এখানেই মিটে যাবে। অথবা তারা ভাবে, তাদের শিক্ষক তাদের সঙ্গে অরুচিকর কিছু করতে পারবে না। সেই সঙ্গে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার পেছনে ভয়ও কাজ করে থাকে। এ ক্ষেত্রে চুপ করে থাকাটাই শ্রেয় মনে করে তারা। যা চরম বিপর্যয় ডেকে আনে। কারণ শিক্ষক তার মৌনতাকে দুর্বলতা ধরে নিয়ে এগিয়ে যায়। তাই মন্তব্যের ভাষা বুঝে তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ করতে হবে।

সীমা রেখা বুঝতে হবে
আজকের যুগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ অনেক সহজ। বিশেষ করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইটের কল্যাণে এ সম্পর্ক অনেকটা বন্ধুত্বের পর্যায়ে চলে গেছে। আর ঠিক এ জায়গাতেই সীমা লঙ্ঘন করে বসে অনেকে। ফেসবুকে কথোপকথনের সময় অনেক শিক্ষকই হয়তো মজা করে অনেক কিছু বলে থাকেন, আর শিক্ষার্থীও একে সহজ ভাবে নেয়। এ থেকেই অনেক দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয়। তাই নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকতে হবে। কোনো মন্তব্য না পছন্দ হলে তা জানিয়ে দিতে হবে তৎক্ষণাৎ।

প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে সময়মতো
চিত্রশিল্প, নাচ, নাটক, খেলা এসব ক্লাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক অন্যরকম হয়ে থাকে। প্রশিক্ষণের স্বার্থে শিক্ষক-শিক্ষার্থী দুজনকেই কিছু শারীরিক যোগাযোগের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। এ রকম মুহূর্তে শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হচ্ছে কি না তা বের করা মুশকিল। তবে সহজাত বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে হবে। কাজ করে স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে কি না- তা শিক্ষার্থীকে অনুভব করতে হবে। অস্বস্তি লাগলে সঙ্গে সঙ্গে তা জানাতে হবে। কারণ, এ ধরনের ঘটনায় নীরবতা অপরাধীকে আরো উৎসাহী করে তোলে। তাই অন্য রকম কিছু মনে হওয়া মাত্রই কর্তৃপক্ষসহ কাছের বন্ধুদের তা জানিয়ে রাখা ভালো। জানাতে হবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে।

প্রতিষ্ঠানগুলোতে থাকতে হবে কঠোর নিয়ম-কানুন
নিরপেক্ষ তদন্ত ও শাস্তির বিধান থাকলে যে কেউ অপরাধ করার আগে অন্তত একবার ভাববে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কঠিন নিয়ম থাকতে হবে। অনেক সময়ই দেখা যায় স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যৌন হয়রানির ঘটনা খুব নিয়মিত ঘটে। আমাদের দেশেও প্রথমসারিতে থাকা স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা হয়রানির শিকার হয়। প্রায়ই আমরা এসবের বিরুদ্ধে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ অনুষ্ঠান দেখছি। কিন্তু, প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিরোধ গড়ে না উঠলে এর প্রতিকার হবে না। শুধু এক বছর বা এরও কিছু বেশি সময়ের সাময়িক বরখাস্ত উপযুক্ত শাস্তি নয়। কারণ অভিযুক্ত শিক্ষক হয়তো এ সময়ের মধ্যে অন্য কোথাও কাজ জুটিয়ে নেবেন, আর সেখানেও যে আগের অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই কঠিন শাস্তির বিধান রাখতে হবে। যাতে একজনের পরিণাম দেখে আর কেউ এ ধরনের অপরাধ করতে সাহস না পান।

দূরত্ব বজায় রাখতে হবে
কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছে খুব প্রিয় হন। অনেক সময় শিক্ষার্থীও হয়তো বোঝেন না তার আচরণ শিক্ষককে প্রলুব্ধ করছে। তাই শিক্ষার্থীকেও আচরণের ক্ষেত্রে সচেতেন হতে হবে। শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করা নিয়েও সতর্ক হতে হবে। এ প্রসঙ্গে মনোবিজ্ঞান বিষয়ে মার্কিন অধ্যাপক অ্যাঙ্গেলা ডেভিড বলেন, মেয়ে শিক্ষার্থীর কখনই একা একা তার শিক্ষকের বাসায় যাওয়া উচিত নয়। যদি কোনো কারণে যাওয়ার একান্ত প্রয়োজন পড়ে তাহলে অবশ্যই সঙ্গে কাউকে নিতে হবে।

কী কথা বলা হচ্ছে তা খেয়াল করুন
কোন ধরনের কথা গ্রহণযোগ্য :
-তোমাকে আজ সুন্দর লাগছে
-চুলে নতুন কোনো কাট দিয়েছ কি
– এই সুরগুলো ভালো করে তুলতে হবে
গ্রহণযোগ্য নয়:
– পোশাকটি তোমার শরীরে ভালো ফিট হয়েছে
– নতুন চুলের স্টাইলে তোমাকে খুব আকর্ষণীয় লাগছে
– তোমার আঙ্গুল খুব সরু ও সুন্দ
যখন পরিস্থিতি সহজ মনে হবে না তখন কী করবেন
– আপনার কাছের বন্ধুকে সব খুলে বলুন। তার কাছ থেকে জানুন এখন আপানার কোন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
– শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলুন অথবা হেল্পলাইনে ফোন দিন।

Category: 1stpage, লাইফ স্টাইল

About the Author ()

Leave a Reply