• ১০ অগ্রহায়ণ ,১৪৩১,25 Nov ,2024
  • ব্রেকিং নিউজ : বাংলাদেশের রিকশাচিত্র পেল ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি

ব্রাসেলসে চলছে পরমাণু আলোচনা: চুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী সবাই

| মার্চ 19, 2015 | 0 Comments

braআন্তর্জাতিক: ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু আলোচনা গত রবিবার থেকে সুইজারল্যান্ডে শুরু হয়েছে। আজো পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বহুপক্ষীয় আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, কয়েক দিনের আলোচনায় ব্যাপক অগ্রগতি হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনো বাধা রয়ে গেছে।

 ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান আলী আকবর সালেহি আমেরিকার জ্বালানি মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর গতকাল বলেছেন, কারিগরি বিষয়ে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে সমঝোতা হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর বলেছেন, আমেরিকা ও ইরান পরমাণু সমস্যা সমাধানের গুরুত্ব উপলব্ধি করছে। তিনি বলেন, কিছু জটিল বিষয়ে আমরা কাছাকাছি অবস্থানে চলে এসেছি, তাই বলা যায় খুব শিগগিরি বিষয়টির সুরাহা হতে চলেছে।

 বিশ্লেষকরা বলছেন, দু’পক্ষই যতদ্রুত সম্ভব চূড়ান্ত সমাধানে পৌঁছার চেষ্টা করছে। গত প্রায় ১২ বছর ধরে পাশ্চাত্য ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে দেশটিকে হুমকি হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে যাতে আন্তর্জাতিক সমাজকে ইরানের বিরুদ্ধে দাঁড়া করানো যায়। আমেরিকা কেবল মনগড়া দাবির ওপর ভিত্তি করে এতদিন পর্যন্ত ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা পাল্টে গেছে। পাশ্চাত্য গত কয়েক বছর ধরে নানা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে এবং চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে ইরানের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু শত ষড়যন্ত্র ও অবরোধ সত্ত্বেও পাশ্চাত্য তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি বরং শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচিসহ জ্ঞান বিজ্ঞানের সব ক্ষেত্রে ইরানের অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে।

 ইরান জেনেভা সমঝোতা অনুযায়ী পারস্পরিক আস্থা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি তার ফতোয়ায় বলেছেন, তেহরান পরমাণু অস্ত্রে বিশ্বাসী নয়। একজন খ্রিস্টান ধর্ম যাজক জন বারাইসুন গত ১৭ই মার্চ ‘কমন গ্রাউন্ড নিউজ সার্ভিস’-এ প্রকাশিত তার এক নিবন্ধে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এ ফতোয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। আমেরিকার অন্যতম এ শীর্ষ পাদ্রি তার ওই প্রবন্ধে পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার ফতোয়ার কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না। ওই খ্রিস্টান পাদ্রি আরো লিখেছেন, শিয়া মাজহাবে একজন ধর্মীয় নেতার বক্তব্য বা কোনো বিষয়ে ফতোয়া মেনে চলা সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেয়া তার ওই ফতোয়ায় বলেছিলেন, পবিত্র ইসলাম ধর্মের শিক্ষা ও নির্দেশনা অনুযায়ী পরমাণু অস্ত্র উৎপাদন ও তা ব্যবহার বড় ধরণের গুনাহ। আমেরিকার ওই খ্রিস্টান পাদ্রী তার নিবন্ধে আরো লিখেছেন, এটা খুবই বিস্ময়ের ব্যাপার যে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এ ফতোয়ার ব্যাপারে আমেরিকার সরকার ও গণমাধ্যমগুলো রহস্যজনকভাব নীরব রয়েছে।

 যাইহোক, গত প্রায় এক বছর ধরে ইরান ও ছয় জাতিগোষ্ঠী আলোচনা চালিয়ে অনেক কাছাকাছি অবস্থানে আসতে সক্ষম হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সংলাপ বর্তমানে অত্যন্ত স্পর্শকাতর অবস্থানে এসে ঠেকেছে। এ অবস্থায় অনেক বিশ্লেষকের মতে, দু’পক্ষই বর্তমানে যে অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে তাতে চূড়ান্ত সমঝোতার হয়তো আর বাকি নেই।

Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, আন্তর্জাতিক

About the Author ()

Leave a Reply