এই আম্পায়ারদের শাস্তি হওয়া উচিত-গাজী আশরাফ হোসেন
ইউরোবিডি স্পোর্টস সংবাদ : ম্যাচ শেষে সাধারণত খেলোয়াড়দের নৈপুণ্য নিয়েই আলোচনা হয়। অথচ বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার ফাইনালের পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কিনা দুই আম্পায়ার! কাল তাঁদের ভুল সিদ্ধান্তগুলো শুধু অদক্ষতার কারণেই হয়েছে, এমনটা আমার মনে হয়নি। কেন জানি মনে হচ্ছে বিশেষ কাউকে তুষ্ট করাও উদ্দেশ্য ছিল আম্পায়ারদের।
তামিম ইকবালের কট বিহাইন্ডের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে যদি টিভি আম্পায়ারের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে, তাহলে রোহিত শর্মার আউট হওয়া ওই ‘নো’ বলটার ক্ষেত্রেও কেন সেটা করা হলো না? কেন বাউন্ডারিতে শিখর ধাওয়ানের নেওয়া মাহমুদউল্লাহর ক্যাচটার আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ, আরও ভালোভাবে যাচাই করা হলো না?
সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার সবাই-ই কালকের বাজে আম্পায়ারিং নিয়ে সমালোচনামুখর। অনেকেই মনে করছেন, আম্পায়ারদের এ রকম বিতর্ক উসকে দেওয়া কর্মকাণ্ডের জন্য আইসিসির আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করা উচিত। শুধু তা-ই নয়, আমি বলব কালকের তিন বিতর্কিত আম্পায়ারকে যেন এই টুর্নামেন্টেই আর কোনো ম্যাচে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া না হয়। সেই সঙ্গে কালকের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া উচিত।
বিশ্বকাপের মতো সর্বোচ্চ পর্যায়ের খেলায় এ রকম জঘন্য আম্পায়ারিং কোনোভাবেই কাম্য নয়। সর্বোচ্চ পর্যায়েই যদি এ রকম ভুলে ভরা আর পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং হতে থাকে, তাহলে দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোতেও আম্পায়ারিংয়ের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে আইসিসি।
কাল মাশরাফির টস ভাগ্যটা খারাপ ছিল, আমি বলব পরাজয়ের এটাও একটা কারণ। ভারতের মতো দলের বিপক্ষে রান তাড়া করে জেতা কোনো দলের জন্যই কঠিন। তার পরও বোলাররা শুরুটা ভালো করেছিল। কিন্তু আম্পায়ারদের ‘উপহার’ দেওয়া রোহিত শর্মার সেঞ্চুরির সুবাদে ভারত যখন ৩০২ রান করে ফেলল, বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটা কঠিন হয়ে যায় তখনই। আগেই বলেছিলাম এ রকম ম্যাচে ভারতকে হারাতে হলে আমাদের সেরা বোলিং আক্রমণ নিয়ে নামতে হবে। আমার মনে হয় কাল সেই বোলিং আক্রমণটা হাতে পাননি মাশরাফি। নাসিরের নিয়ন্ত্রিত বোলিংই প্রমাণ করে, দলে আরেকজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার খেলানোর প্রয়োজন ছিল। বোলিংয়ে আরেকটু বৈচিত্র্য থাকলে শেষ দিকে মাশরাফির হাতেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আরও সুযোগ থাকত। তবে এটাও ঠিক, রোহিত শর্মার ‘নো’ বলে বেঁচে যাওয়াটা আমাদের ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে প্রভাবিত করে থাকবে। এমনকি শেষ দিকের বাজে ফিল্ডিংয়েরও একটা কারণ হতে পারে সেটা।
ভারতের বিশাল রান সফলভাবে তাড়া করতে হলে তামিমের কাছ থেকে একটা বড় ইনিংস আসা উচিত ছিল। সেটা আসেনি। বিতর্কিত আউটে মাহমুদউল্লাহ-সৌম্যের মধ্যেও হয়নি বড় জুটি। এই ম্যাচে সাকিবের কাছ থেকে দুর্দান্ত একটা ইনিংস আশা করেছিলাম। অথচ কালই কিনা তাকে সবচেয়ে বেশি নড়বড়ে মনে হলো! আর যা-ই হোক ৩৪ বলে ১০ রান করার ব্যাটসম্যান সে নয়।
সবশেষে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলার জন্য বাংলাদেশ দলের সব খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তাকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। অনেক কম প্রস্তুতি নিয়েও আমাদের ছেলেরা অসাধারণ খেলল। সে জন্য প্রশংসা তাদের প্রাপ্যই।
Category: 1stpage, Scroll_Head_Line, স্পোর্টস