বস্টনে বোমা হামলায় নিহত ১২, আহত ৫০
আন্তর্জাতিক : যুক্তরাষ্ট্রে বস্টন একটি ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায় বোমা হামলায় অন্তুত ১২ জন নিহত ও ৫০ জনের উপরে আহত হয়েছে। এনইউপোস্ট.কম
সোমবার স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ৩টার দিকে বস্টন ম্যারাথনে পর পর দুটি বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এপর্যšত্ম ১২ জন নিহত ও ৫০ জনের উপরে আহত হয়। ঘটনার পর বস্টনের বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাবওয়ে সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। বোস্টন পুলিশ সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার কিংবা কোথা ভিড় না জমানোর নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে, কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজন এক সৌদি নাগরিককে আটক করেছে, তাকে বর্তমানে বোস্টন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য বিল কিটিং এই হামলাকে একটি পরিকল্পিত হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
বস্টন গ্লোব তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, এ পর্যšত্ম কমপক্ষে দু’টি বোমা বিস্ফোরণে ১০০ জনের উপরে আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৮ বছরের এক বালকও রয়েছে।
এদিকে, বস্টনের বিস্ফোরনের এর প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যে বস্টনের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে লাইব্রেরিতেও একটি বিস্ফোরণ ঘটে। প্রথমে এ বিস্ফোরণের সঙ্গে বস্টনের প্রথম ঘটনার সংযোগ রয়েছে এমনটি ধারনা করা হলেও পরে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে বৈদ্যুতিক গোলোযোগে আগুন লেগে যাওয়ার কারণেই বিমানবন্দর লাইব্রেরিতে ও বিস্ফোরণটি ঘটে ।
বস্টন ম্যারাথনের ফিনিশিং লাইনের কাছাকাছি স্থানে বিস্ফোরণ দুটি ঘটানো হয়। প্রথম বিস্ফোরণটির কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে।
বস্টনের ডাউনটাউন কপলে স্কয়ারে এ দুটি বোমা বিস্ফোরনের পর গোটা এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
সোমবার সকালে এই ঐতিহ্যবাহী ম্যারাথন শুরু হয়। ২৮ হাজার দৌড়বিদ এই ম্যারাথনে অংশ নেন। বোমা বিস্ফোরণের প্রায় দ্ইু ঘণ্টা আগেই ম্যারাথন শুরু করেন দৌড়বিদরা। তবে শেষের দিকেও অনেকেই তাদের দৌড় শেষ করছিলেন। ঠিক এমনই একটি সময় বেলা পৌনে তিনটার সময় বিস্ফোরণ দুটি ঘটে।
এসময় দেখা যায় দৌড়বিদদের কয়েকজনসহ, ম্যারাথনের ভলান্টিয়ার্স ও সাধারণ দর্শকরা বোমার আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে থাকেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা দ্রুত ছুটে এসে আহতদের ঘটনাস্থলেই চিকিৎসা দেয় এবং পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। অনেককেই ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহতদের মধ্যে অনেকেই তাদের হাত-পা কিংবা শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হারিয়েছেন বলে হাসাপাতাল সূত্রগুলো জানিয়েছে।
ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে লোকজন সরিয়ে দেয়। পুরো এলাকা সিল করে দেয়।
এদিকে হাফিংটন পোস্ট জানিয়েছে জেএফকে বিমানবন্দরের লাইব্রেরিতে তৃতীয় বিস্ফোরণের খবর। নিউইয়র্কের একটি রেডিও স্টেশনও খবরটি জানিয়ে বলেছে, জেএফকে’র বিস্ফোরণের সঙ্গে বস্টনের বিস্ফোরণের যোগাযোগ থাকতে পারে।
তবে পরে অবশ্য বিমানবন্দরের বিস্ফোরণটি বৈদ্যুতিক গোলযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানানো হয়েছে। বস্টন বিস্ফোরণের সঙ্গে এর সম্পৃক্ততা ছিলো না বলেই জানায় সংশ্লিষ্টরা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ ঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়েছেন। সোমবার সন্ধায় জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে বলেন, আমরা এই নেক্কার জনক হামলার গভীর পর্যবেক্ষণ করছি। বস্টনের জন্য ফেডারেল সরকার সর্বোচ্চ সহযোগীতা করে যাবে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মানুষের জীবন রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে, এই হামলার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও দ্রুত তদšত্ম কাজ শুরু করা হবে।
আমাদের কাছে সব কিছুর উত্তর নেই, তবে এটা সত্য হামলায় বহু লোক আহত হয়েছে।
ওবামা আরো বলেন, আমি এফবিআই এর পরিচালক মলিন এবং স্বরাষ্ট্র নিরপত্তা সচিব নেপুলিটানুর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা দ্রুত এ হামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য তদšত্ম শুরু করবে। আমি রিপাবলিক ও ডেমুক্রেট উভয় পার্টির নেতৃবৃন্দকে সর্বশেষ তথ্য জানিয়েছি। আমরা ডেমুক্রেট বা রিপাবলিকান নই, আজ আমরা আমেরিকান, তাই আমরা আমাদের নাগরিকদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
আমি গভর্ণর প্যাট্রিক এবং মেয়র মেনিনুকে পরিস্কারভাবে বলেছি, তারা যেন রাষ্ট্রের সকল প্রয়োজনীয় সম্পদ দিয়ে ঘটনার শিকার সকল মানুষ এবং তাদের পরিবারকে সর্বোচ্চ সহযোগীতা করে যায়। আমি তাদেরকে আরো বলেছি, সকল আমেরিকান বস্টনের মানুষের পাশে আছে।
Category: 1stpage, আন্তর্জাতিক, শীর্ষ সংবাদ